পদক জেতা হলো না স্বাগতিক বাংলাদেশ দলের
স্পোর্টস রিপোর্টার: এশিয়ান আরচারী চ্যাম্পিয়নশিপের আয়োজনে মুন্সিয়ানা দেখালেও পদক বঞ্চিত থাকতে হলো স্বাগতিক বাংলাদেশকে। আগের দিন আবুল কাশেম মামুন কোয়ার্টার ফাইনালে বিদায় নিলে স্বাগতিকদের স্বপ্ন দেখাচ্ছিল মহিলা আরচাররা। কম্পাউন্ডেরই মহিলা দলগত ইভেন্টে সেমিফাইনালে ওঠে শুধু চমকই দেখাননি বাংলাদেশের তিন আরচ্যার রোকসানা আক্তার,বন্যা আক্তার ও সুস্মিতা বণিক। পদক জয়ের সম্ভাবনাও জাগিয়েছিল। কিন্তু পারলোনা রোকসানা,বন্যা, সুস্মিতারা।
গতকাল বৃহস্পতিবার বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে গেমসের সমাপনি দিনে সেমিফাইনালে শক্তিশালী ভারতের কাছে হেরে প্রথমে ফাইনালে ওঠার স্বপ্ন ভঙ্গ হয়। এরপর ব্রোঞ্জের লড়াইয়ে আরেক শক্ত প্রতিপক্ষ ইরানের কাছে হেরে এবারের মতো এশিয়ান আরচ্যারি চ্যাম্পিয়নশিপের ইতি টানেন নিশীথ দাস শিষ্যরা।সকালে কোয়ার্টার ফাইনালে চাইনিজ তাইপের মুখোমুখি হয় রোকসানা-বন্যা-সুস্মিতারা। হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ে তাইপেকে ২২৪-২২২ পয়েন্টে হারিয়ে কোয়ার্টার থেকে শেষ চারে পা রাখে বাংলার আরচ্যাররা। এই তাইপের কাছেই এ বছরের শুরুতে থাইল্যান্ডের ব্যাংককে অনুষ্ঠিত এশিয়া কাপ কম্পাউন্ড স্টেজ-২ টুর্নামেন্টে স্বর্ণের লড়াইয়ে হেরেছিল সুস্মিতা-বন্যারা। কাল পুরনো প্রতিপক্ষকে হারিয়ে শুধু প্রতিশোধই নেয়নি, ওঠেছে স্বপ্নের সেমিফাইনালেও।
এশিয়ান আরচ্যারি চ্যাম্পিয়নশিপের যে কোনো ইভেন্টের সেমিফাইনালে ওঠাই বাংলাদেশ আরচ্যারির ইতিহাসে সেরা সাফল্য। কিন্তু সেমিফাইনালে ভারতের বিপক্ষে কোনো প্রতিরোধই গড়তে পারেনি। ভারতের তৃষা দেব, জ্যোতিসু রেখা এবং পারভিনার সমন্বয়ে গড়া কম্পাউন্ড দলটির কাছে ২২৮-২১৩ পয়েন্টের ব্যবধানে হেরে যায় বাংলার প্রতিযোগীরা। ফাইনালে ওঠতে না পেরে স্বর্ণ, রুপা জেতার সম্ভাবনা আগেই শেষ হয়। সুযোগ থাকে তৃতীয় হয়ে ব্রোঞ্জ জেতার। কিন্তু সেই লড়াইয়ে ইরানের প্রতিযোগী বারাবি পারিসা, বাইবোরদি ঘিসা এবং ভরবানির সমন্বয়ে গড়া দলের কাছে ২২৯-২১৭ পয়েন্টে ব্যবধানে হারে বাংলাদেশ। ম্যাচের শুরুটা অবশ্য খারাপ হয়নি। প্রথমপর্বে ৫৮-৫৭ স্কোরে হারে। পরের তিনপর্বে বাংলাদেশ হারে ৫৮-৫১, ৫৮-৫৫ এবং ৫৬-৫৩ পয়েন্টে। মনোসংযোগের অভাব এবং আবহাওয়ার কারণে প্রত্যাশিত ফল পায়নি বাংলাদেশ- এমন কথাই জানান বাংলাদেশের আরচ্যাররা।
অভিজ্ঞতা আর ম্যাচ কম খেলা এ দুইয়ের অভাবেই এশিয়ান আরচ্যারি চ্যাম্পিয়নশিপে স্বাগতিক হয়েও ভালো করতে পারেনি বাংলাদেশ। যদিও এই টুর্নামেন্টে পদক জেতার কথা বলেনি তারা। ভালো খেলাই ছিল বাংলাদেশের লক্ষ্য। সেটা পূরণ হওয়ায় দারুণ খুশি বাংলাদেশ কোচ নিশীথ দাস, ‘ইরান শক্তিশালী দল। তাদের সঙ্গে পেরে ওঠা কঠিনই। তারপরও মেয়েরা যতটুকু চেষ্টা করেছে ভালোই করেছে।
আমাদের ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতা খুবই কম। বেশি বেশি আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলার সুযোগ পেলে আমার দল ভবিষ্যতে আরো ভালো ফল করবে।’ রিকার্ভে ভালো করবে দল বিশেষ করে রোমান সানার ওপর প্রত্যাশা ছিল কোচের। কিন্তু রোমান প্রি- কোয়ার্টার ফাইনালেই দক্ষিণ কোরিয়ার কাছে হেরে যান রোমান। এতে অবশ্য অবাক হননি নিশীথ দাস।
সার্বিক পারফরম্যান্সে সন্তুষ্ট তিনি। খুশি টুর্নামেন্ট আয়োজনে। এ ব্যাপারে নিশীথ দাস বলেন, ‘আমি ফেডারেশনকে ধন্যবাদ দিতে চাই সুন্দর একটা টুর্নামেন্ট তারা আয়োজন করেছে এবং একই সঙ্গে অনুরোধ করব যাতে আমাদের দলকে আরো বেশি সুযোগ-সুবিধা প্রদান করা হয়। আমরা যেন বেশি বেশি আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলার সুযোগ পাই।’