চুয়াডাঙ্গায় অসহনীয় লোডশেডিংয়ে বিপর্যস্ত জনজীবন
চুয়াডাঙ্গা সংবাদদাতা : চুয়াডাঙ্গায় অসহনীয় লোডশেডিংয়ে অতীষ্ঠ হয়ে পড়েছে সাধারণ মানুষ। বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলে এখন আর বিদ্যুত যায় না বরং মাঝে মাঝে আসে। সন্ধার আগেই বিদায় নেয়, আর ফজরের আজানের পর আসে। দিনের বেলা ফুয়াদের গল্পের ন্যায় ফুড়–ৎ ফুড়–ৎ করে কতবার যায় আর আসে তার খতিয়ান রাখাও দায়। এমনিতেই চুয়াডাঙ্গায় ভু-প্রকৃতিগত কারণে শীতের সময় তীব্র শীত এবং গরমের সময় তীব্র গরম পড়ে। সে হিসেবে এখনকার বিদ্যুত ব্যবস্থা একেবারেই গতানুগতিক। চলতি গরমের মওসুমে এখানে সবোর্চ্চ তাপমাত্রা ৩৮ দশমিক ৫ এবং প্রতিদিনই প্রায় ঝড়বৃষ্টি হবার কারণে গড় তাপমাত্রা ৩৪ দশমিক ৬ অব্যাহত রয়েছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিদ্যুৎ সংশ্লিষ্ট একজন দায়িত্বশীল প্রকৌশলী এই প্রতিবেদককে জানান-চুয়াডাঙ্গায় বর্তমান চাহিদার তুলনায় বিদ্যুত প্রাপ্তির হার একেবারেই নাজুক অবস্থায় পৌঁচেছে। এখানে প্রতিদিন পল্লী বিদ্যুত সমিতির চাহিদা থাকে ৫১/৫২ মেগাওয়াট, সেখানে তাদেরকে সাকুল্যে দেয়া হচ্ছে মাত্র ২৩ মেগাওয়াট এবং ওয়েস্টজোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির (ওজোপাডিকো) চাহিদা থাকে ১৮/১৯ মেগাওয়াট, সেখানে তারা পাচ্ছে ১১/১২ মেগাওয়াট। অপর দিকে জাতীয় গ্রিড থেকে চুয়াডাঙ্গার প্রতিদিনের চাহিদা প্রায় ৭২/৭৩ মেগাওয়াট, কিন্তু বর্তমান বাস্তবতায় সরবরাহের ক্ষমতা মাত্র ৬৫ মেগাওয়াট,যা জরুরি ভিত্তিতে উন্নয়ন করা প্রয়োজন।
সংশ্লিষ্টরা আরো জানান- বর্তমানে মানুষের প্রতিদিনই বিদ্যুতের বহুবিধ চাহিদা বাড়ছে। সেই তুলনায় যে বিদ্যুত পাওয়া যাচ্ছে তা বিতরণ করতে গিয়ে প্রতিনিয়ত বিব্রতকর অবস্থায় পড়তে হচ্ছে। সে ক্ষেত্রে ভিআইপি ফিডার, শহর এলাকা, শিল্প কলকারখানা,কৃষি বিভিন্ন বিষয় অগ্রাধিকার দিতে গিয়ে গ্রামাঞ্চলের অবস্থা একেবারেই নাজুক অবস্থায় পৌঁছেচে। এখন বিদ্যুৎ কর্মীরা সদা ভয়ে ভয়ে থাকে কখন জানি গণরোষের শিকার হয়।
চুয়াডাঙ্গায় মুলতঃ বিদ্যুত সরবরাহ করা হয় ভেড়ামারা এবং খুলনা পয়েন্ট থেকে। এর মধ্যে ভৈরব অংশে টাওয়ার ভেঙ্গে পড়ার কারণে একটি লাইন বন্ধ থাকায় অপর একটি লাইন দিয়ে সীমিত আকারে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হচ্ছে। এই লাইনটিতে কোন কারণে ত্রুটি দেখা দিলে পুরা চুয়াডাঙ্গা-মেহেরপুরকে অন্ধকারে পড়তে হবে। তাই জরুরি ভিত্তিতে বিকল্প লাইনটি চালু করা গেলে চুয়াডাঙ্গার বিদ্যুত ব্যবস্থার উন্নতি হবে বলে সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলীরা মনে করছেন।