ইবিতে অ্যাম্বুলেন্সে হামলায় ভুক্তভুগী শিক্ষার্থী দুই দিন ধরে আটক
ইবি সংবাদদাতা : ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় অ্যাম্বুলেন্সে ডাকাতি হামলায় আহত ভুক্তভুগী আহমেদশাহ মাসুদ নামে এক শিক্ষার্থীকে জিজ্ঞাসাবাদের নামে দুই দিন ধরে আটক রেখেছে পুলিশ। এদিকে আগামী শনিবার উক্ত শিক্ষার্থীর মাস্টার্স চূড়ান্ত পর্বের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। একইসাথে নিয়ে যাওয়া অন্যান্যদের ছেড়ে দিলেও তাকে জিজ্ঞাসাবাদের দোহায় দিয়ে এখন পর্যন্ত আটকে রাখা হয়েছে। গত বুধবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের মাধ্যমে হামলায় আহত ভুক্তভুগীদের শৈলকূপা থানায় পাঠানো হয়। পুলিশের দাবি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের অনুমতি নিয়েই তাকে আটকে রাখা হয়েছে।
জানা যায়, গত ২০ ফেব্রুয়ারি অসুস্থ বান্ধবিকে মাগুরায় রেখে ফেরার পথে মাসুদের চার সহপাঠিসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাম্বুলেন্স শৈলকুপায় থানাধীন বড়দাহ নামকস্থানে ডাকাতদের কবলে পড়ে। এতে ডাকাতদের হামলায় আরবী ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের চার শিক্ষার্থীসহ গাড়িতে থাকা ৬জন আহত হয়। ডাকাতরা তাদের মারধর করে টাকা, মোবাইল, মেয়েদের স্বর্ণালঙ্কারসহ মূল্যবান জিনিসপত্র ছিনিয়ে নেয়। ঘটনার পর আহতরা ক্যাম্পাসে ফিরে ভিসির কাছে বিচার চেয়ে লিখিত আবেদন করে। একই দিন বিভাগের উদ্যোগে আহতদের নিয়ে মানববন্ধন ও সংবাদ সম্মেলন করা হয়। পরে গত বুধবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) প্রক্টর ড. মাহবুবর রহমান মাসুদকে ফোন করে ভুক্তভোগিদের দেখা করতে বলেন। পরে আহত চার শিক্ষার্থীকে প্রক্টর অফিসে আসলে তাদের শৈলকুপা থানায় যাবার নির্দেশ দেন তিনি। পরে অ্যাম্বুলেন্সের ড্রাইভারসহ তারা থানায় গেলে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে মাসুদকে রেখে বাকিদের ছেড়ে দেয় পুলিশ। তিন সহপাঠিকে ছেড়ে দিলেও হামলায় সবচেয়ে বেশি আহত আহমদ মাসুদকে আটক রেখেছে পুলিশ।
এদিকে আগামী শনিবার মাসুদের মাস্টার্সের চূড়ান্ত পর্বের পরীক্ষা রয়েছে। তার পরীক্ষার কথা বলার পরও পুলিশের এমন কাজে হতবাক হয়েছেন তার পরিবারের লোকজন।
মাসুদের মা আকুতি করে বলেন,‘আমার ছেলে ডাকাতদের হাতে মার খেয়েও কেন আটকে থাকবে। আমার ছেলের কি দোষ এখানে? ডাকাতদের মার খাওয়া কি অপরাধ?’
বিভাগের সভাপতি প্রফেস ড. মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘ওরাই আক্রান্ত হয়েছে। প্রকৃত দোষীদের না ধরে মাসুদকে কেন আটক করা হলো? জিজ্ঞাসাবাদ করবে ঠিক আছে। কিন্তু হয়রানিমূলকভাবে তাকেই কেন আটক করা হলো এটা আমার বোধগম্য নয়। আমি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে গতকালই বিষয়টি জানিয়েছি। তারা এখনো তার কোন ব্যবস্থা বা খোঁজ আমাদের দেয়নি।’
শৈলকুপা থানার ওসি আলমগীর হোসেন বলেন, ‘মাসুদকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের অনুমিত নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। তার পরীক্ষার বিষয়ে আমাদের সহানুভূতি রয়েছে।’
বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর প্রফেসর ড. মোঃ মাহবুবর রহমান বলেন, আমি সার্বক্ষণিক তাকে খোঁজ নিচ্ছি। তাকে জিজ্ঞাবাদ শেষে ছেড়ে দেওয়া হবে। তাকে একটি তথ্যের জন্য নজরদারিতে রাখা হয়েছে।’