বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪
Online Edition

জগন্নাথপুরে নদীগর্ভে বিলীন ঘরবাড়ি ও গুরুত্বপূর্ণ রাস্তাসহ বহু প্রতিষ্ঠান

জগন্নাথপুর উপজেলার ইটাখলা নদী ভাঙনের কবলে মসজিদ। বিলীন হয়ে গেছে গ্রামীণ রাস্তা -সংগ্রাম

জগন্নাথপুর প্রতিনিধি : জগন্নাথপুর উপজেলার পাইলগাঁও ইউনিয়নের খালিশাপাড়া গ্রাম এলাকায় ইটাখলা নদীতে ভাঙন চরম আকার ধারণ করেছে। ইতোমধ্যে নদী ভাঙনে বিলীন হয়ে গেছে অসংখ্য ঘরবাড়ি ও গ্রামীণ রাস্তা। ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে শতাধিক ঘরবাড়ি, মসজিদ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও অন্যান্য গ্রামীণ রাস্তা। নদী ভাঙনে বসত বাড়ি হারিয়ে অনেক পরিবার সর্বহারা হয়ে পড়েছেন। যে কোন সময় নদী পারের অন্যান্য স্থাপনা ভেঙে যাওয়ার আশঙ্কায় শঙ্কিত হয়ে পড়েছেন স্থানীয়রা।

মাওলানা জালাল উদ্দিন, রফু মিয়া, মাহমুদ মিয়া, আব্দুল খালিক, নানু মিয়া, আফজাল হোসেন, জামাল মিয়া, সুজন মিয়া, জাপা নেতা ফিরোজ রানাসহ স্থানীয়রা জানান, স্থানীয় শিবগঞ্জ বাজার থেকে ইটাখলা নদীর পার দিয়ে পাটকুড়া পর্যন্ত একটি গ্রামীণ রাস্তা রয়েছে। এ রাস্তা দিয়ে যুগযুগ ধরে খালিশাপাড়া, উলুকান্দি, বুধরাইল, মোরাদাবাদ, উলুছন্দ, বড় ফেছি, ছোট ফেছি, শেওরা, কিশোরপুর, সোনাতনপুর, ব্রাহ্মনগাঁও, তেঘরিয়া, সৈয়দপুর, বুরমপুরসহ ১৫ গ্রামের মানুষ চলাচল করে থাকেন। প্রতিনিয়ত এ রাস্তা দিয়ে স্কুল, কলেজ, মাদরাসার শিক্ষার্থীসহ সর্বস্তরের হাজারো জনতা যাতায়াত করেন।

তবে গত ১৫ দিন আগে খালিশাপাড়া গ্রাম এলাকার জামে মসজিদের সামনের রাস্তা ভেঙে নদী গর্ভে বিলিন হয়ে যায়। এছাড়া রাস্তার আরো বিভিন্ন স্থানের রাস্তা ভেঙে নদীতে তলিয়ে গেছে। গ্রামীণ এ রাস্তাটি ভেঙে নদীতে তলিয়ে যাওয়ায় সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। এতে অত্র অঞ্চলের ১৫ গ্রামের মানুষ চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। তাছাড়া খালিশাপাড়া-উলুকান্দি জামে মসজিদের সীমানা দেয়ালসহ সামনের জায়গা নদী গর্ভে বিলিন হয়েছে। মসজিদটি ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। যে কোন সময় মসজিদটি নদীতে ভেঙে যেতে পারে। এমন আশঙ্কায় শঙ্কিত হয়ে পড়েছেন মসজিদ কমিটিসহ গ্রামবাসী। ইতোমধ্যে খালিশাপাড়া, উলুকান্দি ও কিশোরপুর গ্রামের প্রায় অর্ধশতাধিক ঘরবাড়ি নদীতে তলিয়ে গেছে। নিজেদের বসতবাড়ি হারিয়ে অনেকে অন্যের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন। বর্তমানে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে খালিশাপাড়া-উলুকান্দি জামে মসজিদ, সমছু মিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং খালিশাপাড়া, কিশোরপুর, রমাপতিপুর, বুধরপুর, মুজাহিদপুরসহ বিভিন্ন গ্রামের আরো শতাধিক ঘরবাড়ি, মসজিদ ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। নদী ভাঙনের কবলে পড়ে যে কোন সময় এসব স্থাপনা ভেঙে তলিয়ে যেতে পারে। সারাক্ষণ এমন আশঙ্কা নিয়ে জীবন-যাপন করছেন নদী ভাঙনের শিকার হওয়া ক্ষতিগ্রস্ত অত্র অঞ্চলের জনসাধারণ। প্রতিদিন নদী ভাঙনে নতুন নতুন স্থাপনা বিলিন হচ্ছে। এমন দৃশ্য ক্ষতিগ্রস্তরা নিজ চোঁখে দেখে কান্নায় ভেঙে পড়ছেন। নদী ভাঙনের আগ্রাসী রূপ দেখলে যে কেউ ভয়ে আতঁকে উঠবেন। তাই জর”রী ভিত্তিতে নদী ভাঙন রোধে ব্যবস্থা নিতে সরকারের সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন ভোগান্তির শিকার হওয়া ক্ষতিগ্রস্ত জনসাধারণ। 

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে জগন্নাথপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাম্মদ মাসুম বিল্লাহ বলেন, ইটাখলা নদী ভাঙনরোধে ব্যবস্থা নিতে পানি উন্নয়ন বোর্ডকে বলে দিয়েছি। ইতোমধ্যে পাউবো’র কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ