বুধবার ১৭ এপ্রিল ২০২৪
Online Edition

খালেদা জিয়ার রায়ের দিন মাঠে থাকবে বিএনপি -আলাল

স্টাফ রিপোর্টার : অসৎ উদ্দেশ্যে দায়ের করা দুর্নীতির মামলায় বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে রায়ের ধার্যকৃত দিন আগামী ৮ ফেব্রুয়ারির জন্য সকল প্রস্তুতি গ্রহণ করার জন্য নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল। তিনি বলেন, মানুষের অন্তরকে, বিকেককে, অনুভূতিকে কারাগারে পাঠানো যায় না। হাত-পা চললে, মুখ চললে, সংকল্প চললে, সব কিছুর পিছনে থাকে অনুভূতি। এটাকে শৃঙ্খলিত করা যায় না। ৮ ফেব্রুয়ারিতে কোনো ধরনের রায় দিয়ে একতরফা নির্বাচনের পথকে প্রশস্ত এবং সুন্দর করার কোনো অপ-পরিকল্পনা করা হয়, তাহলে সেটি মোকাবেলা করার জন্য ৮ ফেব্রুয়ারিতে সকল প্রস্তুতি আমাদের গ্রহণ করে রাখতে হবে, যদি রায়ের তারিখ পরিবর্তিত হয়, তাহলে পরের তারিখেও একই কর্মসূচি ঘোষণা করতে হবে এবং এরপর থেকে রাজপথে আমাদেরকে থাকতেই হবে। যতই গ্রেফতার করা হোক।
গতকাল শুক্রবার জাতীয় প্রেসক্লাবে স্বাধীনতা ফোরাম আয়োজিত বিএনপির চেয়ারপারসনের বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা এবং গণগ্রেফতার বন্ধের দাবিতে এক প্রতিবাদী যুব সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
 মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেন, ‘৮, ৯, ১০ কিংবা ২৫, ২৬ তারিখ ব্যাপার না, ব্যাপারটা হচ্ছে কবে অসৎ উদ্দেশ্যে রায় ঘোষণা করে বেগম খালেদা জিয়াকে এই বড় কারাগার থেকে ছোট কারাগারে নেওয়ার ব্যবস্থা করতে যে দিন করতে যাবে, সেই দিনই যার যেখানে দায়িত্ব, কেউ থাকুক বা না থাকুক তাকে সেই দায়িত্ব পালন করতে হবে।
 তিনি আরও বলেন, হিসাবটা অত্যন্ত স্পষ্ট, ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির মতো আরেকটি নির্বাচন করা এই সরকারের পক্ষে সম্ভব নয়, এটা প্রমাণিত। দেশের মধ্যে বিক্ষুব্ধতা, দেশের বাইরে থেকেও অন্তর্জাতিক চাপ রয়েছে। তাই এই নির্বাচনটি করতে হলে ১৪ সালের ৫ জানুয়ারির মতো ভোটারবিহীন নির্বাচন করা সম্ভব না, ক্ষমতায় আসাও সম্ভব নয়। এতো ভালো ভালো কাজকর্ম তারা (বর্তমান সরকার) করেছেন। আর এর পথে বাধা হচ্ছে বিএনপি, বেগম খালেদা জিয়া এবং আমাদের সাহসী নেতাকর্মীরা। এদেরকে বড় কারাগার থেকে ছোট কারাগারে নিতে হবে। এটাই হচ্ছে মূল উদ্দেশ্য।
 সব টাকা থাকার পরও বেগম জিয়ার বিরুদ্ধে মামলা দেওয়া উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মন্তব্য করে বিএনপির এই নেতা বলেন, সম্পূর্ণ অসত্য ও সাজানো, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত দুটি মামলা হচ্ছে জিয়া অর্ফানেজ ট্রাস্ট এবং জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট। জিয়া অর্ফানেজ ট্রাস্টের জমি রয়েছে এর নামে সেখানে সাইনবোর্ড রয়েছে, বগুড়ার এর কার্যক্রম চলছে, যে জমি ক্রয় করা হয়েছে তার পাশে মসজিদ এবং মাদ্রাসাভিত্তিক এতিমদের কাজ চলছে। ব্যাংকের টাকা বৃদ্ধি পেয়ে ৩ গুণের বেশি হয়েছে, তারপরও আত্মসাত মামলা।
 দুদুকের আইনজীবী রাজনৈতিক বক্তব্য দেন দাবি করে আলাল বলেন, মোশাররফ হোসেন কাজল দুদুকের আইনজীবী, তিনি দাঁড়িয়ে সবসময় রাজনৈতিক বক্তব্য দিয়ে বলেন, এতিমের টাকা আত্মসাতের মামলা! অথচ তার বিরুদ্ধে আমরা কোনো ব্যবস্থা নিতে গেলে আদালত গ্রহণ করেন না। মহিউদ্দিন খান আলমগীর ও আবদুল হাই বাচ্চুর নামে মামলা নেই কেন প্রশ্ন করে তিনি বলেন, ‘জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্টের একই ঘটনা। টাকা রয়েছে, ঢাকা শহরের কাকরাইলে জমি কেনা রয়েছে, সেখানে স্থাপনা নির্মাণ করা হয়েছে, সেখানে আর্কিটেক্টারাল ডিজাইনের জন্য কন্সাল্ট্যান্টকে টাকা দেওয়া হয়েছে, সমস্ত খরচের পড়েও মূল অর্থ সেখানে ঠিক মতই রয়েছে। তারপরেও মামলা! এটাই যদি হয়, ফার্মার্স ব্যাংকের এমডি মহিউদ্দিন খান আলমগীর, বাংলাদেশের জনগণের জন্য আন্তর্জাতিকভাবে বরাদ্দ জলবায়ু তহবিলের ৫০০ কোটি টাকা হজম করে ফেললো, সেটা নিয়ে মানলা নেই কেন? বেসিক ব্যাংকের আবদুল হাই বাচ্চু, যার নামে এতোগুলো মামলা, কোটি কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ, তার বিরুদ্ধে মামলা নেই কেন? সোনালী ব্যাংকের টাকা, বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের টাকা, সেগুলো নিয়ে মামলা নেই কেন? কারণ তারা কেউই শেখ হাসিনার রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী নন। এই কারণে তাদের বিরুদ্ধে মামলা নেই। এ কারণে তাদের আশপাশের লোকদেরও গ্রেফতার করা হয় না। আজকে সর্বত্র যে অবস্থা তৈরি করেছে তারা, এর মধ্যে দিয়ে একদিন তারাই এই ফাঁদের মধ্য পড়বে। লক্ষণ তো ইতিমধ্যে শুরু হয়ে গেছে।
স্বাধীনতা ফোরামের সভাপতি আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ বলেন, রায়ের দিন খালেদা জিয়ার জন্য মানুষ রাজপথে দাঁড়িয়ে থাকবে। তিনি আশা প্রকাশ করেন, সরকার বাধা দেবে না। তিনি আরও বলেন, সরকার আতঙ্ক সৃষ্টির জন্য গণগ্রেপ্তার শুরু করেছে। সরকারকে প্রতিহিংসা ও ষড়যন্ত্র বন্ধ করে সুষ্ঠু নির্বাচন দেওয়ার আহ্বান জানান। আবু নাসের বলেন, অবস্থা যেদিকে যাচ্ছে তাতে সামনের পরিস্থিতি সরকার সামাল দিতে পারবে না।
সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির স্বনির্ভর বিষয়ক সম্পাদক শিরিন সুলতানা, নির্বাহী কমিটির সদস্য নিপুণ রায় চৌধুরী, জাসাসের সহ-সভাপতি শাহরিয়ার ইসলাম শায়লা প্রমুখ।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ