শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪
Online Edition

প্রেমিকার বিষপানে আত্মহত্যা

গৌরনদী (বরিশাল) সংবাদদাতা: প্রেমিকের সাথে কথা বলার অপরাধে পরিবারের লোকজনের গালমন্দ সইতে না পেরে মীম আক্তার (১৫) নামের বরিশালের গৌরনদী উপজেলার কাছেমাবাদ সিদ্দিকীয়া কামিল মাদ্রাসার দাখিল পরীক্ষার্থিনী এক ছাত্রী গত রোববার সন্ধ্যায় অভিমানে বিষপান করে আত্মহত্যা করেছে। হৃদয়বিদারক এ ঘটনায় ওই এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। এ ঘটনায় শোকাহত প্রেমিক নাঈম গত সোমবার তার আরবী সাহিত্য ২য় পত্রের পরীক্ষা বর্জন করে ছাত্রাবাস থেকে লাপাত্তা হয়ে গেছে।
আত্মহত্যাকারিনীর স্বজন, মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ, এলাকাবাসী, পুলিশ ও হাসপাতাল সূত্রে জানাগেছে, উপজেলার কাছেমাবাদ গ্রামের আলমগীর আকনের মেয়ে কাছেমাবাদ সিদ্দিকীয়া কামিল মাদ্রাসার দাখিল পরীক্ষার্থীনি মীম আক্তার (১৫)’র সাথে তার সহপাঠি মাদ্রাসার ছাত্রাবাসের আবাসিক ছাত্র মুলাদী উপজেলার নাঈম এর সাথে সম্প্রতি প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। গত রোববার ওই মাদ্রাসার দাখিল পরীক্ষা কেন্দ্রে মীম ও নাঈম আরবী সাহিত্য প্রথম পত্রের পরীক্ষা দেয়। পরীক্ষা শেষে বাড়ি ফেরার পথে মিম তার প্রেমিক নাঈমের সাখে কথা বলে। এতে তার বাড়ি ফিরতে একটু দেরি হয়। এ ঘটনা জানতে পেরে মীমের পরিবারের সদস্যরা  মীমকে ভীষণ গালমন্দ করে। এতে অভিমান করে মীম গত রোববার সন্ধ্যায় নিজগৃহে বসে বিষপান করে অসুস্থ হয়ে পড়ে। স্বজনরা টের পেয়ে ওইদিন সন্ধ্যায় মীম আক্তারকে গৌরনদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত চিকিৎসকগন মীম আক্তারকে বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরন করে। হাসপাতালে নেয়ার পথে বরিশাল শহর এলাকায় বসে মীম মারা যায়।
কাছেমাবাদ ছিদ্দিকীয়া কামিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ আবু সাঈদ মোহাম্মদ কামেল কাওছার জানান, আরবী সাহিত্য ২য় পত্রের পরীক্ষায় তার মাদ্রাসার ছাত্রী মীম ও ছাত্র নাঈম অংশগ্রহণ করেনি।
পরে তিনি খোজ নিয়ে জানতে পারেন মীম আত্মহত্যা করেছে। নাঈম ছাত্রাবাসে নেই। সে ছাত্রবাসের সহপাঠীদের বাড়ি যায় বলে চলে গেছে। সে কোথায় আছে আমরা বলতে পারছি না।
গৌরনদী মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ আলাউদ্দিন মিলন জানান, বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ময়নাতদন্ত শেষে মীমের লাশ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ আতœহত্যার ঘটনায় বরিশাল শহরের কোতয়ালী থানায় একটি অপ-মৃত্যু মামলা দায়ের করা হয়েছে। এটি আত্মহত্যা, নাকি হত্যা ময়নাতদন্ত রিপোর্ট পেলে নিশ্চিত হওয়া যাবে।
এলাকাবাসী জানায়, দাখিল পরীক্ষার্থিনী মীমের আত্মহত্যার ঘটনায় ওই এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। গত সোমবার বাদ আছর জানাজা শেষে মীমের লাশ তাদের পারিবারিক গোরস্থানে দাফন করা হয়।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ