শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪
Online Edition

জনদুর্ভোগ রোধে উপকূলীয় বাঁধ ও ড্রেনেজ বাস্তবায়নের দাবি

রামপাল (বাগেরহাট) : রামপাল উপজেলা সদরে জলাবদ্ধতার চিত্র। ছবিটি রামপাল থানার সামনে থেকে তোলা

মোঃ রেজাউল ইসলাম, রামপাল (বাগেরহাট) থেকে : চলমান বর্ষা মৌসুমে উপকূলীয় উপজেলা বাগেরহাট জেলার রামপাল উপজেলায় ব্যাপক জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। শ্রাবন- ভাদ্র মাসের লাগাতর বৃষ্টির সময়ে এ জলাবদ্ধতার মাত্রা চরম আকার ধারন করলে জলাবদ্ধতাজনিত জনদুর্ভোগের সীমা থাকবেনা বলে আশংকা করছেন এলাকাবাসী। জনসাধারনের এ সীমাহীন দুর্ভোগ রোধে নদী-খাল তীরবর্তী এলাকায় গ্রাম রক্ষা বাঁধ ও টেকসই এবং পর্যাপ্ত ড্রেনেজ ব্যবস্থা বাস্তবায়নের বিকল্প নেই বলে মনে করেন এলাকার সচেতন মহল।
চলতি বর্ষা মৌসুমের প্রথমার্ধেই রামপাল উপজেলা সদরসহ এর পার্শ¦বর্তী রামপাল সদর ইউনিয়নের শ্রীফলতলা, কামরাঙ্গা, ঝনঝনিয়া, উড়াবুনিয়া, কাকড়াবুনিয়া, পেড়ালী ইউনিয়নের সিংগড়বুনিয়া, সিকিরডাঙ্গা, রোমজাইপুর, সাতপুকুরিয়া,কাঁটালী, ভোজপোতিয়া ইউনিয়নের ভোজপোতিয়া, চন্দ্রাখালী, কুমারখালী, বেতকাটা, বাঁশতলী ইউনিয়নের ইসলামাবাদ, চন্ডীতলা, গিলাতলা, কালিগঞ্জ, হুড়কা ইউনিয়নের চাড়াখালী, কাঠামারী, রাজনগর ও বাইনতলা ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় তীব্র বর্ষায় এবং নদী খালের জোয়ারের পানি ঢুকে ব্যাপক জলাবদ্ধতা দেখা দেয়। এতে অধিকাংশ অঞ্চলের বসতবড়ি, ঘর, রাস্তাঘাট, খেত খামার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান,ব্যবসা প্রতিষ্ঠান,হাট বাজার, খেলার মাঠ, কাঁচা পাকা ভবনে ব্যাপক জলাবদ্ধতা দেখা দেয়।  এতে জনসাধারনের ব্যাপক দুর্ভোগ দেখা দেয়। অনেক জায়গায় রান্নার চুল্লীতে পানি উঠে গেছে। খোদ রামপাল সদরের রামপাল মেইন রোড, কলেজ রোড, উপজেলা পরিষদ সংলগ্ন এলাকায়ই ব্যাপক জলাবদ্ধতা দেখা দেয় একটু বৃষ্টি হলেই। সুষ্ঠু ড্রেনেজ ব্যবস্থার অভাবে জমে থাকা পানি বের হতে না পারায় এ জলাবদ্ধতা স্থায়ীরূপ ধারন করে। রামপাল উপজেলা সদরের পার্শ্ববর্তী দক্ষিন শ্রীফলতলার দাবস্থা দারুন শোচনীয় রূপ ধারন করেছে। ভুক্তভোগী এলাকার অনেক জনসাধারণ জানিয়েছেন, মোংলা-ঘষিয়াখালী চ্যানেল সংলগ্ন নদী, খাল সমূহ উন্মুক্ত করণের উদ্যোগ দখলবাজদের অপতৎপরতায় সফল না হওয়ায় জলাবদ্ধতা ও জল¯্রােত নতুন মাত্রা ধারন করেছে। কারণ এসব নদী-খাল দিয়ে জোয়ারের পানি উঠে বসতি এলাকায় পানি উঠছে। নদী-খাল সমূহের বিভিন্ন জায়গায় প্রতিবন্ধকতা থাকার কারণে জোয়ারের পানি ও বৃষ্টির পানি ভাটার সময় নামতে পারছে না। ফলে জলাবদ্ধতার মাত্রা বাড়ছে বৈ কমছে না। এদিকে দিন দিন বসতি এলাকায় লবন পানি ঢুকে গাছপালা মারা যাচ্ছে, বসতবাড়ির পুকুর থেকে মাছ বের হয়ে সাধারণ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
এছাড়া অনেক মিষ্টি পানির পুকুর ও জলাধার যাতে লোকজন গোসলসহ নানা কাজে ব্যবহার করে এমনকি অনেকগুলোর পানি ও পান করে তাতে লবন পানি ঢুকে নষ্ট হয়ে গিয়েছে। এসব পুকুর ও জলাধারে গোসল করে অনেকে নানা রকম চর্ম রোগে আক্রান্ত হচ্ছে বলে জানা গেছে।
জনসাধারনের এই চরম দুর্ভোগ রোধে অবিলম্বে নদী-খাল সন্নিহিত নি¤œ এলাকা সমূহে অবিলম্বে গ্রাম রক্ষা বাঁধসহ টেকসই ড্রেনেজ নির্মান করা অত্যন্ত জরুরী বলে মনে করেন এলাকার সচেতন মহল। এব্যাপারে রামপাল উন্নয়ন সংগ্রাম সমন্বয় কমিটির সভাপতি এ্যাডভোকেট মহিউদ্দিন বলেন, জনসাধারণকে রক্ষা করতে কাল বিলম্ব না করে চলতি অর্থ বছরে পর্যাপ্ত সংখ্যক গ্রাম রক্ষা বাঁধ ও ড্রেনেজ নির্মাণের জন্য অর্থ বরাদ্দ রাখতে হবে। তাছাড়া চ্যানেল সংলগ্ন ৮৩ টি নদী-খাল খননের জন্য ৭শত  ৬ কোট ৪০ লক্ষ টাকার প্রকল্প বাস্তবায়নের সময় পরিকল্পিতভাবে গ্রাম রক্ষা বাঁধ নির্মাণের উদ্যোগ নিলে সরকারি অর্থের সাশ্রয়সহ জনসাধারণের দূর্ভোগ রোধে সহায়ক হবে।
ড্রেনেজ ব্যবস্থা উন্নয়নে অবহেলা চলতে থাকলে সেটা এলাকার লাখ লাখ মানুষের অস্তিত্ব হুমকির মুখে পড়তে পারে।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ