মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪
Online Edition

সিলেটের টিলাগড়ে দলীয় প্রতিপক্ষের হাতে আবারো ছাত্রলীগ কর্মী খুন

সিলেট : নিহত ছাত্রলীগ কর্মী তামিম (বামে) ও গ্রেফতারকৃত ছাত্রলীগ ক্যাডার ফাইটার ডায়মন্ড (ডানে)

সিলেট ব্যুরো : সিলেটের মার্ডার পয়েন্ট নামে খ্যাত টিলাগড় পয়েন্টে আওয়ামী লীগ নেতা ও কাউন্সিলর আজাদ-রণজিৎ এর দ্বন্দ্বে আবারো দলীয় প্রতিপক্ষের হাতে তামিম খান নামের ছাত্রলীগকর্মী খুন হয়েছেন। সন্দেহের তীর কাউন্সিলর আজাদের দিকে। গত চারমাসে এই পয়েন্টে ছাত্রলীগের তিনজন কর্মী নির্মমভাবে খুন হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। লোক দেখানো মামলা হলেও এসএমপির শাহপরাণ থানা পুলিশ আজাদের ক্ষমতার দাপটে প্রকৃত আসামীদের গ্রেফতার করছে না বলে অভিযোগ রয়েছে। পক্ষান্তরে কাউন্সিলর আজাদুর রহমান আজাদের আশির্বাদপুষ্ট হওয়ায় খুনিরা নিরাপদে দেশের বাইরেও পাড়ি জমাচ্ছেন।
গত রোববার রাত সাড়ে নয়টায় ছাত্রলীগ কর্মী তানিম খুনের ঘটনায় আওয়ামী লীগ নেতা ও সিটি কাউন্সিলর আজাদুর রহমান আজাদ গ্রুপের ‘ফাইটার' খ্যাত ছাত্রলীগ নেতা জয়নাল আবেদীন ডায়মন্ডকে আটক করেছে পুলিশ। ‘ফাইটার’ ডায়মন্ড জেলা ছাত্রলীগের সাবেক বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক। গতকাল সোমবার ভোরে টিলাগড় এলাকার একটি বাসা থেকে তাকে আটক করা হয় বলে নিশ্চিত করেছেন সিলেট মেট্টোপলিটন পুলিশের শাহপরাণ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আখতার হোসেন। গত রোববার গভীর রাতে আটক তিনজনসহ তানিম খুনের ঘটনায় এ পর্যন্ত ডায়মন্ডসহ চারজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃত অন্যরা হলেন- আওয়ামী লীগের আজাদ গ্রুপের অনুসারী ছাত্রলীগকর্মী রুহেল আহমদ, জাকির আহমদ ও সৈয়দ আবিদ আহমদ। বিকেলে গ্রেফতারকৃতরা শাহপরাণ থানা হেফাজতে ছিল।
এদিকে, গতকাল সকাল সাড়ে ১০টায় সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে নিহত ছাত্রলীগকর্মী তানিমের লাশের ময়নাতদন্ত করা হয় বলে জানিয়েছেন শাহপরাণ থানার ওসি আখতার হোসেন। ময়নাতদন্ত শেষে নিহতের স্বজনদের কাছে হস্তাস্তর করা হয়েছে। 
গত রোববার রাত সাড়ে ৯টার দিকে অভ্যন্তরীণ কোন্দলের জের ধরে টিলাগড় পয়েন্টে প্রতিপক্ষের নেতাকর্মীদের ছুরিকাঘাতে গুরুতর আহত হন তানিম খান। সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। নিহত তানিম সিলেট সরকারি কলেজের বিএ পাস কোর্সের ছাত্র এবং সিলেটের ওসমানীনগর উপজেলার বুরুঙ্গা ইউনিয়নের নিজ বুরুঙ্গা গ্রামের ইসরাইল খানের ছেলে। তিনি শহরতলীর ইসলামপুর এলাকায় একটি মেসে থাকতেন বলে তার সহপাঠিরা জানিয়েছেন। নিহত তানিম জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি হিরণ মাহমুদ নিপুু গ্রুপের কর্মী। অপরদিকে তার উপর হামালকারীরা জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এম রায়হান চৌধুরীর অনুসারী বলে জানা গেছে। রায়হান চৌধুরী কাউন্সিলর আজাদের মদদপুষ্ট। গত ৪ জানুয়ারি ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালনকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগ নেতা রঞ্জিত সরকার ও সিটি কাউন্সিলর আওয়ামী লীগ নেতা আজাদুর রহমান আজাদ গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে তিন কর্মী আহত হন। এ ঘটনার দু’দিন পর কোন্দলেই ছাত্রলীগকর্মী তানিমকে প্রাণ হারাতে হয়েছে বলে দলীয় সূত্রে জানা যায়। উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের ১৬ অক্টোবর টিলাগড় পয়েন্টে রণজিৎ গ্রুপের কর্মী ওমর ফারুক মিয়াদ নির্মমভাবে নিহত হন আজাদ গ্রুপের হামলায়।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ