বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪
Online Edition

আজ সকালে উপকূলে আঘাত হানতে পারে ‘নাডা’ ॥ জলোচ্ছ্বাসের আশঙ্কা

স্টাফ রিপোর্টার : বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত নিম্নচাপটি ঘণীভূত হয়ে গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। এটি আরও ঘণীভূত হয়ে আজ রোববার সকাল নাগাদ বরিশাল-চট্টগ্রাম উপকূল অতিক্রম করতে পারে। নিম্নচাপের কারণে সারা দেশে বৃষ্টি হচ্ছে।
এদিকে বিরূপ আবহাওয়ার কারণে সারাদেশের লঞ্চ চলাচল বন্ধ ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ লঞ্চ মালিক সমিতি। গতকাল শনিবার সমিতির প্রধান উপদেষ্টা মো. গোলাম কিবরিয়া টিপু বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে এদিন দুপুর থেকে ছোট-বড় সব ধরনের লঞ্চ চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে ফের লঞ্চ চলাচল শুরু হবে।
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপটি গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়ে ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিচ্ছে। এর ফলে সাগর উত্তাল রয়েছে। আবহাওয়া অধিদফতরের সর্বশেষ বুলেটিনে সাগর ও সংলগ্ন উপকূলীয় এলাকায় ৪ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। ওমান এই ঘূর্ণিঝড়টির নাম দিয়েছে ‘নাডা’। এর ফলে এক সপ্তাহেই দুটো ঝড়ের সৃষ্টি হচ্ছে বঙ্গোপসাগরে। ‘নাডা’ শব্দের অর্থ ‘শিশিরকণা’।
গতকাল শনিবার আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, নিম্নচাপের ফলে উপকূলের দ্বীপ ও চরসমূহের নিম্নাঞ্চলে স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ২-৩ ফুট অধিক উচ্চতার বায়ুতাড়িত জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে। চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরসমূহকে ৩ নম্বর সংকেত নামিয়ে ৪ নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত সকল মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে বলেছে আবহাওয়া অধিদফতর।
ঢাকা আবহাওয়া অধিদফতরের একজন আবহাওয়াবিদ বলেন, নিম্নচাপটি ঘনীভূত হয়ে গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। এটি আরও শক্তি সঞ্চয় করছে। এর কারণে ৪ নম্বর সতর্কতা সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে (১০) বলা হয়েছে, মধ্যবঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত নিম্নচাপটি পূর্ব-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে উত্তরপশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। ওই বুলেটিনে বলা হয়, নিম্নচাপটি চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৬৩০ কি.মি. পশ্চিম-দক্ষিণপশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্র বন্দর থেকে ৫৯৫ কি.মি. পশ্চিম-দক্ষিণপশ্চিমে, মংলা সমুদ্র বন্দর থেকে ৫০০ কি.মি. দক্ষিণপশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্র বন্দর থেকে ৪৯৫ কি. মি. দক্ষিণপশ্চিমে অবস্থান করছিলো। এটি আরও ঘণীভূত ও উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে রোববার সকাল নাগাদ বরিশাল-চট্টগ্রাম উপকূল অতিক্রম করতে পারে।
আবহাওয়া অফিস জানায়, গভীর নিম্নচাপ কেন্দ্রের ৪৮ কি.মি.’র মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৫০ কি. মি., যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ৬০ কি.মি. পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। গভীর নিম্নচাপ কেন্দ্রর নিকটবর্তী এলাকায় সাগর খুবই উত্তাল রয়েছে।
গভীর নিম্নচপের প্রভাবে উপকূলীয় জেলা চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চাঁদপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরা এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহে ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণসহ ঘণ্টায় ৫০-৬০ কি. মি. বেগে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে এবং স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ২-৩ ফুট অধিক উচ্চতার বায়ুতাড়িত জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।
উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত সকল মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে বলা হয়েছে এবং পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।
অন্যদিকে, কলকাতার সংবাদমাধ্যমগুলো ভারতের দিল্লির মওসুম ভবনের সাইক্লোন সতর্কতা বিভাগের অধিকর্তা এম মহাপাত্রকে উদ্ধৃত করে জানিয়েছে, নাডার গতিপথের গাণিতিক সমীকরণ বলছে, শনিবার-রোববার সামুদ্রিক ঝড় নাডা বাংলাদেশ উপকূলে আছড়ে পড়বে।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ