শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪
Online Edition

এবার ভর্তি পরীক্ষার ফল নিয়ে খুলনায় কোচিং সেন্টারের প্রতারণা!

খুলনা অফিস : খুলনার জিলা ও করোনেশনসহ সরকারি স্কুলগুলোতে ভর্তি পরীক্ষা নিয়ে কোচিং সেন্টারের মালিকরা অভিনব প্রতারণা শুরু করেছেন। ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে সরকারি স্কুলে ভর্তির সুযোগ পাওয়া শিশু শিক্ষার্থীদের ছবি দিয়ে সমগ্র নগরীতে পোস্টার প্যানায় ছেয়ে যাচ্ছে।
স্ব স্ব কোচিং সেন্টার  থেকে ভর্তি সুযোগ পাওয়া শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি নামের তালিকা লম্বা করতে কেউ কেউ ভর্তির সুযোগ পায়নি এমন শিক্ষার্থীর ছবিও ছাপছে। এভাবে সুনাম বাড়াতে এবং অভিভাবকদের আকৃষ্ট করতে প্রতারণার মাধ্যমে এরা নিজেদের ফায়দা লুটছেন।
নগরীর ৪০, শের-এ বাংলা রোড আমতলা (পুরাতন নির্বাচন অফিসের সামনে) সেলিম স্যারের ব্যাচের একটি পোস্টারে এ ধরনের প্রতারণার চিত্র দেখা গেছে। পোস্টারে রয়েছে-খুলনা সরকারি জিলা ও করোনেশন স্কুলে ২০১৮ সালের ৩য় শ্রেণীর ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেয়া ২৭ জন শিশু শিক্ষার্থীর ছবিসহ নাম। পোস্টারের ও ওই ব্যাচের মালিকের ভাষ্যমতে এরা ২৭ জনই উত্তীর্ণ হয়েছে। কিন্তু বিষয়টি নিয়ে একটু ঘাটাঘাটি করতেই বেরিয়ে আসে থলের বিড়াল। সেলিম স্যারের ব্যাচের মালিক মো. সেলিম নিজের কোচিং সেন্টারে উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের তালিকা লম্বা করতে চান্স না পাওয়া শিশুদের ছবি ও নাম ওই পোস্টারে দিয়ে কোমলমতি শিশুদের সাথে প্রতারণা করেছেন।
অনুসন্ধানে দেখা গেছে, সেলিম স্যারের ব্যাচের ওই পোস্টারে বা থেকে ৬ নম্বর ও ডান থেকে ৩ নম্বরে কানিজ ফাতিমা জুঁই নামের একজন শিশু শিক্ষার্থীর ছবি প্রকাশ করা হয়েছে। কিন্তু ওই শিশু ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়নি। কিন্তু কেন ওই শিশুটির ছবি নাম ব্যবহার করেছে কোচিং সেন্টারের মালিক তা জানতে কোচিং সেন্টারটিতে গিয়ে তালাবদ্ধ দেখা গেছে।
শিশুটির বাবা সোনাডাঙ্গাস্থ বসুপাড়া এলাকার বাসিন্দা মো. আবুল কালাম আজাদ জানান, ২০১৬ সালের ডিসেম্বরে রাস্তার ধারের দেয়ালে পোস্টার দেখেই গত জানুয়ারি মাসে আমার মেয়েকে সেলিম স্যারের ব্যাচে ভর্তি করিয়েছি। ২য় শ্রেণীর প্রতি মাসে ৮০০ টাকা বেতন নিতো। ওটাতো কোন স্কুল নয় কোচিং সেন্টার এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সোনার তরী শিশু শিক্ষালয় নামে সেখানে একটি সাইনবোর্ড রয়েছে। তবে শুনেছি দু’টোই সেলিম স্যারের নিয়ন্ত্রণাধীন প্রতিষ্ঠান।
তিনি জানান, গত ১৯ ডিসেম্বর আমার মেয়ে জুঁই রোল নং-৩২০০৭৩৪ ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেয়। পরবর্তিতে রেজাল্টে দেখা গেছে সে উত্তীর্ণ হয়নি। কিন্তু ওই কোচিং সেন্টারের মালিক কেন বা কোন উদ্দেশ্যে উত্তীর্ণদের তালিকার মধ্যে আমার মেয়ের ছবি নাম ব্যবহার করছেন তা বুঝতে পারছিনা।  
ব্যাচের মালিক এস এম সেলিম আহমেদ বলেন, জুঁইয়ের ছবি ও নাম ভুল করে ছাপা হয়েছে। সোনার তরী শিশু শিক্ষালয় ও সেলিম স্যারের ব্যাচ দু’টোই তার প্রতিষ্ঠান দাবি করে তিনি বলেন, এখন শুধু স্কুল আছে ব্যাচ নেই। তাহলে নতুন বছরের পোস্টারে কোন সেলিম স্যারের ব্যাচের নাম ব্যবহার করছেন এ প্রশ্নের জবাব না দিয়ে তিনি নিশ্চুপ থাকেন।
এ ব্যাপারে খুলনা কোচিং পরিচালক এসোসিয়েশনের সভাপতি কেএমএ জলিল বলেন, এ ধরনের কাজ আমরা কেউ আশা করিনা। যে কোচিং সেন্টারের মালিক এ ধরনের কাজ করেছেন তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া উচিত। কারণ কোমল মতি শিশুদের নিয়ে প্রতারণা করা মারাত্মক অপরাধ।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ