শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪
Online Edition

দেশে ৫ হাজার ইটভাটার পরিবেশগত ছাড়পত্র নেই

স্টাফ রিপোর্টার : দেশে চলতি মওসুমে প্রায় নয় হাজার ইটভাটার মধ্যে প্রায় ৫ হাজারের পরিবেশগত ছাড়পত্র বা জেলা প্রশাসনের লাইসেন্স নেই। এছাড়া মোট ইটভাটার মধ্যে প্রায় ১৫শ’ ড্রাম চিমনিবিশিষ্ট, যা ২০০১ সাল থেকে সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।
গতকাল শনিবার সকালে রাজধানীর কলাবাগানস্থ নিজস্ব মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত “চলতি মওসুমে ইটভাটার দূষণ নিয়ন্ত্রণে - এখনই করণীয়” শীর্ষক এক সাংবাদিক সম্মেলনে বেসরকারি পরিবেশবাদী সংগঠন পরিবেশ বাাঁচও আন্দোলনের (পবা) পক্ষ থেকে এ তথ্য জানানো হয়। পবা’র চেয়ারম্যান আবু নাসের খানের সভাপতিত্বে সাংবাদিক সম্মেলনে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী আবদুস সোবহান। এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন পীস মুভমেন্ট-এর চেয়ারম্যান প্রফেসর কামাল আতাউর রহমান, পবার সম্পাদক ম-লীর সদস্য শামীম খান টিটো, বিসিএসআইআর-এর সাবেক পরিচালক ড. কে এম ফরমুজুল হক, বিএইচআরডি-এর পরিচালক মো. মাহবুবুল আলম প্রমুখ।
সাংবাদিক সম্মেলনে আরো জানানো হয়, ড্রাম চিমনিবিশিষ্ট ইটভাটায় ১ লাখ ইট পোড়াতে গড়ে প্রায় ২ হাজার মন কাঠ লাগে। প্রতি ১ লাখ ইট পোড়াতে ইটভাটার প্রযুক্তিভেদে কয়লা লাগে এফসিকে (১২০ ফুট চিমনি) তে ১৬-২০ টন, জিগজ্যাগ-এ ১৪-১৬ টন, হাইব্রিড হফম্যান কিলন-এ ১২-১৪ টন। ড্রাম চিমনিবিশিষ্ট ইটভাটায় মওসুমে গড়ে ২০ লাখ ইট পোড়ানো হয়। ১৫শ’ ভাটায় কাঠ লাগে ২২ লাখ ৪০ হাজার টন। ১২০ ফুট চিমনিবিশিষ্ট ভাটায়ও কাঠ পোড়ানো হয়। প্রতিটি ভাটায় গড়ে ২ হাজার মণ কাঠ পোড়ানো হলে সাড়ে ৩ হাজার ভাটায় কাঠ লাগে ২ লাখ ৬১ হাজার টন । ইটভাটায় মোট ২৫ লাখ টন কাঠ পোড়ানো হয়। এফসিকে ও জিগজ্যাগ ভাটায় মওসুমে গড়ে ৫০ লাখ ইট পোড়ানো হয়। এসব ভাটায় ১ লাখ ইট পোড়াতে গড়ে ১৭ টন কয়লা লাগে। সাড়ে ৭ হাজার ভাটায় ৬৩ লাখ ৭৫ হাজার টন কয়লা পোড়ানো হয়। এ কয়লার প্রায় পুরোটাই আমদানি করা হচ্ছে এবং এতে সালফারের পরিমাণ ৫ শতাংশের ঊর্ধ্বে।
পবা বলছে, ঢাকার আশেপাশে শত শত অবৈধ ইটভাটা রয়েছে। এতে রাজধানী ঢাকা ও এর আশেপাশের পরিবেশ মারাত্মক দূষিত হচ্ছে। বসবাসের অযোগ্য হয়ে উঠছে ঢাকার উপকণ্ঠ এবং সেই সাথে রাজধানী ঢাকা। বিগত বছরগুলোর মতো চলতি মওসুমেও পরিবেশ অধিদফতরের পরিবেশগত ছাড়পত্র এবং জেলা প্রশাসকের লাইসেন্স ব্যতিরেকে দেশের বিভিন্ন ইটভাটায় ইট পোড়ানোর প্রস্তুতি চলছে। এছাড়াও সরকার কর্তৃক নিষিদ্ধ স্বল্প উচ্চতার ড্রাম চিমনিবিশিষ্ট ইটভাটা স্থাপন এবং ১২০ ফুট উচ্চতার স্থায়ী চিমনি ইটভাটার কার্যক্রম চলছে।
সাংবাদিক সম্মেলনে জানানো হয়, বাংলাদেশে বিশেষ করে শহর এলাকায় শীত মওসুমে বায়ু দূষণের অন্যতম কারণ হচ্ছে ইটভাটা এবং যানবাহনের ধোঁয়া। ইট তৈরিতে ব্যবহার করা হচ্ছে ফসলি জমির উর্বর ও সারযুক্ত টপসয়েল বা উপরিভাগের মাটি। এতে জমির উর্বরতা শক্তি ও ফসল উৎপাদন ক্ষমতা কমে যাচ্ছে। বিশেষজ্ঞদের মতে জমির উপরিভাগের  মাটি কেটে ফেলা হলে আগামী ২০ বছরেও সেই জমির প্রয়োজনীয় জৈব পদার্থের ঘাটতি পূরণ হবে না। ফসলি জমির মাটির উপরি অংশ কাটা অব্যাহত থাকলে ভবিষ্যতে জমির ফলন স্বাভাবিকের চেয়ে অনেকাংশে কমে যাবে। এতে হুমকির মুখে পড়বে দেশের খাদ্য নিরাপত্তা।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ