শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪
Online Edition

জলবায়ু পরিবর্তনে ‘নারীরাই বেশি ক্ষতিগ্রস্ত’

৮ মার্চ, বিবিসি : জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে পুরুষদের চেয়ে নারীরাই বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বলে বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে।

জাতিসংঘের পরিসংখ্যান বলছে, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বাস্তচ্যুত মানুষের ৮০ শতাংশই নারী।

পরিবারের প্রাথমিক যত্নদাতা এবং খাবার ও জ্বালানির প্রাথমিক যোগানদাতার ভূমিকায় থাকার কারণে বন্যা ও খরার সময় নারীরাই বেশি অরক্ষিত হয়ে পড়েন।

জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণে সেন্ট্রাল আফ্রিকার চাদ হ্রদের আয়তন ৯০ শতাংশ হ্রাস পাওয়ার পর ওই অঞ্চলের যাযাবর নৃগোষ্ঠীগুলো ঝুঁকির মুখে পড়ে। হ্রদের তটরেখা সরে যাওয়ার পর নারীদের আরও অনেকটা দূরে হেঁটে গিয়ে পানি সংগ্রহ করতে হতো। 

এসোসিয়েশন অব ইনডিজেনাস ওমেন এন্ড পিপল অব চাদ (এএফপিএকটি) এর সমন্বয়ক হিনদৌ ওউমারৌ ইব্রাহিম বলেন, “শুষ্ক ঋতুতে পুরুষেরা শহরে চলে যায় এবং সমাজের দায়িত্ব নারীদের হাতে ছেড়ে যায়।”

এখন জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে শুষ্ক ঋতু যখন ক্রমেই লম্বা হচ্ছে পরিবারের ভরণপোষণের জন্য নারীদের আরো কঠোর পরিশ্রম করতে হচ্ছে।

 “তারা আরো বেশি অরক্ষিত হয়ে পড়ছে, কারণ এটি খুব পরিশ্রমের কাজ,” বিবিসিকে বলেন ইব্রাহিম।

জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে শুধু প্রত্যন্ত এলাকার নারীরাই ক্ষতির শিকার হচ্ছেন এমন না; বৈশ্বিকভাবেই নারীরা দারিদ্র্যের মুখোমুখি হচ্ছেন এবং আর্থ-সামজিক ক্ষমতায় পুরুষদের থেকে আরো পিছিয়ে পড়ছেন।

২০০৫ সালে হারিকেন ক্যাটারিনার পর যুক্তরাষ্ট্রের লুইজিয়ানার বন্যায় নারীরাই বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। সমুদ্র পৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধিতে নিউ অর্লিন্সের মতো নিম্নভূমিতে অবস্থিত শহরগুলো ঝুঁকির মধ্যে আছে।

রাগেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ওমেন্স এন্ড জেন্ডার স্টাডিজের অধ্যাপক জ্যাকুলিন লিট জানিয়েছেন, নিউ অর্লিন্স শহরটির অর্ধেকের বেশি দরিদ্র পরিবারগুলোর প্রধান নিঃসঙ্গ মায়েরা।

বেঁচে থাকার জন্য এসব পরিবারগুলো কমিউনিটি নেটওয়ার্কগুলোর ওপর নির্ভরশীল ছিল, কিন্তু ক্যাটেরিনার পর বাস্তুচ্যুতির কারণে ওই নেটওয়ার্কগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়, এতে ওইসব নারী ও তাদের বাচ্চারা বড় ধরনের ঝুঁকির মধ্যে পড়ে বলে জানিয়েছেন তিনি।

প্রাকৃতিক এসব দুর্যোগের পর জরুরি আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে নারীদের জন্য যথেষ্ট উপযোগী পরিবেশ পাওয়া যায় না। ক্যাটারিনার পর আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে আশ্রয় নেয়া নারীদের জন্য প্রয়োজনীয় পরিমাণ স্যানিটারি পণ্য যোগাড় করা যায়নি।

প্রাকৃতিক দুর্যোগের পর বাস্তুচ্যুত নারীরা যৌন নির্যাতন ও ধর্ষণের মতো ঘটনারও শিকার হন।

২০০৪ সালের সুনামির পর অক্সফামের প্রতিবেদনে জানা যায়, ইন্দোনেশিয়া, শ্রীলঙ্কা ও ভারতে সুনামির ছোবলে নারীরাই বেশি মারা গেছেন, এতে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোতে পুরুষের গড় সংখ্যা নারীদের তিনগুণ হয়ে যায়।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ