তুরস্কে পৌঁছেছে ১৮ সদস্যের রুশ তদন্ত দল
২১ ডিসেম্বর, বিবিসি/আলজাজিরা/রয়টার্স : বন্দুকধারী পুলিশ সদস্যের হাতে প্রাণ হারানো রুশ রাষ্ট্রদূতের হত্যার ঘটনা তদন্তে আঙ্কারায় পৌঁছেছে রুশ তদন্ত দল। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসিসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম রুশ তদন্ত কর্মকর্তাদের আঙ্কারায় পৌঁছানোর খবর নিশ্চিত করেছে। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা জানিয়েছে, দলে ১৮জন তদন্তকারী রয়েছেন।
গত সোমবার সন্ধ্যায় একটি আর্ট গ্যালারি পরিদর্শন করছিলেন তুরস্কে নিযুক্ত রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত আন্দ্রেই কারলভ। হঠাৎই হামলার শিকার হন তিনি। বন্দুকধারীর ওই হামলায় তিনি গুলীবিদ্ধ হন। রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন মুখপাত্র সূত্রে ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স তার মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করে। বিবিসি জানিয়েছে, হামলায় আরও বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। নিজ দেশের রাষ্ট্রদূত হত্যার ঘটনার তদন্ত করতেই তুরস্কে তদন্ত দল পাঠিয়েছে রাশিয়া। সোমবার আঙ্কারায় এক শিল্প প্রদর্শনীর উদ্বোধনে গিয়েছিলেন প্রয়াত রুশ রাষ্ট্রদূত আন্দ্রেই কারলোভ। বক্তৃতার মাঝপথেই তাঁকে লক্ষ্য করে গুলী ছোড়ে এক যুবক। সেইসঙ্গে চিৎকার করে বলে, “আমরা আলেপ্পোয় মরছি। তুমি এখানে মরো।’’ ওই যুবকের গুলীতে আহত হন আরও তিন জন। মিনিট পঁচিশ গুলীর লড়াইয়ের পরে নিরাপত্তারক্ষীদের হাতে নিহত হয় আততায়ী। পরে জানা যায়, সে আঙ্কারার রায়ট পুলিশের অফিসার মেভলুত মার্ত আলতিনতাস। রুশ রাষ্ট্রদূত খুনের ঘটনায় হত্যাকারী পুলিশ অফিসারের বাবা-মা, বোন এবং আরও তিন আত্মীয়কে আটক করল পুলিশ। তাদের জেরা করতেই রুশ তদন্ত দল তুরস্কে গেছেন।
সিরিয়ায় রুশ বাহিনীর হস্তক্ষেপের প্রতিবাদে তুরস্কে বিক্ষোভের একদিন পরই এ হামলা চালানো হয়। হত্যা করা হয় রুশরাষ্ট্রদূতকে। রুশ প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিনের মতে, ‘‘রাশিয়া-তুরস্ক সম্পর্কে আঘাত হানতেই এই হামলা। ঘটনার পিছনে কারা আছে তা খুঁজে বের করতে হবে।’’ গত নবেম্বরে ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ে সিরিয়া সীমান্তে একটি রুশ যুদ্ধবিমান নামানোর অভিযোগ ওঠে তুরস্কের বিরুদ্ধে। সেই ঘটনায় চিড় ধরে দু’দেশের সম্পর্কে। তুরস্কের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে মস্কো। তাছাড়া, সিরিয়ার গৃহযুদ্ধ নিয়েও দু’দেশের সম্পর্ক যথেষ্ট তিক্ত হয়েছিল। তবে সম্প্রতি আলেপ্পোয় সংঘষর্ বিরতির সমঝোতা নিয়ে মধ্যস্থতা করার সময়ে সেই বরফ কিছুটা গলেছে। কিন্তু রাষ্ট্রদূতের হত্যাকারী আলেপ্পোরই নাম নেয়ায় দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক ফের বিগড়ে যেতে পারে বলে মনে করছেন অনেকেই। পুতিনও প্রচ্ছন্ন হুমকির সুরে বলেছেন, “এমন ঘটনা সিরিয়া নিয়ে আলোচনায় প্রভাব ফেলতে পারে।’’