উস্কানিতে পা না দিয়ে শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের নির্দেশনা
স্টাফ রিপোর্টার : কোনো উস্কানিতে পা না দিয়ে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন চালিয়ে যেতে দলকে নির্দেশনা দিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপার্সন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া। গতকাল বুধবার বিকেলে কারাবন্দী দলের চেয়ারপার্সনের সাথে নীতিনির্ধারণী ফোরামের সিনিয়র নেতাদের সাক্ষাতের পর বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর কারাগারের বাইরে পুলিশি ব্যারিকেডের সামনে সাংবাদিকদের কাছে এই কথা জানান। তিনি বলেন, দেশনেত্রী সুনির্দিষ্টভাবে বলে দিয়েছেন, কারো উস্কানিতে পা না দিয়ে সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন চালিয়ে যাবার জন্য। মির্জা ফখরুল বলেন, ম্যাডাম দেশের সার্বিক অবস্থার খোঁজখবর নেন। একইসাথে চলমান শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে গ্রেফতার ও আহত নেতাকর্মীদের বিষয়েও জানতে চান। তিনি দেশবাসীর কাছে দোয়া কামনা করেছেন।
এক প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, কারাগারে বেগম জিয়া ‘সুস্থ আছেন’ তিনি (খালেদা জিয়া) দেশবাসীকে জানাতে বলেছেন, তিনি অটুট আছেন, তার শরীর ভালো আছে। দেশের জন্য, গণতন্ত্রের জন্য তিনি যেকোনো ত্যাগ স্বীকার করতে প্রস্তুত রয়েছেন। তার সাথে আলাপ করে আমরা এতোটুকু বুঝতে পেরেছি, তার মনোবল অত্যন্ত উঁচু আছে। তিনি সাহসিকতার সঙ্গে প্রতিকুল পরিবেশকে মোকাবিলা করছেন। এই কারারুদ্ধ অবস্থায় তিনি দেশের জন্যই চিন্তা করছেন। সত্য প্রতিষ্ঠিত হবে বলে তিনি মনে করেন।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, আমরা মনে করি যে, সত্য একদিন প্রতিষ্ঠিত হবে। বেআইনিভাবে সম্পূর্ণ মিথ্যা একটি মামলা দিয়ে তাকে যে কারা অন্তরীণ করে রাখা হয়েছে এবং এখন বিভিন্ন কারসাজির মধ্যদিয়ে, ছলচাতুরির মধ্যদিয়ে তারা কারাবাসকে দীর্ঘ করবার চেষ্টা করছে। এর সবকিছুই দূরীভূত হবে বলে আমরা বিশ্বাস করি। আইনি লড়াইয়ের সঙ্গে সঙ্গে আমাদের রাজনৈতিক যে সংগ্রাম, সেই সংগ্রামও চলছে তাকে মুক্ত করা ও গণতন্ত্রকে পূণঃপ্রতিষ্ঠা করবার জন্যে।
একপ্রশ্নের জবাবে বিএনপির মহাসচিব বলেন, দল এখন যৌথ নেতৃত্বে চলছে। দেশনেত্রী কারা অন্তরীনের পর থেকে আমরা একটা যৌথ নেতৃত্বে দল পরিচালনা করছি, আন্দোলন পরিচালনা করছি। আমাদের ভারপ্রাপ্ত যে চেয়ারম্যান রয়েছেন তার সঙ্গে পরামর্শ করেই আমরা সকল সিদ্ধান্ত গ্রহণ করছি। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিবের কাছে দলীয় প্রধানের কাছে সাক্ষাতের জন্য আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এই সাক্ষাতের অনুমতি পেয়েছেন বলে জানান মির্জা ফখরুল। সোয়া তিনটার সময়ে আমরা তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করার সুযোগ পেয়েছি। সাড়ে ৪টায় এই সাক্ষাৎ শেষ হয়।
সূত্র মতে, পুলিশি ব্যারিকেড থেকে পায়ে হেঁটে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুলসহ নেতৃবৃন্দরা কারাগারে প্রবেশ করেন। আবার কারাগার থেকে সাক্ষাতের পর বেরিয়ে এসে পায়ে হেঁটে পুলিশি ব্যারিকেডের কাছে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলে গাড়িতে উঠেন তারা।
এর আগে বিকেল ২টা ৫০ মিনিটে মির্জা ফখরুলের নেতৃত্বে স্থায়ী কমিটির ৭ সদস্য পুরানো ঢাকার নাজিমউদ্দিন সড়কে কেন্দ্রীয় কারাগারে প্রবেশ করেন। এরা হলেন, দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, ব্যারিস্টার জমিরউদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, ড. আবদুল মঈন খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। খালেদা জিয়ার একান্ত সচিব এম বি এম আবদুস সাত্তারও ছিলেন প্রতিনিধি দলে।
গত ৮ মার্চ জিয়া এতিমখানা ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়ার ৫ বছরের সাজা হলে তাকে পুরনো ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়। কারাবাসের একমাসের মাথায় জ্যেষ্ঠ নেতারা দলীয় প্রধানের সাথে সাক্ষাতের সুযোগ পেলেন। এর আগে ছোট ভাই শামীম এস্কান্দর, স্ত্রী কানিজ ফাতিমাসহ পরিবারের সদস্য ও আইনজীবীরা একাধিকবার খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করেছেন।