শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪
Online Edition

একটি অংশগ্রহণমূলক অর্থপূর্ণ নির্বাচন দেশের স্বার্থেই জরুরি

মোহাম্মদ জাফর ইকবাল : দেশের প্রায় সব ক’টি দল, সুশীল সমাজ এমনকি বিদেশীরা পর্যন্ত বাংলাদেশে সবার অংশগ্রহণে একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন দেখতে চায়। তবে জাতীয় নির্বাচন নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে যেভাবে সরকারি দলের একগুয়েমী বক্তব্য চলছে তাতে করে জনমনে শংকা তৈরি হচ্ছে এই জন্য যে, আগামী নির্বাচনের মাধ্যমে দেশে গণতন্ত্রের উত্তরণ ঘটবে, নাকি আবারো একটি একদলীয় ভোটারবিহীন নির্বাচনের প্রহসন ঘটবে? রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকেরা বলছেন, একটি অংশগ্রহণমূলক অর্থপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠান জাতির আকাঙ্খা ও দেশের স্বার্থেই জরুরি। তাদের মতে, এর মাধ্যমে সুষ্ঠু গণতান্ত্রিক পথ অনুসরণ করে বাংলাদেশ দ্রুত উন্নতির দিকে এগিয়ে যাবে, দেশ থেকে দারিদ্র্য মোচন হবে, দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা চাঙ্গা হবে।

সূত্র মতে, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আগামী বছরের ডিসেম্বরে অনুষ্ঠানের সম্ভাবনা রয়েছে। বহু বিতর্কিত ও কলংকিত দশম জাতীয় সংসদের মেয়াদ শেষ হবে ২০১৯ সালের ৫ জানুয়ারি। তার আগেই নির্বাচন হতে হবে। দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে যে দুর্ভাগ্যজনক অভিজ্ঞতা রয়েছে, তাতে দেশে এবং দেশের বাইরে আগামী নির্বাচন নিয়ে ঔৎসুক্য ও আগ্রহ প্রবল। ওই নির্বাচনের কারণে বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমর্যাদা অনেক কমেছে। দেশ পিছিয়ে গেছে মানবাধিকার, গণতন্ত্র, আইনের শাসনসহ প্রায় সকল ক্ষেত্রেই। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বিভিন্ন বাহিনীর হাতে সাধারণ মানুষের নিগৃহীত হওয়ার বিষয়টি নিয়ে গভীর উদ্বেগের কারণ রয়েছে। শুধু সরকারি বাহিনী নয়, ক্ষমতাসীন মহলের হাতেও মানুষ লাঞ্ছিত হচ্ছে। হত্যা, গুম, বিনা বিচারে আটক ও রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণ অব্যাহত আছে। বিশ্বের অন্যতম সর্বাধিক দুর্নীতিপ্রবণ দেশ হিসেবে বাংলাদেশের কুখ্যাতি রয়েছে। দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত নেই বলে এখানে জবাবদিহিতার প্রচ- অভাব। আর জবাবদিহিতার অভাবেই দেশে কর্তৃত্বপরায়ণ শাসনের বিস্তার ঘটেছে। খর্ব হচ্ছে জনগণের অধিকার।

জাতীয় নির্বাচন যতই ঘনিয়ে আসছে ততই নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা নিয়ে আলোচনা –সমালোচনা হচ্ছে। গত নির্বাচন কমিশন যোগ্যতার পরিচয় মোটেও দিতে না পারায় এবার নতুন নির্বাচন কমিশনের প্রতি মানুষের প্রখর দৃষ্টি। এ জন্য নতুন নির্বাচন কমিশনের সম্মুখে বিরাট চ্যালেঞ্জ রয়েছে। তবে নতুন নির্বাচন কমিশনের সূচনা কিন্তু আশাব্যঞ্জক নয়। সম্প্রতি কয়েকটি উপজেলা পরিষদ ও মেয়র নির্বাচনে তা প্রমাণিত হয়েছে। এসব নির্বাচন নিয়ে আশাবাদী হওয়ার সুযোগ নেই। কেন্দ্র দখল, ব্যালট পেপার ছিনতাই, ভোট ডাকাতি, প্রতিপক্ষের উপর হামলা-এসব ছিল নিত্যকার ঘটনা। প্রতিকার চেয়েও কোনো লাভ হয়নি। সবচেয়ে বড় যে জিনিসটি এবার লক্ষ্য করা গেছে, তা হলো ভোটারদের স্বল্পতা। নির্বাচন কমিশনও এ কথা স্বীকার করেছে। বাংলাদেশের মানুষ ভোটপাগল। ভোটারেরা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেন উৎসব হিসেবে। নারী ও বৃদ্ধরা পর্যন্ত ভোটকেন্দ্রে বিপুলভাবে উপস্থিত হন। কিন্তু এবার এ ধরনের দৃশ্য ভোটকেন্দ্রে ছিল না। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভোট নিয়ে মানুষের মাঝে চলমান হতাশা, ভীতি বা উৎসাহহীনতার কারণেই এমনটি হয়েছে। নতুন নির্বাচন কমিশনও ভীতি দূর করতে পারেনি। পারেনি উৎসাহ সৃষ্টি করতে । নির্বাচনে ক্ষমতাসীন দলের ব্যাপক প্রভাব বিস্তারের বিষয়টি লক্ষ্য করা গেছে। বিভিন্ন কেন্দ্রে ভোটারদের অনুপস্থিতিতে ভোটকেন্দ্র দখল, ভোটডাকাতি, পোলিং এজেন্টদের মারধর, তাদের ভোটকেন্দ্র থেকে বের করে দেয়াসহ বহু অনিয়ম হয়েছে। দায়িত্ব পালনকালে সাংবাদিকেরা বাধাগ্রস্ত হন, ক্যামেরা ছিনিয়ে নেয়ার ঘটনাও ঘটেছে। সরকারি দলের নেতাকর্মীদের বুথের ভেতর পর্যন্ত ঘোরাঘুরি করতে দেখা গেছে। কোনো কোনো কেন্দ্রে ভোটার না থাকায় ভোট গ্রহণে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা গল্পগুজব করে সময় কাটিয়েছেন।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, সরকার ও নির্বাচনের কমিশনের উচিৎ হবে, বিগত নির্বাচন যেভাবে জনগণকে হতাশ করেছে, সেই হতাশা দূর করা। তাদের মতে, সংবিধান নির্বাচন কমিশনকে যে প্রচুর স্বাধীনতা দিয়েছে তা সমুন্নত করা এবং অক্ষুণ্ন রাখা জরুরি। কমিশন নিরপেক্ষতার সাথে কাজ করে সব দলের জন্য নির্বাচনক্ষেত্র ‘সমতল’ করতে হবে। নির্বাচন যাতে অংশগ্রহণমূলক ও প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক হতে পারে তার ব্যবস্থা করতে উদ্যোগী হতে হবে। নির্বাচন অনুষ্ঠানের ক্ষেত্রে যে বিধিবিধান রয়েছে, সেগুলো হালনাগাদ করতে হবে। এখন নির্বাচন পরিচালনা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা এবং জেলা নির্বাচনী অফিসাররা সরকারের কর্মকর্তা। তারা প্রেষণে নির্বাচন কমিশনে যান। এতে তাদের ওপর সরকারের প্রভাব পড়ে। তাই নির্বাচন কমিশনের নিজস্ব ক্যাডার সৃষ্টি করতে হবে।

সূত্র মতে, রাজনৈতিক অঙ্গনে এখন পরস্পর পাল্টাপাল্টি বক্তব্য দিচ্ছে দেশের প্রধান দুই দল। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ বলছে, আগামী সংসদ নির্বাচন শেখ হাসিনার অধীনেই হবে। আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বলেছেন, নির্বাচন নিয়ে তারা (বিএনপি) আবারো প্রশ্ন তুলেছে। কিয়ামত পর্যন্ত নাকি তারা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অধীনে নির্বাচনে যাবে না। বিএনপি যাই বলুক না কেন, নির্বাচন ২০১৯ সালেই হবে এবং শেখ হাসিনার অধীনেই হবে। আর এতে যদি বিএনপি নির্বাচনে না আসে তাদের জন্য অপেক্ষা করা হবেনা।

এ দিকে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, আগামী নির্বাচন শেখ হাসিনার অধীনে হবে না। বেগম খালেদা জিয়া শিগগিরই নির্বাচনকালীন সরকারের যে রূপরেখা দেবেন, সেই রূপরেখা অনুযায়ী নির্বাচনকালীন সরকার সংসদ নির্বাচন পরিচালনা করবে। এছাড়া দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বিএনপি নির্বাচনে যেতে চায়। সেজন্য পরিবেশ তৈরী করতে হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অধীনে কোনভাবেই নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব নয়। জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় অবশ্যই একটি নির্বাচনকালীন সরকার থাকতে হবে। যাতে করে মাঠ প্রশাসনের সব সেক্টরে স্বাধীনভাবে কাজ করার মানসিকতা সৃষ্টি হতে পারে।

সুশীলসমাজের সদস্য এবং বিশিষ্ট আইনজীবী ড. শাহদীন মালিক বলেছেন, দলীয় সরকারের অধীনে এ পর্যন্ত দেশে যে ছয়টি সংসদ নির্বাচন হয়েছে, সেই ছয়টি নির্বাচনের একটিও ভালো হয়নি। এরই ধারাবাহিকতায় আগামী নির্বাচনও যে ভালো হবে না সেটা অনেকটা নিশ্চিত। ড. মালিক বলেন, বাংলাদেশের ৪৭ বছরের ইতিহাস যদি পর্যালোচনা করা হয় তাহলে দেখা যায়, আগামী নির্বাচন কোনোভাবেই সুষ্ঠু হবে না। গত ৪৭ বছরে ১০টি নির্বাচনের মধ্যে ছয়টি দলীয় সরকারের অধীনে হয়েছে। বাকি চারটি হয়েছে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে। এখানে উল্লেখ করা যায়, যে চারটি নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে হয়েছে, সেগুলো অপেক্ষাকৃত ভালো নির্বাচন ছিল।

বিএনপি দাবি করছে, নির্বাচনের আগে একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন সহায়ক সরকার গঠন করে তার অধীনে নির্বাচন দিতে হবে। খুব শীঘ্রই বিএনপির পক্ষ থেকে নির্বাচনসহায়ক সরকারের একটি রূপরেখা দেয়া হবে। এ দাবি নিয়ে বিএনপির নেতৃবৃন্দ সোচ্চার। বুধবার দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর একটি অনুষ্ঠানে আবারো বলেছেন, নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার ছাড়া দেশে কোনো নির্বাচন হবে না।

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের মন্তব্য করেছেন, সংবিধানে ‘নির্বাচনসহায়ক সরকার’ বলে কিছু নেই। বিশ্বের অন্যান্য গণতান্ত্রিক দেশে যেভাবে নির্বাচন হয়, বর্তমান সরকারের অধীনেই আগামীতে সেভাবে নির্বাচন হবে। নির্বাচন কমিশন নির্বাচন সম্পন্ন করবে। পৃথক এক ফোরামে ওবায়দুল কাদের বলেছেন, সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচনকালীন সরকারে বিএনপির থাকার কোনো সুযোগ নেই। সংবিধানের বাইরে গেলেও নিবন্ধন হারানোর ভয়ে বিএনপি আগামী নির্বাচনে আসবে। অবশ্য বিএনপির পক্ষ থেকে এর পাল্টা বক্তব্যে বলা হয়েছে, বিএনপির নিবন্ধন বাতিল হলে আর কারো নিবন্ধন থাকবে না।

জানা গেছে, আওয়ামী লীগ মনে করে, বিএনপি মুখে যাই বলুক দলের নিবন্ধন রক্ষার জন্য আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তারা অংশ নিতে বাধ্য। দলটি আরো মনে করে পরবর্তী নির্বাচনে অংশ না নিলে বিএনপি জাতীয় ও স্থানীয় নির্বাচনে গুরুত্ব হারাবে। তা ছাড়া নির্বাচনী গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ আইনের ৯০ এইচ(১)ই ধারা বিএনপিকে নির্বাচনে আনতে গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ হবে। তাদের মতে, এই ধারার কারণে বিএনপি নির্বাচনে আসতে বাধ্য হবে। আরপিও ৯০এইচ(১) ধারায় দলের নিবন্ধন বাতিলের ক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশনকে ক্ষমতা দেয়া হয়েছে। পাঁচটি কারণে নির্বাচন কমিশন নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন বাতিল করতে পারবে। এই ধারার (ই) উপধারায় বলা হয়েছে, কোনো রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন বাতিল হবে যদি কোনো রাজনৈতিক দল পর পর দু’টি সংসদ নির্বাচনে অংশ না নেয়। পরপর দুইবার নির্বাচনে অংশ না নেয়া দলটিকে শুনানিতে অংশ নেয়ার সুযোগ দেয়া হবে। কমিশনের কাছে দলটির বক্তব্য গ্রহণযোগ্য না হলেই কেবল তারা নিবন্ধন বাতিলের সিদ্ধান্ত নেবে।

ক্ষমতাসীন সরকারের অধীনে বিএনপিকে নির্বাচনে নিতে গভীর ষড়যন্ত্র চলছে মন্তব্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, আওয়ামী লীগ চায় আবারো ৫ জানুয়ারির মতো নির্বাচন করে ক্ষমতায় আসতে। সরকার একই কায়দায় ছলচাতুরী করে গোল করতে চায়, কিন্তু তা সহজ নয়। বাংলাদেশের মানুষ কখনোই ষড়যন্ত্র মেনে নেবে না। তিনি বলেন, আইন করা হয়েছে, দুইবার জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করলে নিবন্ধন বাতিল হয়ে যাবে। আইন হবে মানুষের কল্যাণের জন্য। যে আইন মানুষের কল্যাণে আসবে না, তা আইন নয়।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ক্ষমতাসীন দলের ক্ষমতায় থেকেই নির্বাচন করা আর বিরোধী জোটের নিরপেক্ষ সরকারের দাবির প্রেক্ষিতে আবারো একটি একতরফা নির্বাচন হতে যাচ্ছে কি না তা নিয়ে শঙ্কা তৈরী হয়েছে। নির্বাচনকালীন সরকার বিষয়ে সমঝোতা না হওয়ায় দশম জাতীয় সংসদের নির্বাচন বয়কট করে বিএনপিসহ ২০ দলীয় জোট। একতরফা সে নির্বাচন হয়েছিল সঙ্ঘাতময়। এখন একাদশ সংসদ নির্বাচন নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে চলছে আলোচনা। প্রতিপক্ষ দুই রাজনৈতিক শিবির আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মধ্যে চলছে উত্তপ্ত বাদানুবাদ। এই উত্তেজনা সেই নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে। এ ইস্যুতে দুই পক্ষ বিপরীত মেরুতে অবস্থান করছে। আওয়ামী লীগ মনে করছে আন্দোলন করে বিএনপির দাবি আদায় সম্ভব হবে না। ক্ষমতাসীনেরা আরো ভাবছেন, নিজেদের অস্তিত্বের স্বার্থেই এবার আর নির্বাচন বয়কট করতে পারবে না বিএনপি। অন্য দিকে আওয়ামী লীগের এ ধরনের চিন্তার বিপরীত অবস্থানে রয়েছে বিএনপি। নির্বাচনকালীন সহায়ক সরকারের দাবিতে মাঠে নামবেন তারা। এই ইস্যুকে শক্তিশালী করে সামনে আরো কঠোর অবস্থান নেয়ার পরিকল্পনা করছে বিএনপি। ‘উপযুক্ত সময়ে’ আন্দোলনের কৌশল ও ছক তৈরি করবে দলটি।

আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ আগের মতো জোটবদ্ধ হয়ে নির্বাচনের পূর্ণ প্রস্তুতি হিসেবে ‘হোম টাস্ক’ শুরু করেছে, দলকে সাজাচ্ছে এবং মাঠে ময়দানে দলের নেতাদের সরব উপস্থিতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। দলের সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সভা-সমাবেশে নৌকার পক্ষে ভোট চাইছেন। তবে জাতীয় পার্টির বিষয়টিও এবার লক্ষ্য করার মতো। গত নির্বাচনে জাতীয় পার্টি আওয়ামী লীগের সাথে সমঝোতা করে নির্বাচন করেছে। এবার তারা নতুন কৌশল নিয়ে অগ্রসর হচ্ছে। তবে রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা মনে করেন, এবারো জাতীয় পার্টি আওয়ামী লীগের সাথে সমঝোতা করেই কাজ করছে। এবারের কৌশল এমন বলে ধারণা করা হচ্ছে যে, বিএনপি যদি কোনো কারণে নির্বাচনে না আসে সে ক্ষেত্রে আওয়ামী লীগ জাতীয় পার্টিকে প্রধান বিরোধী দল হিসেবে নির্বাচনে নামাবে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের প্রশ্নে রাজনৈতিক দলের ন্যূনতম ঐকমত্য হওয়া খুবই জরুরি। সরকার, নির্বাচন কমিশন এবং নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী দলের ভূমিকার ওপরই অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠান নির্ভরশীল। দেশে গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের ক্ষেত্রে অতীতে যে সমস্যাগুলোর সম্মুখীন হতে হয়েছে তার প্র্রধান কারণ হচ্ছে, এ তিন পক্ষের দুর্বলতা। বাংলাদেশে এ পর্যন্ত যত সরকার ও নির্বাচন কমিশনের অধীনে নির্বাচন হয়েছে, সেগুলো সুষ্ঠু না হওয়ার পেছনে এ দুই পক্ষের ভূমিকা সবচেয়ে বেশি আপত্তিজনক ছিল। অথচ এখন দেশের জন্য একটি স্থিতিশীল ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশ সৃষ্টি করা অপরিহার্য।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ