শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪
Online Edition

আজ থেকে আমরণ অনশনে যাচ্ছেন শিক্ষকরা

এমপিওভুক্তির দাবিতে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে নন-এমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের অবস্থান কর্মসূচি গতকালও অব্যাহত ছিল -সংগ্রাম

স্টাফ রিপোর্টার : স্বীকৃতিপ্রাপ্ত সব নন-এমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের এমপিওভুক্তির দাবিতে পঞ্চম দিনের মতো অবস্থান কর্মসূচি চলছে। দাবি আদায়ে খেয়ে না খেয়ে প্রচণ্ড শীতেও আন্দোলন অব্যাহত রেখেছেন শিক্ষকরা। দাবি আদায়ে আজ থেকে আমরণ অনশনে যাবেন তারা।
গতকাল শনিবার সকাল ১০টা থেকে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন শিক্ষকরা। প্রতি দিনের মত আজও শিক্ষক-কর্মচারী ফেডারেশনের ব্যানারে এ অবস্থান কর্মসূচি শুরু করছেন দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আসা শিক্ষকরা অংশ নেন। নন-এমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শিক্ষক-কর্মচারী ফেডারেশনের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অধ্যক্ষ গোলাম মাহমুদুন্নবী ডলারের সভাপতিত্বে অবস্থান কর্মসূচিতে সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ ড. বিনয় ভূষণ রায়সহ জেলা এবং উপজেলার শিক্ষক নেতারা উপস্তিত ছিলেন।
গত ২৬ ডিসেম্বর থেকে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে নন-এমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারী ফেডারেশনের ব্যানারে এ অবস্থান কর্মসূচি শুরু হয়। দাবি আদায় না হলে আগামীকাল থেকে তারা আমরণ অনশন কর্মসূচিতে যাবেন বলে জানিয়েছেন।
নন-এমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক কর্মচারী ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ ড. বিনয় ভূষণ রায় বলেন, গত ২৬ ডিসেম্বর থেকে আমাদের এই অবস্থান কর্মসূচি চলছে। আজ সারা দিন দেখব আশানুরূপ কোনো ফল না এলে আগামীকাল থেকে আমরা অনশন কর্মসূচিতে যাব।
 ফেডারেশনের নেতারা জানান, বিভিন্ন স্তরে বর্তমানে দেশে ৭ হাজারের অধিক শিক্ষ প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির অপেক্ষায় আছে। প্রতিষ্ঠানগুলোতে কর্মরত শিক্ষক-কর্মচারীরা দীর্ঘ ১৫ থেকে ২০ বছর বিনা বেতনে শিক্ষাদান করছেন।
অবস্থান কর্মসূচি থেকে শিক্ষক নেতারা বলেন, তাদের দাবি ন্যায্য হলেও সরকারের পক্ষ থেকে এখনও কোনো আশার বাণী পাননি তারা। তাই দাবি আদায়ে আমারণ অনশনসহ কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন শিক্ষক নেতারা।
 নেতারা বলেন, সারা দেশ থেকে আসা শিক্ষকরা গত পাঁচ দিন ধরে রাজপথে অবস্থান নিলেও সরকারের পক্ষ থেকে কোন সাড়া পাওয়া যায়নি। আর আমরা সাড়া পেলেও রাজপথ ছাড়বো না। কারণ প্রধানমন্ত্রীর মুখের কথা ছাড়া আমরা অন্য কারো কথায় অবস্থান কর্মসূচি ছাড়বো না।
 হিসাব মতে বর্তমানে দেশে ৫ হাজারের অধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান স্বীকৃতিপ্রাপ্ত অবস্থায় আছে, যা এমপিও প্রত্যাশী। এসব প্রতিষ্ঠানে কর্মরত শিক্ষক-কর্মচারীরা ১৫ থেকে ২০ বছর ধরে বিনা বেতনে শিক্ষাদানের পেশায় নিয়োজিত আছেন। সেখানে শিক্ষক-কর্মচারীর সংখ্যা ১ লাখেরও বেশি এবং ২৫ লাখেরও বেশি শিক্ষার্থীদের তারা পাঠদান করে আসছেন।
তারা বলেন, নন-এমপিও এবং এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে একই নিয়ম নীতিতে, একই কারিকুলামে, সিলেবাস ও প্রশ্ন পদ্ধতি একইভাবে অনুসরণ করা হয়। তাদের ও আমাদের নিয়োগ পদ্ধতিতেও কোনো পার্থক্য ছিল না, বর্তমানেও নেই, অথচ আমাদের এমপিও নামক অর্থনৈতিক মুক্তির ছোঁয়া নেই। শিক্ষক নেতারা বলেন, এমপিও আদায়ের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা রাজপথ ছাড়ব না।
শিক্ষক নেতারা আরো বলেন, আমরা এমপিও আদায়ের দাবিতে বারবার রাজপথে বসেছি কিন্তু আজও দাবি আদায় হয়নি। অবহেলা ও বঞ্চনার শিকার হয়ে আমরা আবারো রাজপথ বেছে নিতে বাধ্য হয়েছি।
সরকার আমাদের বিভিন্ন সময় এমপিও করার আশ্বাস দিলেও তাতে কোন কাজ হয়নি। আমাদের কোন বেতন নেই। বিনা বেতনে আমরা শিক্ষাদান করে আসছি। কিন্তু আর কত দিন। আমাদেরও সংসার আছে। আছে পরিবার-পরিজন। তাহলে কেন আমাদের বেতন দেয়া হবে না। সরকার প্রাথমিক শিক্ষাকে বাধ্যতা মূলক করেছে। কিন্তু আমাদেরকে কেন এমপিও করা হচ্ছে না।
তারা আরও বলেন, দাবি আদায়ে আমরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ছেড়ে রাজপথে অবস্থান নিয়েছি। আমরা আজ অসহায় কেন সরকার আমাদের সাথে এরুপ আচরণ করছে আমরা জানি না। আমাদের  দাবি ন্যায্য এ দাবি মানতেই হবে।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ