সিলেটে জোড়া খুনের মোটিভ পেয়েছে পুলিশ
সিলেট ব্যুরো : সিলেট মহানগরীর মিরাবাজারস্থ খারপাড়া এলাকায় একটি পরিবারের মা ও ছেলেকে খুন করেছে সন্ত্রাসীরা। গতকাল রোববার দুপুরে খারপাড়াস্থ বাসা থেকে নিহতদের লাশ উদ্ধার করে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ। পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা সাংবাদিকদের জানিয়েছেন জোড়া খুনের মোটিভ পেয়েছে পুলিশ। তদন্তের স্বার্থে এখনই কোন কিছু বলা যাবে না। পুলিশ ধারণা করছে শুক্রবার রাত অথবা শনিবারে যে কোন সময় খুনীরা ঠান্ডা মাথায় খুন করেছে মা ও ছেলেকে।
নিহতরা হলেন- রোকেয়া বেগম (৪০) ও তার ছেলে রবিউল ইসলাম রোকন (১৮)। এরমধ্যে গলাাকাটা অবস্থায় উদ্ধার করা হয় মা রোকেয়া বেগম (৪০) কে আর ছেলে রোকনকে বালিশ চাপা দিয়ে খুন করা হয়েছে বলে ধারণা করছে পুলিশ। এ সময় জীবিত অবস্থায় এই পরিবারের রাইসা নামের পাঁচ বছর বয়সী এক মেয়েকে উদ্ধার করা হয়েছে।
খুন হওয়া মহিলা রোকেয়া বেগমের ভাই জাকির হোসেন গণমাধ্যমকে জানান- রোকেয়া বেগম তার ছেলে রবিউল ইসলাম রোকন (১৮) এবং মেয়ে রাইসা (৫) কে নিয়ে মিরাবাজারের মিতালী আবাসিক এলাকার ১৫/জে নম্বর বাসাতে গত একবছর ধরে ভাড়া থাকতেন। তাদের সাথে বাসায় একটি কাজের মেয়েও থাকত। গত শুক্রবার পরিবারের সদস্যদের সাথে রোকেয়াদের সর্বশেষ যোগাযোগ হয়। এরপর থেকে তাদের মোবাইল বন্ধ পাওয়া যাচ্ছিল। গতকাল রোববার সকালে তাদের খোঁজ নিতে মিরাবাজারস্থ বাসায় আসেন জাকির হোসেন। বাসায় এসে ভেতর থেকে তিনি তাদের দরজা বন্ধ দেখতে পান। অনেকক্ষণ ডাকাডাকির পরও কেউ দরজা না খোলায় তিনি বাড়ির মালিককে খবর দেন। বাড়ির মালিক ঘটনা শুনে পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ এসে ঘরে প্রবেশ করে তাদের লাশ উদ্ধার করে। এ সময় ঘরের মধ্যে ক্রন্দনরত অবস্থায় পাঁচ বছর বয়সী মেয়েকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। তবে, কাজের মেয়েকে বাসায় পাওয়া যায়নি।
তিনি আরো জানান- মাস খানেক আগে থেকেই রোকেয়া তাকে জানিয়েছিলেন যে, এই বাসায় তার বিভিন্ন ধরনের সমস্যা হচ্ছে। এই বাসা বদলানো লাগবে।
জাকির আরো জানান- রোকেয়ার স্বামী জগন্নাথপুর উপজেলার হেলাল আহমদের সাথে তার বনিবনা হচ্ছিল না। তাই তিনি ছেলে-মেয়েকে নিয়ে আলাদা থাকতেন। আর গত রমজান মাসে হেলাল আহমদ স্ট্রোক করার পর তার পরিবারের সাথে নগরীর জল্লারপাড়ের একটি বাসায় ভাড়া থাকেন।
এদিকে, ঘটনার পর এসএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার পরিতোষ ঘোষ, কোতোয়ালী মডেল থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) গৌছুল হোসেন এবং স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর দিনার খান হাসু ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
এদিকে নগরীর মিরাবাজার খারপাড়া এলাকায় একটি পরিবারের মা ও ছেলেকে খুন করেছে সন্ত্রাসীরা। দু’টি খুনের ঘটনাকে পুলিশ গুরুত্বের সহিত দেখছে।
ঘটনাস্থলে সিলেট এসএমপির এডিশনাল কমিশনার পরিতোষ ঘোষ গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, মা- ছেলেকে পূর্ব শত্রুতার কারণে হত্যা করা হতে পারে। তাদেরকে ছুরিকাঘাতের পাশাপাশি শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে। তিনি জানিয়েছেন- পুলিশ হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচনে সহযোগিতা করবে এমন কিছু মোটিভ পেয়েছে।
এ পুলিশ কর্মকর্তা আরো বলেন, দুর্বৃত্তরা উদ্ধার করা শিশুটিকেও মেরে ফেলতে চেয়েছিল। কিন্তু, ঘটনার সময় সে অজ্ঞান হয়ে পড়ায় হত্যাকারীরা তাকে মৃত ভেবে ফেলে যায়।
অতিরিক্ত কমিশনার পরিতোষ ঘোষ সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে বলেন, হত্যাকারীরা অনেক সময় নিয়ে ঠা-ামাথায় এ হত্যাকা- ঘটিয়েছে। যে কারণে কেউ বিষয়টি আশেপাশের মানুষ বুঝতে পারেননি। গত শুক্রবার রাতের যে কোন সময় হত্যাকা-টি ঘটে থাকতে পারে।
অন্যদিকে খুন হওয়া মহিলা রোকেয়া বেগমের ভাই জাকির হোসেন দৈনিক সংগ্রামকে জানান, রোকেয়া বেগম তার ছেলে রবিউল ইসলাম রোকন (১৮) এবং মেয়ে রাইসাকে (৫) কে নিয়ে মিরাবাজারের মিতালী আবাসিক এলাকার ১৫/জে নম্বর বাসাতে গত একবছর ধরে ভাড়া থাকতেন। তাদের সাথে বাসায় একটি কাজের মেয়েও থাকত। গত শুক্রবার পরিবারের সদস্যদের সাথে রোকেয়াদের সর্বশেষ যোগাযোগ হয়। এরপর থেকে তাদের মোবাইল বন্ধ পাওয়া যাচ্ছিল।
স্থানীয় কাউন্সিলর দিনার খান হাসু জানান, সকালে বাসার মালিক সালমান আমাকে খবর জানান তার বাসাতে মার্ডার হয়েছে বলে ধারণা করছেন। এমন সংবাদ পেয়ে তিনি তাৎক্ষণিক পুলিশকে বিষয়টি অবহিত করেন। পরে পুলিশ আসলে বাসার দরজা খুলে দেখা যায় দু’টি লাশ। লাশগুলো থেকে গন্ধ ছড়াচ্ছে। ধারণা করা হয়েছে দুই তিন দিন আগে তাদের খুন করা হয়েছে।