শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪
Online Edition

টাকা দিতে হলো ৬০ মাদরাসা শিক্ষককে!

চুয়াডাঙ্গা সংবাদদাতা : চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার অফিস ভবনের ৩য় তলায় অবস্থিত প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের তালা ভেঙ্গে রহস্যজনকভাবে দেড় লক্ষাধিক টাকা চুরি হওয়ার অর্ধেক দায় নিতে হলো অবশেষে ৬০ জন নিরীহ মাদরাসা শিক্ষককে। ইবতেদায়ী সমাপনী পরীক্ষা গ্রহণের ৬ মাস পর প্রাপ্য অর্থের অর্ধেক নিয়ে বিষণœ মনে গতকাল তাদেরকে বাড়ি ফিরতে দেখা যায়।

জানাযায়, গত মার্চ মাসের ৬ তারিখ দিনগত রাতের কোন একসময় জীবননগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার অফিস ভবনের ৩য় তলায় কলাপসিবল গেট ভেঙ্গে, সিসি ক্যামেরার নিñিদ্র নিরাপত্তার মধ্যে নৈশ প্রহরী পাহারারত থাকা অবস্থায় দেড় লক্ষাধিক টাকা চুরির ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় থানায় জিডি করা হলে থানা পুলিশ কর্তব্যরত ২ নৈশ প্রহরীকে আটক করলেও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নির্দেশে পুলিশ মামলা ছাড়াই ছেড়ে দেয়। 

জীবননগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. সেলিম রেজা তখন সংবাদ মাধ্যমকে জানিয়েছিলেন- রাতে তার অফিসের তৃতীয় তলায় উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারের কার্যালয়ের সহকারী শিক্ষা অফিসার রশিদুল ইসলামের কক্ষের তালা ভেঙে নগদ ১২ হাজার ৯৮২ , হিসাব সহকারী জান্নাতুল কোবরার কক্ষ থেকে ১ লাখ ১ হাজার ও অফিস সহকারী আব্দুল খালেকের কক্ষ থেকে ৩৮ হাজার ৮৬০ টাকাসহ দেড় লক্ষাধিক টাকা চুরি হয়েছে।

উল্লেখ্য, গত নভেম্বর মাসে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত পরীক্ষায় একই কেন্দ্রে কক্ষ পরীক্ষকের দায়িত্বসহ অন্যান্য দায়িত্ব পালনকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা  তাদের পারিশ্রমিক নিয়ে বাড়ি ফিরলেও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বৈষম্যমূলক আচরণের কারণে পরীক্ষার ৫ মাস পর মাদরাসায় কর্মরত ইবতেদায়ী বিভাগের শিক্ষকদের গত ৭ মার্চ টাকা নিতে আসতে বলা হয়। শিক্ষকরা সকালে এসে শোনেন তাদের টাকা চুরি হয়ে গেছে।

এ বিষয়ে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ মোস্তাফিজুর রহমানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, ৬০ জন মাদরাসা শিক্ষককে তাদের প্রাপ্য অর্থের অর্ধেক করে দেয়া হয়েছে। যেহেতু চুরি করা অর্থ উদ্ধার করা যায়নি তাই অভিযুক্ত নৈশ প্রহরীদের কাছ থেকে কিছু টাকা নিয়ে এই ব্যবস্থা করা হয়েছে। শিক্ষকদের পরিশ্রমের সামান্য অর্থ চুরির দায়ে কেন অর্ধেক হলো? এর কোন সদুত্তর তিনি দিতে পারেননি বরং শিক্ষকদের জন্য তার সহানুভুতি ঝরে পড়লেও টাকা ফেরত দানের কোন প্রতিশ্রুতি ছিল না।

এবিষয়ে দায়িত্বশীল একজন পুলিশ কর্মকর্তা এই প্রতিবেদককে জানান, ইউএনও অফিসে চুরির বিষয়টি ছিল রহস্যজনক। অফিসে সিসি ক্যামেরা থাকায় আমরা সঠিক তদন্ত করে দায়ী ব্যক্তিকে চিহ্নিত করতে পারতাম, কিন্তু ইউএনও সাহেবের নির্দেশে সেই সময় মামলা রেকর্ড করাও সম্ভব হয়নি।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ