শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪
Online Edition

২০২১ সালের মধ্যে বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা ২৪ হাজার মেগাওয়াটে উন্নীত হবে -প্রধানমন্ত্রী

সংসদ রিপোর্টার : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ২০২১ সালের মধ্যে সবার জন্য বিদ্যুৎ সুবিধা নিশ্চিতকল্পে উৎপাদন ক্ষমতা ২৪ হাজার মেগাওয়াটে উন্নীত করার কার্যক্রম চলছে। চলতি বছরেই জাতীয় গ্রীডে ১ হাজার ৮৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ যোগ হবে।
প্রধানমন্ত্রী গতকাল সংসদে তার জন্য নির্ধারিত প্রশ্নোত্তর পর্বে সরকারি দলের সদস্য বেগম ফজিলাতুন নেসা বাপ্পির এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, ২০০১ সালে ক্ষমতা হস্তান্তরের সময় বিদ্যুৎ উৎপাদনের সক্ষমতা ছিল ৪ হাজার ৩শ’  মেগাওয়াট। অথচ ২০০৯ সালে আবার যখন ক্ষমতা গ্রহণ করি তখন পেয়েছিলাম মাত্র ৩ হাজার ২শ’ মেগাওয়াট। অর্থাৎ বিএনপি-জামায়াতের দুঃশাসনে বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা ১১শ’ মেগাওয়াট কমে গিয়েছিল।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপি-জামায়াতের দুঃসহ দিনগুলোতে মানুষকে ১০ থেকে ১২ ঘণ্টা লোডশেডিংয়ের যন্ত্রণা ভোগ করতে হতো। বিদ্যুতের জন্য আন্দোলন করতে গিয়ে কানসাটে মানুষকে প্রাণ দিতে হয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, সরকার মাত্র ৫ বছরে বিদ্যুৎ উৎপাদন তিনগুণ বৃদ্ধি করে ২০১৩ সালে ১ হাজার মেগাওয়াটে উন্নীত করে। দ্বিতীয় মেয়াদে মাত্র ৩ বছরে বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা ১৫ হাজার ৩৫১ মেগাওয়াটে উন্নীত করেছে।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে উচ্চ মধ্যম আয়ের দেশ পেরিয়ে একটি শান্তিপূর্ণ, সমৃদ্ধ, সুখী এবং উন্নত জনপদে পরিণত করার ব্যাপারে দৃঢ় সংকল্পবদ্ধ।
আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, একমাত্র আওয়ামী লীগই পারবে, বাংলাদেশকে ২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের এবং ২০৪১ সালের মধ্যে জাতির জনকের স্বপ্নের উন্নত সমৃদ্ধ সোনার বাংলা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে।’
তিনি বলেন, ‘রূপকল্প ২০২১’-কে সামনে রেখে ক্ষমতায় এসে বাংলাদেশকে পরিকল্পিত ও সুষম উন্নয়নের মাধ্যমে ২০২১ সালের মধ্যে ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত মধ্যম আয়ের দেশ হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে ‘বাংলাদেশ প্রেক্ষিত পরিকল্পনা (২০১০-২১)’ প্রণয়ন করে।
 শেখ হাসিনা বলেন, ২০১৫-১৬ অর্থবছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার ৭ দশমিক ১১ উন্নীত হয়েছে। এ বছরের প্রবৃদ্ধি ধরা হয়েছে ৭ দশমিক ২। বর্তমানে (২০১৬) মাথাপিছু আয় ১ হাজার ৪৬৬ মার্কিন ডলারে উন্নীত হয়েছে।
তিনি বলেন, দারিদ্র্য নিরসনে উল্লেখযোগ্য সাফল্য অর্জন করেছে। ২০১৬ সালে দারিদ্র্যের হার এসে দাঁড়িয়েছে ২৩ দশমিক ৫ শতাংশে। ২০২০ সাল নাগাদ দারিদ্র্য সীমার নিচে বসবাসকারী জনগণের সংখ্যা ১৮ দশমিক ৬ শতাংশে নামিয়ে আনার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, বিদ্যুৎ খাতকে অগ্রাধিকার হিসেবে চিহ্নিত করে বিদ্যুৎ উৎপাদন বর্তমানে ১৫ হাজার ৩শ’ মেগাওয়াটে উন্নীত হয়েছে। দেশের মোট জনসংখ্যার প্রায় ৮০ শতাংশ মানুষ বিদ্যুৎ সুবিধা পাচ্ছে।
তিনি বলেন, দেশের মোট প্রজনন হার ২ দশমিক ১০-এ নেমে এসেছে, একই সময়ে শিশু মৃত্যুহার প্রতি হাজার জীবিত জন্মে ২৯ জন এবং পাঁচ বছরের নিচের শিশুদের ক্ষেত্রে ৩৬ জনে নেমে এসেছে, যা ২০১১ সালে ছিল ৪৪ জনে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, মাতৃৃমৃত্যু হার হ্রাসের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ উল্লেখযোগ্য সাফল্য অর্জন করেছে। প্রতি এক লাখ জীবিত জন্মে এ হার ১৭০ জনে নেমে এসেছে, যা ২০১১ সালে ২০৯ জনে ছিল। দেশে জনগণের গড় আয়ু বেড়ে ৭০ দশমিক ৯ বছর হয়েছে।
 শেখ হাসিনা বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ গঠনের জন্য তথ্য প্রযুক্তি ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করার মাধ্যমে ২০১৫ সালে এসে টেলি ডেনসিটি ৭৯ দশমিক ৩ শতাংশে উন্নীত হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২৫ হাজার ওয়েবসাইট নিয়ে বিশ্বের বৃহত্তম ওয়েব পোর্টাল ‘তথ্য বাতায়ন’ চালু করা হয়েছে। যা আন্তর্জাতিকভাবে পুরস্কৃত হয়েছে।
 শেখ হাসিনা বলেন, অর্থনীতি ও সামাজিক সূচকের অধিকাংশ ক্ষেত্রেও বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার এবং নিম্ন-আয়ের দেশগুলোকে ছাড়িয়ে গেছে। বিশ্বে ব্যাংকের প্রধান অর্থনীতিবিদ কৌশিক বসু ২০১৫ সালে বাংলাদেশ সফরে এসে বাংলাদেশকে দেখেছেন ‘এশিয়ার ইমার্জিং টাইগার’ হিসেবে।
তিনি বলেন, প্রাইস ওয়াটার হাউস কুপার্স-এর রিপোর্ট অনুযায়ী বাংলাদেশ ২০৩০ সাল নাগাদ বিশ্বের ২৯তম ও ২০৫০ সাল নাগাদ ২৩তম অর্থনীতি দেশে উন্নীত হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সিটি গ্রুপ’-এর বিবেচনায় ২০১০ থেকে ২০৫০ সময়ে বিশ্বে সম্ভাব্য প্রবৃদ্ধি সঞ্চালক ‘৩জি ( গ্লোবাল গ্রোথ জেনারেটর) কান্ট্রিজ’ এবং বিনিয়োগের আকর্ষণীয় গন্তব্য হিসেবে ‘জেপি মরগ্যান’ এর ‘ফ্রন্টার ফাইভ’ তালিকায় স্থান পেয়েছে বাংলাদেশ।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ