বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪
Online Edition

কাশ্মীর সঙ্কট সমাধানে চীনের মধ্যস্থতার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান ভারতের

১৪ জুলাই, আনাদোলু নিউজ এজেন্সি : অধিকৃত কাশ্মীর সঙ্কট সমাধানে চীনের মধ্যস্থতার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে ভারত। ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, ‘কাশ্মীর সঙ্কট নয়া দিল্লি ও ইসলামাবাদের মধ্যকার  দ্বিপক্ষীয় ইস্যু এবং এ সঙ্কট সমাধানে ভারত পাকিস্তান ছাড়া অন্য কোন দেশ বা চীনের সাথে আলোচনা করতে রাজি নয়’।
প্রসঙ্গত, ১৯৪৭ সালের স্বাধীনতার পর থেকেই কাশ্মীর ইস্যুটি নিয়ে পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে। এ নিয়ে একাধিকবার সীমান্ত যুদ্ধে জড়িয়ে পড়েছিল প্রতিবেশী দুই দেশ। পাকিস্তান বরাবরই জাতিসংঘের মধ্যস্থতায় এই সঙ্কটের সমাধানে আগ্রহী। তবে ভারত কাশ্মীর ইস্যুটি নিয়ে তৃতীয় পক্ষের সঙ্গে কোন রকম আলোচনার যেতে চায় না। এমনকি জাতিসংঘের মধ্যস্থতাও মানবে না ভারত।
চীন বলেছে, ‘আমরা গঠনমূলক আলোচনার মাধ্যমে ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে চাই। বিশেষ করে বিতর্কিত কাশ্মীর উপত্যকা নিয়ে প্রতিবেশী দুই দেশের মধ্যকার চলমান বিরোধ মিটিয়ে এ অঞ্চলেন শান্তি ও স্থিতিশীলতা আনতে চাই।’  তবে বৃহস্পতিবার ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র চীনের এ প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন।
গোপাল ব্যাগ্লে বলেন, ‘আমরা পাকিস্তানের সঙ্গে কাশ্মীর ইস্যু নিয়ে আলোচন করতে প্রস্তুত, কিন্তু তৃতীয় পক্ষের সাথে কোনো মধ্যস্থতার আলোচনা করবো না’। ‘আমাদের অবস্থান স্পষ্ট। আপনারা জানেন একটি দেশ আন্তঃসীমান্ত সন্ত্রাসকে মদত দিচ্ছে যা এ অঞ্চল এবং সারাবিশ্বের শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্য হুমকি’।
চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র বলেন, ভারত এবং পাকিস্তান গুরুত্বপূর্ণ দক্ষিণ এশীয় দেশ কিন্তু বর্তমান কাশ্মীর পরিস্থিতি নিয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় চিন্তিত’।
চীন এমন সময়ে মন্তব্যটি করেছে যখন চীন ভারতের সিকিম রাজ্যের কাছাকাছি ডোকলাম এলাকায় একটি রাস্তা নির্মাণের পরিকল্পনা করছে কিন্তু ভারত এর তীব্র বিরোধিতা করছে। এদিকে পাকিস্তানের পররাষ্ট্র দপ্তর হতে বলা হয়েছে, পাকিস্তান সংলাপের মাধ্যমে সব সমস্যা সমাধান করতে চায়। পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র নাফিস জাকারিয়া বলেন, ‘জাতিসংঘের প্রধান, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট, চীনা নেতৃবৃন্দ এবং অন্যান্যরা কাশ্মীরের সমস্যা সমাধানের ক্ষেত্রে ভূমিকা পালন করার প্রস্তাব দিয়েছেন।’
কাশ্মীর একটি মুসলিম-সংখ্যাগরিষ্ঠ হিমালয় অঞ্চল যা ভারত ও পাকিস্তান কর্তৃক শাসিত হয় এবং উভয় দেশই সম্পূর্ণ কাশ্মীরকে নিজেদের দাবি করে।
ভারত সম্পূর্ণ জম্মু ও কাশ্মীর উপত্যকাকে তাদের বলে দাবি করে। ২০১০ সালের হিসাব অনুযায়ী, জম্মুর বেশিরভাগ অংশ, কাশ্মীর উপত্যকা, লাদাখ এবং সিয়াচেন হিমবাহ নিয়ে প্রায় ৪৩% অঞ্চল ভারত শাসন করছে। পাকিস্তান এই দাবির বিরোধিতা করে, তারা প্রায় কাশ্মীরের ৩৭% নিয়ন্ত্রণ করে যার মধ্যে আছে আজাদ কাশ্মীর এবং গিলগিট বাল্টিস্থানের উত্তরাঞ্চল।
কাশ্মীরের জনগণ পাকিস্তানে যোগ দেয়ার জন্য জন্য ১৯৪৭ সাল থেকে আজ পর্যন্ত ভারতীয় শাসনের বিরুদ্ধে লড়াই করছে। আর এ লড়াইয়ে ১৯৮৯ সাল থেকে এ পর্যন্ত জম্মু-কাশ্মীরে প্রায় ৭০ হাজারেরও বেশি লোক নিহত তয়েছে।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ