শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪
Online Edition

বিনিয়োগ পরিবেশ

বিনিয়োগ পরিবেশ ইংরেজি হলো Investment Environment. বিনিয়োগ বলতে অর্থনীতিতে মূলধন দ্রব্যের মজুতের পরিমাণ বৃদ্ধি বুঝায়। অর্থাৎ বিনিয়োগ বলতে একটি নির্দিষ্ট সময়ে যন্ত্রপাতি, দালান কোঠা, উৎপাদক প্রতিষ্ঠানের মজুত মাল প্রভৃতি বস্তুগত মূলধন দ্রব্যের মজুতের বৃদ্ধি বুঝায়। ধরা যাক, একটি উৎপাদক প্রতিষ্ঠানে বর্তমানে ৫০ কোটি টাকার যন্ত্রপাতি ইত্যাদি বস্তুগত মূলধন দ্রব্য আছে। প্রতিষ্ঠানটি যদি ১ বছরে বর্তমান মূলধন দ্রব্যের সঙ্গে আরো ১০ কোটি টাকার মূলধন দ্রব্য যোগ করে তাহলে এর মোট মূলধন মজুতের পরিমান হবে ৬০ কোটি টাকা এবং বিনিয়োগ হবে (৬০-৫০) কোটি টাকা = ১০ কোটি টাকা। কীন্সের মতে, “সমাজের প্রকৃত পুঁজি দ্রব্যের বর্তমান মোট পরিমান বৃদ্ধি কিংবা নতুন প্রকৃত পুঁজি দ্রব্য সৃষ্টিকে বিনিয়োগ বলে।”
ব্যক্তিগত বিনিয়োগ এবং সরকারী বিনিয়োগ রাষ্ট্রের জন্য খুবই প্রয়োজনীয় কিন্তু তা নির্ভর করে পরিবেশের উপর। আর পরিবেশ বলতে আমাদের চারপাশে যা আছে এবং যা ঘটছে তাকেই বলে পরিবেশ। বর্তমানে বাংলাদেশের আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভালো নয়। প্রতিদিনই নারী,শিশু,যুবক, বৃদ্ধ খুন হচ্ছে। অপহৃত ও গুম হচ্ছে। ছিনতাই, ডাকাতি, রাহাজানি তো আছেই। ব্যাংক ডাকাতি ও লুটপাট নিত্য দিনের ঘটনা। সংবাদপত্রে খুন, অপহরণ, ফাঁসি, সংঘর্ষের প্রায় প্রতিদিনই শিরোনাম হচ্ছে। এরি মধ্যে প্রতিবেশি রাষ্ট্র মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য হতে প্রায় ১০ লাখ রোহিঙ্গা মুসলমান মগ সেনা ও পুলিশ বাহিনী নামক হিংস্র পশুদের তাড়া খেয়ে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে টেকনাফ ও উখিয়া পার হয়ে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে কক্সবাজারের উপকুল এলাকায় আশ্রয় নিয়েছে এবং এখনো রোহিঙ্গারা আসছে। এদের আগমনে জনবহুল বাংলাদেশের প্রাকৃতিক পরিবেশের উপর বিরূপ প্রভাব পড়া শুরু হয়েছে। তিন মোড়লের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ মদদে মিয়ানমারে রোহিঙ্গা মুসলমানদের বিরুদ্ধে সেই দেশের গণহত্যা সংঘঠিত হয়েছে।
বিদেশী বিনিয়োগ গ্রহণের ব্যাপারে বৈদেশিক রাষ্ট্রের সে যে রাষ্ট্রই হোক না কেন অন্ধ অনুসরণ কিছুতেই বাঞ্চনীয় হতে পারে না। বিদেশী বিনিয়োগ গ্রহণের ব্যাপারে উহার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার প্রতি সজাগ দৃষ্টি রাখা প্রয়োজন। বৈদেশিক মূলধন ও ঋণ গ্রহণ করলে সেই দেশ থেকে টাকা আর মূলধনই আসে না, সেই সঙ্গে ঋণদাতা বৈদেশিক রাষ্ট্রের রাজনৈতিক বন্ধন এবং বাধ্যবাধকতাও গোটা দেশকে গোলামীর নাগপাশে বন্দী করে ফেলে। শুধু রাজনৈতিক গোলামীই নয়, বৈদেশিক সভ্যতা ও সংস্কৃতি নৈতিক দৃষ্টি ভঙ্গী ও মাপকাঠি এবং মতবাদ ও চিন্তাধারার সর্বপ্লাবী সয়ালাব এসে সারা দেশটিকে নিমজ্জিত করে ফেলে।
পরিশেষে বলতে চাই এমন মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশটিতে ইসলামী নৈতিকতা সম্পন্ন নেতৃত্বের মাধ্যমেই রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ও সামাজিক নিরাপত্তা বিধান করা সম্ভব। এহেন দেশী বিদেশী সকল চক্রান্তের মোকাবিলা করার জন্য ঈমানদার ভাই বোনরা এ পথে শ্রম ও অর্থ বিনিয়োগে এগিয়ে আসতে হবে।
এদেশে ইসলামের পথে বিনিয়োগের মাধ্যমে পরিবেশকে বিশ্ব বিনিয়োগের উপযোগী করতে হবে। এর কোনো বিকল্প দেখছি না। সম্পদ বৃদ্ধির জন্যই বিনিয়োগ করা হয়। হাদীস থেকে আমরা বিনিয়োগের উৎসাহ পাই। হযরত সাহল বিন মু’য়ায (রাঃ) হতে বর্ণিত রাসূল (সাঃ) বলেছেন, “আল্লাহর পথে বিনিয়োগের সাথে সাথে যদি নামায, রোযা ও যিকর করা হয় তবে তার বিনিয়োগকৃত সম্পদ সাতশত গুণ বেড়ে যায়। (আবু দাউদ)
-আবু মুনীর

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ