বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪
Online Edition

এক মাসে নিথর ৫ দেহ

 

তোফাজ্জল হোসেন কামাল : প্রযুক্তির কল্যাণ কখনও কখনও অকল্যাণ হয় সেটা টের পেয়েছে বাংলাদেশ। চার বছর আগে ডার্কওয়েব ভিত্তিক আত্মঘাতী যে ভিডিও গেম ‘ব্লু-হোয়েল’ বা নীল তিমি খেলার জন্ম, সেটি এখন এ দেশের তরুণ-তরুণীদের মাঝেও ছড়িয়ে পড়েছে প্রযুক্তির জোয়ারেই। সাম্প্রতিক সময়ে এই প্রাণ সংহারী খেলায় মেতেছে তারা। এ্যাডভেঞ্চার জাতীয় এ খেলায় অংশগ্রহণের মাধ্যমে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে আত্মহত্যার যে সকল ঘটনা ঘটছে তা থেকে রেহাই মেলেনি এ দেশের কিশোর-কিশোরী, তরুণ-তরুণীদের। ফলে তারা ওই গেমের ফাঁদে পড়ে আত্মঘাতী হয়ে উঠছে। নিথর হয়ে পড়ছে তাজা প্রাণ। সম্প্রতি বাংলাদেশেও একাধিক কিশোর-কিশোরীর মৃত্যুর জন্য ব্লু-হোয়েলকে দায়ী করা হচ্ছে। গত এক মাসের ব্যবধানে দেশজুড়ে ছড়িয়ে পড়া এই গেমে আসক্ত হয়ে প্রাণ গেছে ৫ জনের। এ ছাড়া আহত হয়ে হাসপাতালে ঠাঁই হয়েছে অনেক আসক্তের। প্রাণঘাতী হয়ার ঘটনা জানাজানির পর সরকারের তরফ থেকে ওই গেম বন্ধের ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে, পাশাপাশি কড়াকড়ি করা হয়েছে নেটভিত্তিক বিভিন্ন গেমের ওপর ।

সর্বশেষ গত সোমবার রাতে রাজধানীর মিরপুরের কাজীপাড়ায় ফ্যানের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার করা হয় সায়েম দেওয়ান নাম এক কিশোরের লাশ। তার বাম হাতে কথিত ব্লু-হোয়েল গেমে আসক্তদের মতো নীল তিমির ছবি আঁকা ছিল। মৃতের স্বজনদের দাবি, ব্লু-হোয়েলে অংশগ্রহণের কারণে আত্মঘাতী হয়েছে সায়েম। মরণখেলা ব্লু-হোয়েল গেমে আসক্তরা আত্মঘাতী হওয়া ছাড়াও নিজের শরীর কেটে ক্ষত-বিক্ষত করছে। এমনকি নিজের পুরুষাঙ্গ কেটে ফেলছে বলেও অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে। সারা দেশে এ পর্যন্ত কতজন এ মরণখেলায় মোহাবিষ্ট হয়েছে, তার সঠিক পরিসংখ্যান জানা নেই প্রশাসনের। তবে সামাজিক সচেতনতায় ইতোমধ্যে দেশের বিভিন্ন স্থানে বেশ কয়েকজনকে শনাক্তের পর কাউন্সেলিংয়ের আওতায় আনা হয়েছে।

সম্প্রতি রাজধানীর সেন্ট্রাল রোডে অপূর্ব বর্ধন স্বর্ণা নামে এক স্কুলশিক্ষার্থীর আত্মহত্যার ঘটনা ঘটে। সে ব্লু-হোয়েল গেম খেলে আত্মহত্যা করেছেÑ এমন গুঞ্জনের পরপরই এ খেলাটি দেশজুড়ে আলোচনায় আসে। গত এক মাসে শুধু স্বর্ণাই নয়, দেশের বিভিন্ন স্থানে বেশ কয়েকজন ব্লু-হোয়েল গেমে আসক্ত তরুণ-তরুণী, কিশোর-কিশোরীর সন্ধান মিলেছে। মা-বাবা, শিক্ষক, বন্ধু-স্বজনদের সচেতনতায় এ এক মাসে ২৯ জনকে শনাক্ত করে তাদের এ মরণখেলা থেকে ফেরানো হয়েছে বলে জানা গেছে। একই সময়ে পাঁচ কিশোর-কিশোরীর আত্মহত্যার জন্যও দায়ী করা হচ্ছে ব্লু-হোয়েল গেমকে। এর মধ্যে কয়েকজন মারা গেছেন ছাদ থেকে লাফিয়ে পড়ে বা রশি-ওড়নার সাহায্যে গলায় ফাঁস লাগিয়ে।

এদিকে একের পর এক ব্লু- হোয়েল গেমে কিশোর-কিশোরীর আসক্ত হওয়ার খবরে উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়েছে অভিভাবকদের মধ্যে। এ উদ্বেগের মধ্যে একটি রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে উচ্চ আদালতের  ৩ দফা নির্দেশেনা দেয়া হয়েছে । তাতে বলা হয়েছে ব্লু- হোয়েল বা এ জাতীয় ‘আত্মহত্যায় প্ররোচনাদানকারী’ ইন্টারনেটভিত্তিক গেমের গেটওয়ে লিংক ও অ্যাপ্লিকেশন বন্ধ করার কথা। গত ৫ অক্টোবর রাজধানীর হলিক্রস স্কুলের অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী অপূর্বা বর্ধন স্বর্ণার বাবা অ্যাডভোকেট সুব্রত বর্ধনসহ কয়েকজন আইনজীবী হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় এ রিট আবেদন করেন।

ব্লু- হোয়েল গেমে আত্মহত্যার খবর প্রকাশ পেলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল গত সপ্তাহে বিটিআরসিকে বিষয়টি খতিয়ে দেখতে নির্দেশ দেন। এর ধারাবাহিকতায় বিটিআরসি একটি বিজ্ঞপ্তি দেয়। তাতে বলা হয়, ইন্টারনেটে ব্লু- হোয়েল কিংবা এর মতো জীবনবিনাশী কোনো গেমের তথ্য পেলে ২৮৭২ নম্বরে ফোন করে জানাতে।

জানতে চাইলে সায়েমের মৃত্যুর বিষয়ে মিরপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. মিজানুর রহমান জানান, সায়েম ষষ্ঠ শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়া করেছে। মিরপুরে তার বাবার একটি চায়ের দোকান রয়েছে। সেটি চালাত সে। সায়েম যে মোবাইল ফোন ব্যবহার করত, সেটি তার বাবা আর সৎমা ভেঙে ফেলেছিলেন। ফোনের ভাঙা অংশ উদ্ধার করা হয়েছে। ফরেনসিকের মাধ্যমে এটি পরীক্ষা করে দেখা হবে। তিনি আরও বলেন, ছেলেটি ব্লু- হোয়েল গেমসে আসক্ত হয়েছিল বলে সন্দেহের কথা আসছে কারো কারো কথায়। তবে ব্লু- হোয়েলের কারণে ওই কিশোর আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছে কিনা, পূর্ণাঙ্গ তদন্তের আগে তা বলা যাচ্ছে না। এদিকে তদন্তসংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানিয়েছে, তারা প্রমাণ পেয়েছেন সায়েম ইন্টারনেটের মাধ্যমে ‘ব্লু- হোয়েল’ গেম খেলত।

সায়েমের লাশের ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগের প্রভাষক ডা. প্রদীপ বিশ্বাস বলেন, সায়েমের গলায় ফাঁসের মতো কালো দাগ পাওয়া গেছে। এর আগে মৃত অনেকের হাতে ট্যাটু বা বিভিন্ন ধরনের লেখা পাওয়া গেলেও এই প্রথম কারো হাতে তিমি মাছ আঁকা মিলল। ধারণা করা হচ্ছে, ১৫ দিন আগে সুচালো কিছু দিয়ে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে মাছটি আঁকে সে। তিনি জানান, ভিসেরা রিপোর্ট পেলে সায়েমের মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে।

১৬ অক্টোবর রাতে মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার টেকেরহাটে মরণনেশা ব্লু- হোয়েল গেম খেলে কেজিএস পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির এক ছাত্র অসুস্থ হয়ে টেকেরহাটের ইউএস মডেল হাসপাতালে ভর্তি হয়। গেমের ছয়টি ধাপ সম্পন্ন করেছে বলে দাবি করে সে। তার হাতেও তিমি মাছ আঁকা রয়েছে। মানসিকভাবে ভেঙে পড়ায় ওই শিক্ষার্থীকে পর্যাপ্ত চিকিৎসার পাশাপাশি কাউন্সেলিং করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক পিযুষ চন্দ্র মালো। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রাজৈর থানার ওসি জিয়াউল মোর্শেদও।

ব্লু- হোয়েল খেলায় আসক্ত হয়ে হাত-পায়ের ১৩টি স্থান ক্ষত-বিক্ষত করেছেন লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার ধবলসুতি উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির এক ছাত্র। ওই শিক্ষার্থী এক মাস ধরে গেমের ৪১ ধাপ সম্পন্ন করেছে। সম্প্রতি তার আচার-আচরণে পরিবর্তন দেখা দিলে বিষয়টি সবার নজরে আসে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ধবলসুতি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তহিদুল ইসলাম।

গত মঙ্গলবার সকালে বাগেরহাটের চিতলমারীতে ফেরদাউস মোল্লা নামে এক কলেজছাত্রের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ফেরদাউস মোল্লা ব্লু- হোয়েল গেমের শিকার বলে স্থানীয়রা ধারণা করলেও চিতলমারী থানা পুলিশ তদন্তের আগে এ বিষয়ে কিছু জানাতে অপারগতা প্রকাশ করেছে।

ব্লু- হোয়েল গেমের ফাঁদে পড়ে চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলার গুমানমর্দ্দন ইউনিয়নের বিল্লারবাড়ী এলাকায় নিজের লিঙ্গ ও অন্ডকোষ কেটে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন এক আমেরিকা প্রবাসীর ছেলে। গত রোববার রাতে আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে ভর্তি করেন স্বজনরা। ব্ল-ু হোয়েলের বিভিন্ন ধাপে হাত কাটার চিহ্নও রয়েছে তার শরীরে।

চমেক হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ জহিরুল ইসলাম জানান, আহত ওই যুবক চট্টগ্রাম সিটি কলেজের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী। চমেক হাসপাতালের চিকিৎসক জামান আহাম্মদ জানান, এখনো শঙ্কামুক্ত নন ওই যুবক।

এর আগে গত রোববার সকালে গাজীপুরের শ্রীপুরে মেরিডিয়ান স্কুলের ক্লাসরুম থেকে ব্লু- হোয়েল গেমে আসক্ত ষষ্ঠ শ্রেণির এক শিক্ষার্থীকে শনাক্ত করে পরিবারের হাতে তুলে দেয় স্কুল কর্তৃপক্ষ। সে গাজীপুরের দারোগারচালা গ্রামের বাসিন্দা। তার হাতে আঁকা রক্তাক্ত নীল তিমিসদৃশ ছবি দেখে শিক্ষকরা তাকে আটক করে তার পরিবারকে খবর দেন বলে নিশ্চিত করেছেন গাজীপুর মেরিডিয়ান স্কুলের প্রধান শিক্ষক বিল্লাল হোসেন। ওই শিক্ষার্থীর ব্যবহৃত মোবাইল ফোন ঘেঁটে ব্লেড দিয়ে কেটে কেটে তিমির ছবি আঁকার একটি ভিডিও ফুটেজ পাওয়া গেছে ২ মিনিট ১০ সেকেন্ড ব্যাপ্তির।

শ্রীপুর থানার ওসি আসাদুজ্জামান জানান, ওই শিক্ষার্থী ব্লু- হোয়েল গেমে আসক্ত ছিল কিনা তদন্তের পর তা নিশ্চিত হওয়া যাবে।

১৪ অক্টোবর মধ্যরাতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরে ‘ব্লু- হোয়েল’ খেলায় আসক্ত হয়ে আত্মহত্যা করতে যাওয়া ঢাকার মিরপুর শহীদ পুলিশ স্মৃতি কলেজের মেধাবী এক ছাত্রকে নিজ ঘর থেকে উদ্ধার করে পুলিশ। নবীনগর থানার ওসি মো. আসলাম সিকদার জানান, ওই শিক্ষার্থীর শরীরের বিভিন্ন অংশে কাটা দাগ এবং লাল কালি দিয়ে বিভিন্ন লেখা পাওয়া গেছে। তার মোবাইল ফোন তল্লাশি করে ‘ব্লু- হোয়েল’ গেমের অস্তিত্ব পাওয়া না গেলেও গেমটির বিভিন্ন আলামতের স্ক্রিনশট মিলেছে।

‘আমার মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ী নয়’ লেখা চিরকুট পকেটে নিয়ে পুরান ঢাকার সদরঘাট এলাকায় গ্রেটওয়াল শপিং সেন্টার অথবা মল্লিক টাওয়ারের কোনো একটি ভবন থেকে পড়ে আত্মঘাতী হন মো. রাকিব (১৮) নামে এক তরুণ। গত শুক্রবার রাত সোয়া ১০টার দিকে পুরান ঢাকার সদরঘাট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। চিরকুট ছাড়াও তার হাতের কিছু অংশজুড়ে কাটা দাগ দেখে স্থানীয়রা ধারণা করছেন, ব্লু- হোয়েল খেলার জেরেই ছাদ থেকে লাফ দিয়ে আত্মহত্যা করেছে ওই তরুণ। যদিও কোতোয়ালি থানার ওসি এবিএম মশিউর রহমান জানিয়েছেন, ঘটনাটি আত্মহত্যা কিংবা হত্যাকান্ড যা-ই ঘটুক না কেন, এখন পর্যন্ত রাকিবের মৃত্যুর সঙ্গে ব্লু- হোয়েলের কোনো সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়নি।

একই দিন রাতে বরিশাল সদর উপজেলার তালতলী বাজার এলাকায় ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার করা হয় বরিশাল সরকারি মহিলা কলেজের শিক্ষার্থী শ্রাবনী মল্লিকের (১৫) লাশ। স্থানীয়দের ধারণা, ব্লু- হোয়েলের ফাঁদে পড়ে আত্মহত্যা করেছে শ্রাবণী। তবে কাউনিয়া থানার ওসি নুরুল ইসলাম জানিয়েছেন, তদন্তের আগে এ বিষয়ে নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না।

গত মঙ্গলবার রাতে ঢামেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয় মিরপুরের স্থানীয় একটি স্কুলের নবম শ্রেণির এক ছাত্রকে। ওই ছাত্র জানিয়েছে, দেড় মাস আগে ‘ব্লু- হোয়েল’ গেমে ঢুকে পড়ে সে। ধীরে ধীরে অন্ধকারে ঢুকে যাচ্ছে বুঝতে পেরে গেমের ১১তম ধাপে খেলা বন্ধ করে দেয় মিরপুর কাজীপাড়ার বাসিন্দা ১৭ বছর বয়সী ওই কিশোর। অবশেষে গেমটি মোবাইল থেকে মুছতে না পেরে সেটি ভেঙেও ফেলে সে। কিন্তু এতেও স্বস্তি পাচ্ছিল না। একপর্যায়ে আত্মঘাতী হওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। অবশেষে দুই পাতা ঘুমের ওষুধ খায় ওই কিশোর। ঢামেক হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের চিকিৎসক তৌশিকুর রহমান বলেন, দেড় মাস আগে এক ফেসবুক বন্ধুর মাধ্যমে জানতে পেরে ‘ডার্ক ওয়েব’ থেকে ‘ব্লু- হোয়েল’ গেমের লিংক বের করে তা মোবাইল ফোনে ইনস্টল করে ওই কিশোর।

গত বুধবার দুপুরে ছেলেকে নিয়ে নবাবগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন নবম শ্রেণীর ছাত্র রাফিনের (ছদ্মনাম) মা। পরিবারের সঙ্গে ঢাকার নবাবগঞ্জ উপজেলা সদর কলাকোপা ইউনিয়নের শুরগঞ্জ গ্রামে থাকে ১৭ বছরের ওই কিশোর। ওই মায়ের আশঙ্কা, তার সন্তান ব্লু- হোয়েল গেমের শিকার। রাফিন চিকিৎসকদের জানিয়েছে, সে ব্লু- হোয়েল গেমসের প্রথম ধাপ শেষ করেছিল।

গত ১০ অক্টোবর আলোচিত ‘ব্লু- হোয়েল গেম’-এ আসক্ত চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) ইতিহাস বিভাগের প্রথম বর্ষের এক শিক্ষার্থীকে কাউন্সেলিংয়ের জন্য নিজেদের হেফাজতে নেয় পুলিশ। জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (হাটহাজারী সার্কেল) আব্দুল্লাহ আল মাসুম জানান, গত ৫ অক্টোবর রাত ২টার দিকে ফেসবুক ম্যাসেঞ্জারে আসা একটি লিংকের মাধ্যমে কৌতূহলবশত ব্লু- হোয়েল গেমটি ডাউনলোড করে চারটি ধাপ খেলেন ওই শিক্ষার্থী। শুধু চবির ওই শিক্ষার্থীই নন, ব্লু-হোয়েলের বিভিন্ন ধাপ অতিক্রম করা আরও ৪ শিক্ষার্থীর খোঁজ পেয়েছে চবি কর্তৃপক্ষ ও পুলিশ। এ ব্যাপারে তাদের কাছে স্বীকারোক্তিও দিয়েছেন আসক্তরা। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চবির ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার ড. কামরুল হুদা।

গত ১১ অক্টোবর ব্লেড দিয়ে হাত কেটে আঁকা তিমি মাছের একটি ছবি ফেসবুকে পোস্ট করেন টাঙ্গাইলের গোপালপুর উপজেলার ২০ বছর বয়সী এক তরুণ। তিনি উপজেলার আলমনগর বয়ড়াপাড়া গ্রামের এক সৌদিপ্রবাসীর ছেলে। ছবিটি ফেসবুকের মাধ্যমে ওই তরুণের সৌদিপ্রবাসী মামার নজরে এলে পরিবারের সহায়তায় সে যাত্রায় রক্ষা পান তিনি। গত ২০ সেপ্টেম্বর মোবাইল ফোনে ব্লু- হোয়েল অ্যাপসটি ডাউনলোড করেন বলে স্বীকার করেছেন ওই তরুণ।

এ কজন ছাড়া বিভিন্ন স্থান থেকে আরও বেশ কয়েকজন ব্লু- হোয়েল গেমে আশক্ত বলে খবর মিলেছে।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ