মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪
Online Edition

এই আইন স্বাধীন মত প্রকাশের আন্তরায় -জার্মান রাষ্ট্রদূত

স্টাফ রিপোর্টার : ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের কয়েকটি ধারা নিয়ে উদ্বেগ জানিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ ১১টি দেশ। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন স্বাধীন মত প্রকাশের আন্তরায় হতে পারে। আর এ কারণেই আইনটি বাতিল কিংবা কয়েকটি ধারার সংশোধ চেয়েছেন তারা।
গতকাল রোববার সচিবালয়ে আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের সঙ্গে দেশগুলোর প্রতিনিধিরা বৈঠক করে এ উদ্বেগ জানান। বৈঠক শেষে আইনমন্ত্রী সাংবাদিকদের জানান, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ছাড়াও যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, জার্মানি, সুইডেন, ডেনমার্ক, কানাডা, ফ্রান্স, স্পেন, নরওয়ে ও সুইজারল্যান্ড ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের বিভিন্ন ধারা নিয়ে তাদের উদ্বেগের কথা জানিয়েছে।
সচিবালয়ে আইন মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত বৈঠকটি চলে বেলা ১১টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত। দুই ঘণ্টার বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। এ সময় ১১ দেশের পক্ষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন জার্মানির রাষ্ট্রদূত ড. থমাস প্রিনজ।
আইনমন্ত্রী বলেন, ১১ দেশের রাষ্ট্রদূত তার সঙ্গে বৈঠক করবেন বলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে চিঠি দেওয়া হয়েছিল। সেই বৈঠকটিই আজ অনুষ্ঠিত হলো।
১১ দেশের রাষ্ট্রদূত ও তাদের প্রতিনিধিরা বাংলাদেশের ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বৈঠকে কথা বলেছেন বলে জানান আনিসুল হক। তিনি বলেন, আমরা আলোচনা করেছি, তারা তাদের কথা বলেছেন, আমরা আমাদের কথা বলেছি। আমাদের আলোচনা আরো হবে, আরো কথা হবে।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের কোন বিষয়টি নিয়ে রাষ্ট্রদূতরা কথা বলেছেন, তা জানতে চাইলে আইন মন্ত্রী বলেন, তারা আইনের অনেকগুলো বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন। বিশেষ করে ২১, ২৫ ও ২৮ অনুচ্ছেদ নিয়ে তারা তাদের উদ্বেগের কথা জানিয়েছেন। আমরা ডিজিটাল নিরাপত্তার জন্যই আইনটির প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেছি। তারা তাদের সুপারিশ তুলে ধরেছেন। তাদের বক্তব্য ও সুপারিশগুলো নিয়ে সামনে আলোচনা হবে।
তিনি আরও জানান, উদ্বেগের কথা ১১টি দূতাবাস জানালেও বৈঠকে ৯টি দেশের দূতাবাসের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।
এ সময় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে জার্মানির রাষ্ট্রদূত ড. থমাস প্রিনজ বলেন, আমরা এই ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ব্যাপারে উদ্বিগ্ন। আইনটি স্বাধীন মত প্রকাশের পথে অন্তরায় বলে আমরা মনে করি। বিশেষ করে আইনটিতে জামিন অযোগ্য ধারা রয়েছে। আইনটির অপব্যবহারের সুযোগ রয়েছে। আমরা আমাদের উদ্বেগের কথাগুলো জানিয়েছি।
জার্মান রাষ্ট্রদূত আরো বলেন, আইনটির কারণে সাধারণ মানুষ মত প্রকাশ করতে পারবে না বলেও তারা মনে করেন।
সম্প্রতি জার্মানির একটি গবেষণা সংস্থা বাংলাদেশকে স্বৈরশাসনের দেশ বলে আখ্যা দেওয়ার বিষয়ে কোনো আলোচনা হয়েছে কি না জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ছাড়া অন্য কিছু নিয়ে আলোচনা হয়নি।
 বৈঠকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের অ্যাম্বাসাডর, সুইডেনের রাষ্ট্রদূতের প্রতিনিধি, মার্কিন রাষ্ট্রদূতের প্রতিনিধি, ডেনমার্কের রাষ্ট্রদূতের প্রতিনিধি, কানাডিয়ান হাইকমিশনারের প্রতিনিধি, যুক্তরাজ্যের হাইকমিশনারের প্রতিনিধি, স্পেনের রাষ্ট্রদূতের প্রতিনিধি, নরওয়ের রাষ্ট্রদূতের প্রতিনিধি, সুইজারল্যান্ডের হাইকমিশনারের প্রতিনিধি অংশ নেন। এ ছাড়া উপস্থিত ছিলেন আইন সচিব আবু সালেহ শেখ মোহাম্মদ জহিরুল হক।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ