শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪
Online Edition

সারা দেশে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে তিন দিনের ধর্মঘটের ডাক

শিক্ষকদের আমরণ অনশন কর্মসূচি অব্যাহত। ছবিটি গতকাল মঙ্গলবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে থেকে তোলা -সংগ্রাম
স্টাফ রিপোর্টার : ২৩, ২৪ ও ২৫ জানুয়ারি দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ধর্মঘটের ডাক দিয়েছেন জাতীয়করণের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষকরা। বেসরকারি শিক্ষা জাতীয়করণ লিয়াজোঁ ফোরামের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মামুনুর রশিদ এর সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, আপাতত তিন দিনের ধর্মঘটের ডাক দেয়া হয়েছে। দাবি আদায় না হলে আরও কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে। শিক্ষা ব্যবস্থা জাতীয়করণের দাবিতে ১০ জানুয়ারি থেকে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে অবস্থান করেও সরকারের পক্ষ থেকে কোনও ঘোষণা না আসায় ১৫ জানুয়ারি সকাল থেকে আমরণ অনশন শুরু করেন বেসরকারি শিক্ষকরা। অনশনের সাত দিনেও দাবি আদায় না হওয়ায় এই ধর্মঘটের ডাক দিলেন তারা। ঢাকাসহ সারাদেশ থেকে শিক্ষকরা এ কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছেন। বাংলাদেশ বেসরকারি শিক্ষক কর্মচারী ফোরাম, বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি (নজরুল), বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি (শাহ আলম-জসিম), জাতীয় শিক্ষক পরিষদ বাংলাদেশ, বাংলাদেশ শিক্ষক ইউনিয়ন মিলে গঠন করা হয়েছে বেসরকারি শিক্ষা জাতীয়করণ লিয়াজোঁ ফোরাম। এ সংগঠনের দাবি, গত ৫০ বছর ধরে জাতীয়করণের বিষয়টি ঝুলে আছে। শিক্ষার মান উন্নয়নে জাতীয়করণের বিকল্প নেই। শিক্ষকদের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অবস্থান নেয়ার কথা থাকলেও নিরাপত্তাজনিত কারণে সেখানে বসতে দেয়া হয়নি। তাই জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে অবস্থান নিয়েছেন তারা। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত রাজপথেই থাকবেন বলে জানিয়েছেন শিক্ষকরা। এ সময় আন্দোলনরত শিক্ষক নেরতারা জানিয়েছেন, এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠাগুলোকে জাতীয়করণ করলে সরকারের অতিরিক্ত কোন খরচ হবে না। বরং সরকার আর্থিকভাবে লাভবান হবে বলে জানিয়েছেন বেসরকারি শিক্ষা জাতীয়করণ লিয়াজোঁ ফোরামের নেতৃবৃন্দ। মঙ্গলবার নবম দিনের মত এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীদের শিক্ষা জাতীয়করণের একদফা দাবিতে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে আমরণ অনশন করে শিক্ষকরা। শিক্ষক-কর্মচারীদের ছয়টি সংগঠনের জোট ‘বেসরকারি শিক্ষা জাতীয়করণ লিয়াজোঁ ফোরাম’ এর উদ্যোগে এই অনশন চলে। আন্দোলন নিয়ে ফোরামের আহ্বায়ক আব্দুল খালেক জানান, এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠাগুলোকে জাতীয়করণ করতে সরকারের কোন খরচ হবে না। ধরুন, বর্তমানে এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সরকারে চার হাজার কোটি টাকা ব্যয় করছে। এর বিনিময়ে সরকার কোন বেনিফিট পাচ্ছে না। এ সমস্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে যদি জাতীয়করণ করা হয় তাহলে পাঁচ হাজার কোটি টাকা খরচ হবে। এক্ষেত্রে অতিরিক্ত ১ হাজার কোটি টাকা প্রয়োজন হবে সরকারের। জাতীয়করণের পর যদি সরকার স্কুলের ইনকাম (আয়) নিয়ে নেয়। তাহলে সরকারের ১ হাজার কোটি টাকার চেয়ে বেশি আয় হবে। তাই আমরা বলছি, জাতীয়করণ করলে সরকারের অতিরিক্ত কোন খরচ হবে না। তিনি আরো জানান, বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন প্রাথমিক বিদ্যালয়কে জাতীয় করণ করে দিলাম। আগামী দশ বছরের মধ্যে মাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে জাতীয়করণ করা হবে। কিন্তু এখন স্বাধীনতার ৪৭ বছর পার হয়ে গেছে। কিন্তু আমরা আমাদের অধিকার পাইনি। এখনও পর্যন্ত আমরা সরকারের পক্ষ থেকে সুনির্দিষ্ট কোন আশ্বাস পাইনি। শুধু শুনেছি, সংসদে আলোচনা হয়েছে। মাঝে মাঝে শুনা যায়, ১০-২০টা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে জাতীয়করণ করার কথা। কিন্তু আমরা চাই সারাদেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এক যোগে সরকারিকরণ করা হোক। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, দুপুরে রোদের মধ্যে খোলা আকাশের নিচে অবস্থান করছে শিক্ষকরা। রাতে প্রচ-- শীতের মধ্যে শিক্ষক-কর্মচারীরা এই খোলা আকাশের নিচেই রাত যাপন করে আসছেন। অনেকেই অসুস্থ হয়ে পরেছেন। অনেককে সেলাইন দিয়ে রাখা হয়েছে। আন্দোলনকারী শিক্ষক-কর্মচারীর অনেকেই ক্লান্ত। তারা চাচ্ছেন সরকার দ্রুত তাদের দাবি মেনে নিক এবং তাদের কষ্টের অবসান হোক। তবে তারা শারিরিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়লেও মানসিকভাবে অনেক বেশি স্ববল রয়েছেন। তারা বলছেন দাবি আদায় করেই আমরা ঘরে ফিরবো। প্রয়োজনে আমরা আরও কঠোর কর্মসূচি দিয়ে দাবি আদায় করা হবে। আমাদের এ ন্যার্য দাবি সরকারকে মানতেই হবে।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ