গুলশানে ফুটপাত থেকে দুটি দূতাবাসের স্থাপনা অপসারণ
স্টাফ রিপোর্টার : রাজধানীর গুলশানে দুটি দূতাবাসের সামনে সড়ক ও ফুটপাত দখল করে গড়ে তোলা অবৈধ স্থাপনা অপসারণ করেছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি)। এছাড়া আরও চারটি দূতাবাসকে ফুটপাত থেকে তাদের স্থাপনা সরিয়ে নেয়ার অনুরোধ জানিয়ে চিঠি পাঠানোর কাজ শুরু করেছে ডিএনসিসি। গতকাল মঙ্গলবার অভিযান চালিয়ে ইতালী দূতাবাস এবং পাকিস্তান হাই কমিশনের সামনের সড়ক ও ফুটপাতের ৪০০ ফুট অংশ জুড়ে থাকা কংক্রিটের ব্লক ও নিরাপত্তা বেষ্টনি অপসারণ করা হয়।
এদিন বেলা ১১টার দিকে ডিএনসিসির মেয়র আনিসুল হকের উপস্থিতিতে ৭৯ নম্বর সড়কে ইতালীয় দূতাবাসের সামনে অভিযান শুরু হয়। দূতাবাসটির ডেপুটি হেড অব মিশন যোসেফ সেমেনজা ডিএনসিসি কর্মকর্তাদের এ কাজে সহায়তা করেন।
এসময় আনিসুল হক সাংবাদিকদের বলেন, “ফুটপাত জনগণের হাঁটাচলার জন্য। কিন্তু আমাদের এখানে ফুটপাতে মানুষ হাঁটতে পারে না। এটা ঠিক না। পৃথিবীর কোথাও এমন হয় না। সবখানে ফুটপাত সাধারণ মানুষের। তারা এমনভাবে ফুটপাত দখল করে রেখেছে যে, গত কয়েক বছর ধরে আমার লোকরা ফুটপাতে উঠতে সাহসই পায় না।”
ফুটপাতে সাধারণ মানুষকে চলতে দিতে তিনি গুলশান ও ঢাকাবাসীর কাছে অঙ্গীকারবদ্ধ জানিয়ে মেয়র বলেন, “সেজন্য গত তিন মাস ধরে সবার সঙ্গে কথা বলছি। সবই হচ্ছে আলোচনার ভিত্তিতে। সবার সঙ্গে যোগাযোগ করছি। সবাইকে চিঠি দিয়েছি। সবাই আমাদের সঙ্গে সহযোগিতা করছেন। দুই-চারজন ছাড়া।”
দূতাবাসগুলোর নিরাপত্তার বিষয়টি সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে এর পাশাপাশি নগরবাসী যাতে ফুটপাত ব্যবহার করতে পারে সেদিকে নজর দেয়া হচ্ছে বলে জানান আনিসুল হক। “ইতিপূর্বে আমেরিকান ও কানাডিয়ান দূতাবাসের সামনের ফুটপাত উন্মুক্ত করা হয়েছে। তারা আমাদের পূর্ণ সহযোগিতা করেছে। আমরা আলোচনার মাধ্যমে সব করেছি। তারা ফুটপাত থেকে ব্লক সরিয়ে নিয়েছে। নেটগুলো কেটে দিয়েছে।”
ইতালী দূতাবাসের ডেপুটি হেড অব মিশন যোসেফ সেমেনজা বলেন, “ঢাকা সিটি করপোরেশনের এ ভালো উদ্যোগে সাহায্য করতে পেরে আমরা খুশি। সুন্দর ঢাকা গড়তে আমাদের সহযোগিতা সবসময় অব্যাহত থাকবে।”
ইতালী দূতাবাসের স্থাপনা অপসারণ শেষে মেয়র সাংবাদিকদের নিয়ে অস্ট্রেলিয়া হাইকমিশন এবং রাশিয়া দূতাবাসের সামনের সড়ক ঘুরে দেখেন। সেখানে ফুটপাত ও সড়কের বড় অংশ জুড়ে কংক্রিটের ব্লক, নিরাপত্তা বেষ্টনী ও টহল চৌকি বসানো হয়েছে। পরে ৯০ নম্বর সড়কে পাকিস্তান হাই কমিশনের সামনে যান আনিসুল হক। সেখানে ফুটপাতের ওপর গড়ে তোলা কিছু স্থাপনা সরিয়ে দেয়া হয়। অভিযানে সহায়তা করায় পাকিস্তান হাই কমিশনকে ধন্যবাদ জানান মেয়র। এসময় পাকিস্তান হাই কমিশনের সেকেন্ড সেক্রেটারি জামিল আখতার খানসহ কয়েকজন কর্মকর্তা মেয়রের সঙ্গে দেখা করেন।
সবশেষে দূতাবাসের সামনের অবৈধ স্থাপনা নিজেদের উদ্যোগে সরিয়ে নেয়ার চিঠি দিতে অস্ট্রেলিয়ান হাই কমিশনারের বাসায় যান আনিসুল হক। এ সময় মেয়র বলেন, “এর আগেও তাদের চিঠি দেয়া হয়েছে। কিন্তু তারা সাড়া দেননি। এজন্য আবারও তাদের সহযোগিতা চাচ্ছি।”একই ধরনের চিঠি সৌদী, জার্মান ও রাশিয়ান দূতাবাসকেও পাঠানো হবে বলে জানান আনিসুল হক। অভিযানে ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মেসবাহুল ইসলামসহ অন্য কর্মকর্তারা অংশ নেন।