শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪
Online Edition

বিশ্ববাসী দেখলো ৩ রঙের সুপার মুন

স্টাফ রিপোর্টার : বিশ্বের অসংখ্য উৎসুক মানুষের পাশাপাশি বাংলাদেশের মানুষ প্রত্যক্ষ করেছে নতুন পূর্ণগ্রাস চন্দ্রগহণ। সারাদেশ থেকে পূর্ণগ্রাস চন্দ্রগ্রহণ দেখা যায়। ঢাকার স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৫টা ৩৭ মিনিটে চাঁদ দিগন্তের উপরে ওঠার পর থেকে শুরু হয়ে সন্ধ্যা ৫টা ৪৮ মিনিটে আংশিক গ্রহণ ও ৬টা ৫১ মিনিটে পূর্ণ চন্দ্রগ্রহণ শুরু হয়। পূর্ণ চন্দ্রগগ্রণের মধ্যবর্তী অংশ ৭টা ২৯ মিনিটে সংঘটিত হয়। পূর্ণ চন্দ্রগগ্রহণ এক ঘণ্টা ১৬ মিনিট স্থায়ী হয়। রাত ১০টা ৮ মিনিটে চন্দ্রগ্রহণের উপচ্ছায়া পর্যায় শেষ হয়। 

দেড়শ বছরের বেশি সময় পর এই ঘটনা হওয়ায় দেশের বিজ্ঞান সংগঠন অনুসন্ধিৎসু চক্র নানা প্রস্তুতি নেয়। রাজধানীর কেন্দ্রীয় ও বৈজ্ঞানিক পর্যবেক্ষণ ক্যাম্পটি অনুষ্ঠিত হয় ঢাকার গ্রিন মডেল টাউন, মান্ডায়। সেখানে হাজার হাজার উৎসুক জনতা ভীড় জমায়। সন্ধ্যা ৫টা ৩৭ মিনিট থেকে শুরু হয়ে রাত ১০ টা পর্যন্ত হাজার হাজার মানুষ বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এই বিরল দৃশ্য অবলোকন করে। 

পূর্ণ চন্দ্রগ্রহণ যথাযথভাবে পর্যবেক্ষণের জন্য ক্যাম্পে ১৪ ইঞ্চি এবং আট ইঞ্চি মিড ক্যাসিগ্রেইন টেলিস্কোপ, ছয় ইঞ্চি ওরিয়ন টেলিস্কোপ ও ফটোমিটার বসানো হয়। এছাড়াও গ্রহণ চলাকালীন সময়ে কেন্দ্রীয় ক্যাম্পে বড় পর্দায় সরাসরি দেখানো হয়। এছাড়াও অনুসন্ধিৎসু চক্রের ফেসবুক পেইজে সরাসরি সম্প্রচার করা হয়।

ঢাকার বাইরে অনুসন্ধিৎসু চক্র রাজশাহী শাখা ও অ্যাস্ট্রোনমি অ্যান্ড সায়েন্স সোসাইটি অব রুয়েট যৌথভাবে রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় খেলার মাঠে, অনুসন্ধিৎসু চক্র পঞ্চগড় শাখা পঞ্চগড় জেলা প্রশাসন আইসিটি বিভাগের সহযোগিতায় পঞ্চগড় সদর সরকারি অডিটোরিয়াম প্রাঙ্গণে ও অনুসন্ধিৎসু চক্র বরিশাল শাখা বরিশাল বিএম কলেজ খেলার মাঠে চন্দ্রগ্রহণ পর্যবেক্ষণ ক্যাম্পের আয়োজন করে।

 প্রসঙ্গত, সর্বশেষ এরকম একই সঙ্গে ‘সুপার ব্লু ব্লাড মুন’ হয়েছিল ১৮৬৬ সালের ৩১শে মার্চ। ফলে প্রায় দেড়শ বছরের বেশি সময় পর আবার পৃথিবীবাসী এরকম ঘটনার সাক্ষী হলো। যদিও জোতির্বিজ্ঞানীরা বলছেন, একই সঙ্গে চন্দ্রগ্রহণ হওয়ায় চাদের রং হয় খানিকটা রক্তিম ধরনের।

সূযের আলো পৃথিবীর বায়ুম-ল ছুঁয়ে খানিকটা ছাদে যায়, সেই আলো আবার পৃথিবীতে আসার পথে অন্যসব রঙ হারিয়ে লাল রঙটি এসে আমাদের চোখে পৌঁছায়। এ কারণে চাঁদটাকে অনেকটা রক্তিম দেখা যায়, যে কারণে এটিকে ডাকা হচ্ছে  ব্লু ব্লাাড ব্লুমুন বলে।’ বলছেন জোতির্বিজ্ঞানী ড. শ্যানন স্কমল। বিজ্ঞানীরা একে বর্ণনা করছেন ‘সুপার ব্লুবাড ব্লু মুন’ বলে। জ্যোতির্বিজ্ঞানের ভাষায় যাকে বলা হয় অস্ট্রোনোমিকাল ট্রাইফ্যাক্টা।

বিশ্বের যেসব দেশ থেকে এটি দেখা যায়, তার মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশও। আরো দেখা যায় এশিয়া, মধ্যপ্রাচ্য, পূর্ব রাশিয়া, যুক্তরাষ্ট্রের কোন কোন স্থান, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড থেকেও।

অনুসন্ধিৎসু চক্রের জোতির্বিজ্ঞান বিভাগের সভাপতি শাহজাহান মৃধা বলছেন, আদি কাল থেকে পূর্ণিমা ও চন্দ্রগ্রহণের প্রতি মানুষের আকর্ষণ রয়েছে। একটা সময়ে এসব বিষয়ে মানুষের মধ্যে নানা ভীতি ও সংস্কার কাজ করতো। এখনো অনেকের মধ্যে এসব সংস্কার আছে। তবে আস্তে আস্তে মানুষের মধ্যে সংস্কার বা ভীতি দূর হয়ে যাচ্ছে। বিশেষ করে তরুণ প্রজন্মের এখন আর এসব নেই বললেই চলে।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ