বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪
Online Edition

টাইগারদের সামনে শিরোপা জয়ের সুযোগ

মোহাম্মদ সুমন বাকী : একেবারেই মোক্ষম সুযোগ। তা শিরোপা জয় করার ক্ষেত্রে। যা সময়ের প্রেক্ষাপটে উঁকি দিয়েছে। সেটা প্রবল সম্ভাবনাকে ঘিরে অতীতের ধারায়। এ অবস্থায় মোক্ষম সুযোগটি উপস্থিত হয়েছে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট (গাংগুটি) ভুবনে। তা শুধুমাত্র বাংলাদেশ দলের বেলায়। যা নতুন করে বলার অপেক্ষা রাখে না। বর্তমানে তিন জাতি ক্রিকেট প্রতিযোগিতার উত্তাপ ছড়িয়েছে সারাদেশে। আলোচনা-সমালোচনা, হৈ-চৈ-এর মাঝে সেটা তুল তুলে নরম শরীরে গরম লাগিয়ে দিবে নিঃসন্দেহে। কারণ এখন বইছে প্রচন্ড শীত। আপন ঠা-া হাওয়া মাতাল হয়ে আছে কয়েকদিন ধরে। এই পরিস্থিতিতে চলতি মাসে মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে গড়িয়েছে তিন জাতি ক্রিকেট টুর্নামেন্ট। এবারের প্রতিযোগিতায় তিনটি দল অংশ নিচ্ছে। তারা হলো সাবেক বিশ্ব চ্যাম্পিয়ান শ্রীলংকা, জিম্বাবুয়ে, স্বাগতিক বাংলাদেশ। এমন অবস্থায় জমজমাট লাড়াই হবে সেই প্রত্যাশা সকলের। কারন বর্তমানে শক্তির বিচারে প্রতিদ্বন্দ্বি দলগুলোর অবস্থান ঊনিশ-বিশ! আগের মতো আকাশ-পাতাল পার্থক্য নেই!! হতে পারে একটি টিম বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন!!! তাতে কি? মাঠে নৈপুণ্যটাই মূখ্য। শক্তির বিচারে ময়দানের লড়াই ভিন্ন বিষয়। সে ধারায় বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন তকমাটি শুধু ইতিহাসের স্বর্নাক্ষরের লেখায় স্থান পায়। এছাড়া আর কিছু নয়।
তবে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন দলকে খাটো করে দেখা হয় না। বরং আলোচনার বিষয়ে ব্যাপকভাবে প্রাধান্য পায়। তাদের করা পূর্বের পারফরম্যান্সকে বিশেষ মর্যাদার সঙ্গেঁ সম্মান দেখানো হয়। বর্তমানে নৈপূন্যের ধারায় শ্রীলংকা ক্রিকেট দলের অবস্থান এমনই। যা স্বীকার করবেন যে কেউ। জিম্বাবুয়ে নাম মাত্র দল। আগের শক্তি হারিয়ে গেছে। ফ্লাওয়ার, হুইটাল যমজ ভাইদের দিন শেষ! সেটা স্বপ্নেও ভাবা যায় না। বিংশ শতাব্দীর শুরুতে একের পর এক বড় প্রতিপক্ষ বধ করার মোক্ষম সময়ে হঠাৎ ধসে পড়ে তারা। শুধুমাত্র রাজনৈতিক কারনে এই পতন তাদের। সে তুলনায় সুপার পজিশনে স্বাগতিক বাংলাদেশ টিম। তা পারফর্মের গুনে। যা আলোকিত করে বিশ্ব ক্রিকেট ভুবনে। সেটা নিউ কামার এবং শক্তিশালী দল হিসেবে। যা করেছেন ক্রীড়াঙ্গনের ক্রিকেট বিশেষজ্ঞরা। এর প্রমান ২০১২ ওয়ানডে এবং ২০১৬ প্রথম টি টুয়েন্টি এশিয়া কাপ। প্রবল প্রতিপক্ষ থাকা সত্তেও যেখানে লাল-সবুজ পতাকা টিম রানার্সআপ হয়ে নজর কাড়ে সারা বিশ্বে। আপন মনে মাশরাফি, তামিম, সাকিব, মুশফিক, মুস্তাফিজ, রিয়াদ,  রুবেল, সাব্বিরদের হাতে ব্যাট-বল নেচেছে ছন্দের তালে তালে। যারা দুর্দান্ত নৈপুণ্য দেখিয়ে একই রেজাল্ট পায় ২০০৯ সালে দেশের মাঠে অনুষ্ঠিত তিন জাতি টুর্নামেন্টে। এমন সু-সময়ে তাদের অবশ্যই লক্ষ্য হওয়া উচিত শিরোপা জয় করা। সেটা দেশের কোটি কোটি স্পোর্টস লাভারের নরম হৃদয়ের প্রত্যাশা। ত্রিদেশীয় প্রতিযোগিতায় তামিম, সাকিব, মাশরাফি, মুশফিক, রিয়াদরা খুবই পরিচিত মুখ। যাদের বিশ্বখ্যাতি রয়েছে ব্যাট-বলের আকর্ষনীয় নৈপুণ্য প্রদর্শন করার সেক্সি ধারাতে। যা বার বার মাঠের কঠিন লড়াইয়ে আলোকিত হয়েছে বীর দর্পে। বাংলাদেশ ক্রিকেট টিম প্রথম ত্রিদেশীয় প্রতিযোগিতায় অংশ নেয় ১৯৯৮ সালে। তখন আকরাম খান, নান্নু বুলবুল, আতাহার আলী, পাইলট, অপি, সাইফুলরা প্রথম রাউন্ডে বাদ পড়ে প্রতিপক্ষ ভারত, পাকিস্তানের কাছে পরাজিত হয়ে।
বঙ্গঁবন্ধু স্টেডিয়ামে গড়ানো আলোড়িত ইন্ডিপেনডেন্ট কাপে। ব্যাট-বলের লড়াইয়ে ব্যর্থতার ষোল কলা পূর্ন করে। হতাশার ধারায় নবীন ও অনভিজ্ঞ দলের তকমা লাগিয়ে। কচি পাতার নরম আকারে সে দৃশ্য ফুটে উঠে ওয়ানডে স্ট্যাটাস পাবার সূচনা লগ্নে। দলের শক্তির বিচারে পারফরম্যান্স হবার কথা যা কড়ায় গন্ডায় হয়েছে তা। ভারত চ্যাম্পিয়ন, পাকিস্তান রানার্সআপ। এর সঙ্গে যোগ হয় বিদায় নামক কথা। নবীন এবং অনভিজ্ঞ টিম বলে বাংলাদেশের বেলায় ঘটে সেটা। এভাবে শুরু হয় ক্রিকেট অঙ্গঁনে পথ চলা। লাল-সবুজ পতাকা টিমের বর্তমান চেহারা একেবারেই আলাদা। প্রতিপক্ষ যে হোক মাঠের প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয় ছাড়া অন্য কিছু ভাবেন না। ব্যাট-বলের আগুনের ফুলকিতে কোটি কোটি সমর্থককে পাইয়ে দিয়েছে আউট, চার, ছক্কা। সাফল্য পাবার ক্ষেত্রে তা ছিলো মূল ভরসা। এই বিষয়ে অভিমত কি রাখবেন আপনারা? সিম ও স্পিন কন্ডিশনে সুপার দল বাংলাদেশ। যা বার বার হোম এ্যাওয়ের দুর্দান্ত লড়াইয়ে পরীক্ষিত হয়েছে। গায়ক আসিফের সাবাশ বাংলাদেশ, সাবাশ বাংলাদেশ গানটি ধাক্কা দেয় আবেগে ঘেরা মনের জোয়ারে। এমন ধারায় মেঘা তারকা অল রাউন্ডার আবিষ্কার। সাকিব, রিয়াদ, মাশরাফি, সাব্বির পারফর্ম প্রদর্শন করার ক্ষেত্রে এক কথায় চমৎকার। উইকেট নেয়া এবং রানের চাকা সচল রাখতে তাদের জুরি নেই বিশ্বের যে কোনো মাঠে। এ ধরনের পরিস্থিতিতে এ্যাটাকিং ব্যাটসম্যান তামিম ইকবাল আতংক হয়ে উঠে। অসহায়ের মতো প্রতিপক্ষ দলের প্লেয়াররা তাকিয়ে দেখে। ফাইনালের আগে ডাবল লেগ (দুই পর্ব) ম্যাচ খেলতে হবে বাংলাদেশকে। তা এই টুর্নামেন্টের ফরম্যাট অনুযায়ী। সে হিসেবে জিম্বাবুয়ের বিরুদ্ধে স্পিন এ্যাটাকটাই অনায়াসে কাজে লাগবে। যা সহজে জয় পাইয়ে দিবে। সেটা এক প্রকার নিশ্চিত।
 কিন্তু সাবেক বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন শ্রীলংকার বিপক্ষে কৌশলটা কি হবে? এর সোজা উত্তর পিচের কন্ডিশন দেখে বাংলাদেশ দল সাজাতে হবে। প্রয়োজনে সিম এবং স্পিন সমান্তরালে রেখে। ভুলে গেলে চলবে না শিরোপা জয়ের মোক্ষম সুযোগ এটাই। তা মনে করছেন তৃনমূল পর্যায়ের সংগঠক এবং দর্শকরা। মিরপুর বুদ্ধিজীবি সংসদ ক্রীড়া চক্রের কর্মকর্তা কৌশিকের মতে, বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়ন হবে। কারণ তাদের পারফর্ম বিশ্বমানের এখন। নারায়ণগঞ্জের উল্লাস সংগঠনের সভাপতি মোহাম্মদ রাকিব বলেন, সাকিব, রিয়াদরা ফাইনাল খেলবে কনফার্ম। তখন প্রতিপক্ষ যদি শ্রীলংকাও হয় ভয় নেই। একটু দেখে খেললেই শিরোপা ঘরে উঠবে। বর্তমানে দারুন ফর্মে আছে তারা। সেটা কাজে লাগিয়ে শ্রীলংকা ও জিম্বাবুয়েকে ঘায়েল করা কোনো ব্যাপার নয়। সংগঠক এবং দর্শকদের প্রত্যাশা অনেক। দেখা যাক শেষ পর্যন্ত কি হয়? উল্লেখ্য, বাংলাদেশ টিম ১৯৯৭ সালে আইসিসি ট্রফি লড়াইয়ে সর্বশেষ চ্যাম্পিয়ন হয়। এরপর বহু প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করলেও রানার্সআপ পজিশন নিয়ে খুশির জোয়ারে ভাসে তিনটিতে।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ