শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪
Online Edition

রাজাপুরে সাংবাদিক হত্যা চেষ্টায় ৭ জনের নামে মামলা

রাজাপুর (ঝালকাঠি) সংবাদদাতা: ঝালকাঠির রাজাপুরের উত্তমপুর গ্রামে দাবিকৃত ৫ লাখ টাকা চাঁদা না পেয়ে ঢাকা থেকে প্রকাশিত সাপ্তাহিক মোকাবেলা পত্রিকার নির্বাহি সম্পাদক রমজান আলী (২৮) ও তার ভাই বরকতকে (২৬) হত্যার উদ্দেশ্যে মাথায় মারাত্মকভাবে কুপিয়ে জখমের ঘটনায় ইউপি মেম্বর মনিরসহ ৭ জনের নামে মামলা হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার রাতে রমজানের ছোট ভাই আরিফ হাওলাদার চাঁদাদাবি ও দুই ভাইকে কুপিয়ে হত্যার চেষ্টা করে টাকা ও সোনার চেইন লুটের অভিযোগে রাজাপুর থানায় মামলা (নং-১৬) দায়ের করেছেন। অপরদিকে বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সাংবাদিক রমজান ও তার ভাই বরকতকে সংকটাপন্ন অবস্থায় ঢাকা পিজি হাসপাতালে প্র্রেরণ করা হয়েছে। জমি সংক্রান্ত বিরোধকে কেন্দ্র করে দাবিকৃত চাঁদার ৫ লাখ টাকা না দেয়ায় উত্তমপুর বাজার থেকে তাদের বাড়িতে যাওয়ার পথিমধ্যে উত্তমপুর বাজার সংলগ্ন উত্তর দিকের এলাকায় বুধবার সকালে পথরোধ করে স্থানীয় ইউপি মেম্বর মোঃ মনিরুজ্জামান ওরফে মনির মেম্বর পরিকল্পিতভাবে তার দলবল নিয়ে এ হামলা চালায়। পরে রমজান, তার ভাই বরকতের ওপর হামলা চালিয়ে উল্টো নিজেরা বাঁচতে রাজাপুর থানায় রমজানসহ ৮ জনকে আসামী করে বুধবার সন্ধ্যায় মামলা দায়ের করেছিল। পরে পুলিশ রমজানের ভাইয়ের মামলাও রেকর্ড করে। রমজানের ভাই তার মামলায় উল্লেখ করেছেন. আসামীদের সাথে পারিবারিক বিষয় ও জমিজমা নিয়ে দীর্ঘ দিন ধরে বিরোধ চলিয়া আসিতেছিল। উক্ত বিরোধের জের ধরে আসামীরা বিভিন্ন রকম ক্ষতিসাধনও করেছে এবং সাংবাদিক রমজানের কাছে ৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে আসছিলো। চাঁদার টাকা না দেয়ার জেরে আসামী মনিরুজ্জামান ওরফে মনির মেম্বর, আবুল কাশেম, কবির হোসেন, বশির, আনোয়ার হোসেন ও নুপুর বেগম সাংবাদিক রমজান ও তার ভাইদের হত্যা উদ্দেশ্যে পরিকল্পিতভাবে দা, রামদা, লোহার রড দিয়ে কুপিয়ে ও পিটিয়ে মাথার তালুতে গুরুতর রক্তাক্ত জখম করে।
এসময় ২টি স্বর্ণের চেইনসহ অর্ধলক্ষাধিক টাকা ছিনিয়ে নেয়। পরে স্থানীয়রা তাদের মুমূর্ষু অবস্থায় উদ্ধার করে রাজাপুর স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে গেলে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে বরিশাল শেবাচিমে ভর্তি করলে সেখানে সাংবাদিক রমজানের অবস্থার অবনতি হলে রমজান ও বরকতকে ঢাকা পিজি হাসপাতাল প্রেরণ করেন। ঘটনার পর বুধবার সকালে থেকে বৃহস্পতিবার বিকেল পর্যন্ত রমজান অচেতন রয়েছেন। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই নজরুল ইসলাম জানান, রাতে আসমীদের গ্রেফতারের জন্য এলাকায় অভিযান চালালেও কাউকে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি, মামলা হয়েছে শুনেই সবাই পলাতক রয়েছে। মামলা দায়েরের পর আসামীদের গ্রেফতার না করায় আসামীরা রমজানের পরিবারকে বিভিন্নভাবে হুমকি দিচ্ছে। এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মনিরুজ্জামান ওরফে মনির বড়ইয়া ইউনিয়ন যুবদলের সেক্রেটারি এবং বড়ইয়া ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ডের (চল্লিশ কাহনিয়া) ইউপি সদস্য। বড়ইয়া ইউনিয়ন আ’লীগের এক নেতার শেল্টারে এলাকায় জমিদখল, ইয়াবার ব্যবসা, জুয়া ও চাঁদাবাজিসহ নানা সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের মাধ্যমে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করছে। বড়ইয়া ইউনিয়ন বিএনপির এক নেতা জানান, মনিরুজ্জামান ওরফে মনির এলাকায় বিভিন্ন বিতর্কিত কর্মকান্ড করায় দলীয় ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হচ্ছে, তার অপকর্মের দায়ভার দল নেবে না। এমনকি আ’লীগের লোকজনের সাথে লিয়াজু করে বিএনপির নেতাকর্মীদেরও বিভিন্নভাবে হয়রানি করছে। তার নামে রাজাপুর থানায় গরু চুরিসহ একাধিক মামলা ও সাধারণ ডায়েরি রয়েছে। অভিযুক্ত মনিরুজ্জামান ওরফে মনির মেম্বর অভিযোগ অস্বীকার করে জানান, স্থানীয় প্রতিপক্ষরা তার নামে মিথ্যা অপপ্রচার চালাচ্ছে। এদিকে রমজানসহ তার পরিবারের লোকজনের নামের মামলা প্রত্যাহার, হামলার নিন্দ এবং আসামী গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছেন বিভিন্ন সংগঠন।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ