বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪
Online Edition

রুশ সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে ডেমোক্রেটদের তোপের মুখে কুশনার

২৯ মে, এবিসি, রয়টার্স, সিএনএন : প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সময় রাশিয়ার সঙ্গে জামাতা জ্যারেড কুশনারের সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ প্রত্যাখান করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। যদিও এই অভিযোগকে ‘মারাত্মক’ বলে অভিহিত করে কুশনারকে শুনানির মুখোমুখি এবং তার সর্বো”চ নিরাপত্তা ছাড়পত্র পর্যালোচনার দাবি করেছেন ডেমোক্রেট সিনেটররা।
ট্রাম্পের প্রথম বৈদেশিক সফররত অবস্থায় মার্কিন গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়, গোপন যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে ওয়াশিংটনে রুশ রাষ্ট্রদূত সের্গেই কিসলাকের সঙ্গে অন্তত ৩ বার গোপনে যোগাযোগ করেছিলেন কুশনার।
সফর শেষে দেশে ফিরে রোববার টুইটে ট্রাম্প বলেন, ‘হোয়াইট হাউজ থেকে যেসব তথ্য ফাঁস হচ্ছে এর বেশির ভাগই ভূয়া খবর ও মিডিয়ার বানানো মিথ্যা কথা। মিডিয়াগুলোতে দেখবেন ‘সূত্র বলেছে’ এবং তারা ওই সূত্রের নাম উল্লেখ করে না, তখনই ধরে নিতে হবে ওই সূত্রগুলোর কোন অস্তিত্ব নেই।
তবে ট্রাম্পের টুইটের পরপরই মার্কিন হোমল্যান্ড সিকিউরিটি সেক্রেটারি জন কেলি ওই গোপন যোগাযোগের প্রশংসা করে বলেন, রাশিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ তো একটি ভাল জিনিস। কেলির এই মন্তব্য বলে দেয় গোপন যোগাযোগ থাকতেই পারে। তবে কেলির এই কথা ট্রাম্পের টুইটের সঙ্গে সাংঘর্ষিক।
এছাড়া এক বিবৃতিতে ট্রাম্প বলেছেন, ‘জ্যারেড দেশের জন্য মহান কাজ করছে। তার ওপর আমার পুরো আস্থা আছে। সবাই তাকে সম্মান করে এবং সে এমন একটি বিষয় নিয়ে কাজ করছে, যা আমাদের দেশের হাজার কোটি ডলার বাঁচাবে। এর বাইরে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে সে খুব ভাল মানুষ।’
এদিকে কুশনারের রুশ সংশ্লিষ্টতার খবর প্রকাশ হওয়ার পর উত্তেজনা চলছে মার্কিন কংগ্রেসে। সোমবার হাউস ইন্টেলিজেন্স কমিটির সদস্য ডেমোক্রেট সিনেটর অ্যাডাম স্কিফ বলেন, ‘২০১৬ সালের নির্বাচনে ট্রাম্পের ট্রানজিশন টিমের রাশিয়ার সঙ্গে গোপন যোগাযোগের বিষয়টি অবশ্যই অনেক গুরুত্বপূর্ণ।’ কুশনারের সঙ্গে রুশ সংশ্লিষ্টতা নিয়ে শুনানির প্রস্তাব দেন তিনি।
এ সময় অনেক ডেমোক্রেট সদস্য কুশনারের সর্বো”চ জাতীয় নিরাপত্তা ছাড়পত্র পর্যালোচনার প্রস্তাব দেন। স্কিফ বলেন, এই অবস্থায় তার নিরাপত্তা ছাড়পত্র সুবিধা ব্যবহারের কোন সুযোগ নেই।
পররাষ্ট্র বিষয়ক কমিটির সদস্য সিনেটর কোরি বোকার এই অভিযোগকে ‘মারাত্মক’ বলে অভিহিত করে অতি দ্রুত তদন্তের আহ্বান জানান।
উল্লেখ্য, ট্রাম্পের প্রেসিডেন্সির ১০০ দিন অতিবাহিত হওয়ার আগে ও দায়িত্ব গ্রহণের ১ মাসের মধ্যে রুশ সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে পদত্যাগে বাধ্য হন ট্রাম্প প্রশাসনের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইকেল ফ্লিন। যুক্তরাষ্ট্রে রুশ রাষ্ট্রদূত সের্গেই কিসলিয়াকের সঙ্গে ফ্লিনের গোপন এক বৈঠকে কুশনারও ছিলেন, এই তথ্য জানার পরে তদন্তকারীরা কুশনারের বিষয়টি নতুন করে ভাবতে শুরু করেন।
২৭ মে উচ্চপদস্থ মার্কিন কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে ওয়াশিংটন পোস্টের খবরে বলা হয়, কিসলিয়াক মস্কোয় পাঠানো এক বার্তায় বলেছেন,‘ ২০১৬ সালের ডিসেম্বরে ট্রাম্প টাওয়ারে কুশনারের সঙ্গে তার বৈঠক হয়। এতে উপস্থিত ছিলেন ফ্লিনও। সেখানেই যুক্তরাষ্ট্রের নজরদারি এড়াতে কুশনার গোপন যোগাযোগ চ্যানেল চালুর প্রস্তাব দেন।’
মস্কোয় পাঠানো কিসলিয়াকের এই বার্তা যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দাদের কাছে ধরা পড়ে। এর পরপরই শিরোণাম হন কুশনার। তবে রাশিয়া মাঝেমাঝে যুক্তরাষ্ট্রকে বিভ্রান্ত করার জন্য মিথ্যে বার্তা আদান-প্রদান করে থাকে। কুশনারের রাশিয়া ইস্যু তার অংশ কি না সেটি নিয়েও কথা উঠছে। তবে এই বিষয়ে রাশিয়ার কোন স্বার্থ জড়িত নেই বলে মনে করছেন মার্কিন বিশেষজ্ঞরা।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ