শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪
Online Edition

পিজিতে খালেদা জিয়া॥ জনতার ঢল

স্টাফ রিপোর্টার: বিএসএমএমইউতে স্বাস্থ্য পরীক্ষার পর কারাগারে ফেরত নেয়া হলো বিএনপি চেয়ারপার্সন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে। হাসপাতাল থেকে বের হবার সময় হাত নেড়ে উপস্থিত নেতাকর্মীদের শুভেচ্ছা জানান খালদা জিয়া। এসময় শ্লোগানে শ্লোগানে মুখরিত হয়ে উঠে হামসপাতাল প্রাঙ্গণ। দীর্ঘ দুই মাস পর গতকাল শনিবার সকাল সোয়া ১১টার দিকে পুরান ঢাকার নাজিমউদ্দিন সড়কের পুরনো কারাগার থেকে বের করা হয় দেশের জনপ্রিয় এই নেত্রীকে। দলের চেয়ারপার্সনের হাসপাতালে আসার খবরে কারাগার থেকে শাহবাগ পর্যন্ত এই রাস্তায় নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের ঢল নামে। বিশেষ করে শাহবাগে হাসপাতাল এলাকা পরিণত হয় জনসমুদ্রে। যদিও পুলিশ দলের নেতাকর্মীদের ভেতরে প্রবেশ করতে দেয়নি। এদিনও গ্রেফতার থেমে থাকেনি। সেখান থেকে কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক শিমুলসহ ১০ নেতাকর্মীকে পুলিশ আটক করেছে। তবে তাৎক্ষণিকভাবে আটক বাকিদের নাম জানাতে পারেনি পুলিশ। আটকের পর তাদের শাহবাগ থানায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়ছে, সরকার খালদা জিয়াকে চিকিৎসার নামে নাটক করেছে। মূলত তার কোনো চিকিৎসাই করা হয়নি। সবই ছিল সরকারের লোক দেখানো। উল্লেখ্য, গত ৮ ফেব্রুয়ারি কথিত জিয়া এতিমখানা ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় আদালত পাঁচ বছর কারাদ-ের রায় দেয়ার পর কারাগারেই রয়েছেন বেগম জিয়া। 

গতকাল শনিবার পুলিশের কালো রঙের একটি গাড়িতে করে কড়া নিরাপত্তার মধ্যে কারাগার থেকে বের করা হয় সাবেক তিনবারের প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে। বহরের সামনে-পেছনে ছিল র‌্যাবের পাহারা। সাড়ে ১১টার কিছু সময় পরই বিএসএমএমএইতে পৌঁছালে গাড়ি থেকে নামেন সাদার উপর কালো প্রিন্টের জামদানী শাড়ি পরা খালেদা জিয়া। গাড়ি থেকে নামলে তার হাত ধরেন দু’জন মহিলা কারারক্ষী। সঙ্গে ছিলেন বিএসএমএমইউ হাসপাতালের পরিচালকসহ একাধিক ডাক্তার-নার্স। এ সময় বিএনপি চেয়ারপার্সন স্বাভাবিকভাবেই হেঁটে আসছিলেন। বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সংবাদকর্মীরা ছবি তোলায় ব্যস্ত হয়ে পড়েন। পুলিশ সদস্যরা নিরাপত্তার স্বার্থে ধাক্কা দিয়ে সবাইকে সরিয়ে দিচ্ছিলেন। তখন কেউ একজন কেমন আছেন প্রশ্ন করলে তিনি (খালেদা জিয়া) কিছু না বলে মুচকি হেসে সামনে এগিয়ে যান। গাড়ি  থেকে নেমে হেঁটেই হাসপাতালে যান তিনি। ৭৩ বছর বয়সী খালেদা লিফটেও ওঠেন হেঁটে। এরপর তাকে কেবিন ব্লকের ৫১২ নম্বর কেবিনে রাখা হয়। 

খালেদা জিয়া কেবিনে যাওয়ার পর ডা. ওয়াহিদুর রহমান, এফ এম সিদ্দিকী ও মো. মামুনকে নিয়ে সেখানে যান বিএসএমএমইউর পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবদুল্লাহ আল হারুন। খালেদা জিয়ার চিকিৎসার জন্য যে মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়েছে, এরা সেই বোর্ডের সদস্য নন। ডা. মামুন বিএনপি চেয়ারপার্সনের ব্যক্তিগত চিকিৎসক। বিএসএমএমইউর কর্মকর্তারা জানান, খালেদা জিয়ার এক্সরে ও রক্ত পরীক্ষা করা হয়। প্যাথলজি বিভাগ থেকেও হেঁটে হাসপাতালের রেডিওলজি ও ইমেজিং বিভাগে যান তিনি।

দুই ঘণ্টা পর বেলা দেড়টার দিকে খালেদা জিয়াকে নিয়ে কারাগারের পথে রওনা হয় একই গাড়ি, আগের মতোই পাহারা নিয়ে। পৌনে ২টার দিকে নাজিমউদ্দিন সড়কের কারাগারে ঢোকে গাড়িটি। এসময় বিএনপি নেতাকর্মীদের রাস্তায় দুইপাশে দেখা গেছে। বিএনপি চেয়ারপার্সনকে পাহারা দিয়ে বিএসএমএমইউতে আনার পর ডিএমপির যুগ্ম কমিশনার শেখ নাজমুল আলম সাংবাদিকদের বলেছিলেন, আমাদের দায়িত্ব ছিল উনাকে নিরাপদে হাসপাতালে পৌঁছে দেয়া। তা আমরা করেছি। স্বাস্থ্য পরীক্ষার পর উনাকে পুনরায় কারাগারে পৌঁছে দিতে হবে, আমার কাছে এটুকু তথ্য রয়েছে। বিএসএমএমইউর কোষাধ্যক্ষ আলী আসগর মোড়ল সকালে বলেছিলেন, মেডিকেল বোর্ডের পরামর্শ অনুযায়ী খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হচ্ছে। পরবর্তী পদক্ষেপ মেডিকেল বোর্ডই ঠিক করবে।

খালেদা জিয়া বেরিয়ে যাওয়ার পর বিএসএমএমইউ’র পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল হারুন সাংবাদিকদের বলেন, তার ব্যক্তিগত চিকিৎসকদের উপদেশে একাধিক অংশের এক্সরে হয়েছে। আগামীকাল (রোববার) রিপোর্ট দেওয়া হবে। এর আগেও কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়েছে, সেগুলো এবং আজকের পরীক্ষা মিলিয়ে চিকিৎসার জন্য গঠিত মেডিকেল বোর্ড চিকিৎসার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবে।

খালেদার জন্য যে মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়েছে, যার নেতৃত্বে রয়েছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজের অর্থোপেডিক বিভাগের প্রধান অধ্যাপক মো. শামসুজ্জামান। বোর্ডে সদস্য রয়েছেন ডা. মনসুর হাবীব (নিউরোলজি), টিটু মিয়া (মেডিসিন) ও সোহেলী রহমান (ফিজিক্যাল মেডিসিন)। এই মেডিকেল বোর্ড গত সপ্তাহে কারাগারে বিএনপি চেয়ারপার্সনকে দেখে এসে জানিয়েছিল, তার অসুস্থতা গুরুতর নয়। বিএনপি চেয়ারপার্সনের ব্যক্তিগত চিকিৎসকরা আগে জানিয়েছিলেন, খালেদা জিয়ার হৃদযন্ত্র, চোখ ও হাঁটুর সমস্যা রয়েছে। সেজন্য তাকে নিয়মিত নানা রকম ওষুধ খেতে হয়।

বিএসএমএমইউতে উপস্থিত বিএনপি নেতা মওদুদ আহমদ সাংবাদিকদের বলেছেন, সরকারি এই চিকিৎসায় তাদের কোনো আস্থা নেই। খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবি করেছেন তিনি। তার ভাষ্য, তার নেত্রী মুক্তি পেলে নিজেই নিজের চিকিৎসকদের দিয়ে চিকিৎসা করাতে পারবেন। মওদুদ ছাড়াও আইনজীবী ব্যারিস্টার মাহবুবউদ্দিন খোকন, সানাউল্লাহ মিয়া হাসপাতালে উপস্থিত ছিলেন। দুই মেয়েকে নিয়ে উপস্থিত হন খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে মরহুম আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী শর্মিলা রহমান সিঁথিও।

মওদুদ সাংবাদিকদের বলেন, আমরা জানি না, কেন উনাকে এখানে আনা হয়েছে। আমাদের কিছু জানানো হয়নি। মওদুদ বলেন, আমরা এতদিন ধরে যা বলে আসছিলাম, এখন সরকারের মেডিকেল বোর্ড গঠন করার মাধ্যমে স্পষ্ট হয়েছে যে উনি অসুস্থ। তবে এই মেডিকেল বোর্ড গঠনকে ‘লোক দেখানো’ আখ্যায়িত করে তিনি বলেন, সরকারের চিকিৎসায় আমাদের একেবারেই বিশ্বাস নেই। তাকে একটি নির্জন, পরিত্যক্ত কারাগারে বন্দী রাখা হয়েছে। সেখানে এমনিতেই তিনি অসুস্থ হয়ে পড়বেন। আমরা চাই, তাকে মুক্তি দেয়া হোক। তাহলে তিনি নিজের চিকিৎসা নিজের ডাক্তারদের দিয়ে করিয়ে সুস্থ হবেন বলে আমরা মনে করি। খালেদা জিয়ার জামিন না হওয়ার পেছনেও সরকারের ‘দুরভিসন্ধি’ রয়েছে বলে অভিযোগ করেন সাবেক আইনমন্ত্রী মওদুদ, যদিও ক্ষমতাসীন দলের নেতারা সেই অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে আসছেন।

বিএনপির আরও হাজার হাজার নেতা-কর্মী হাসপাতালে উপস্থিত হয়েছিলেন, কিন্তু তাদের ঢুকতে দেয়নি পুলিশ। হাসপাতালের ফটকে শ্লোগান দেয়ার সময় কয়েকজনকে আটকও করা হয়।

অসুস্থতার খবর প্রকাশ হওয়ার পর থেকে বিএনপি খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক দিয়ে তার চিকিৎসার দাবি জানিয়ে আসছিল। খালেদা জিয়া বন্দী হওয়ার পর তার ব্যক্তিগত চিকিৎসকরা তাকে দেখতে চাইলেও কারা কর্তৃপক্ষের অনুমতি পায়নি। গত ৮ এপ্রিল কারাবন্দী হওয়ার পর খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসকরা তাকে দেখতে চাইলেও কারা কর্তৃপক্ষের অনুমতি পায়নি।

জানা গেছে, কারাবন্দী সাবেক প্রধানমন্ত্রীর জন্য একটি মেডিকেল বোর্ড গঠিত হয়েছিল, সেই বোর্ড কারাগারে দেখে আসার পর তাকে বিএসএমএমইউতে নেওয়া হয়। তবে মেডিকেল বোর্ডে থাকা ঢাকা মেডিকেল কলেজের চার চিকিৎসকের কেউ তাকে বিএসএমএমইউতে দেখেননি। অন্য চারজন চিকিৎসক তাকে দেখেন। হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার হারুন সাংবাদিকদেও প্রশ্নের জবাবে বলেন, উনি (খালেদা জিয়া)  তার পছন্দ অনুযায়ী যেসব চিকিৎসকের উপস্থিতি চেয়েছিলেন, তারা ছিলেন। এই চিকিৎসকরা হলেন খালেদার ব্যক্তিগত চিকিৎসক হদরোগ বিশেষজ্ঞ মোহাম্মদ মামুন, মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা. এফ এম সিদ্দিকী ও নিউরো মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা. ওয়াহিদুর রহমান।

বিএসএমএমইউ পরিচালক বলেন, উনাকে এক্সরে বিভাগে নেওয়ার সময়ে ব্যক্তিগত চিকিৎসকরা তার সঙ্গে ছিলেন। কেবিনে তার চিকিৎসকদের সাথে উনি কথা বলেছেন। সেসময়ে আমিও ছিলাম। মোট চারজন চিকিৎসকের উপস্থিতি চেয়েছিলেন খালেদা জিয়া। তাদের একজন অ্যাপোলো হাসপাতালের ডা. এম আলী হাসপাতাল ফটকে এলেও ঢুকতে পারেননি বলে জানা গেছে। এর আগে খালেদা জিয়ার আইনজীবী ব্যারিস্টার মাহবুবউদ্দিন খোকন ও অ্যাডভোকেট সানাউল্লাহ মিয়া বলেন, ম্যাডামের সঙ্গে দেখা হয়েছে, তবে কথা হয়নি।

৭৩ বছর বয়সী খালেদা জিয়াকে ‘আপাতদৃষ্টিতে ভালো’ দেখেছেন বলে জানান বিএসএমএমইউ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল হারুন। তিনি কি পুরোপুরি সুস্থ আছেন, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে পরিচালক বলেন, তিনি সুস্থ নাই এটা বলা যাবে না। আমরা আপাতদৃষ্টিতে তাকে ভালোই দেখেছি। তিনি হেঁটে এক্স-রে করতে গিয়েছেন। পরীক্ষা-নিরীক্ষার রিপোর্ট আসার পর তার সুস্থতার বিষয়ে মন্তব্য করা যাবে। এক্স-রের রিপোর্ট রোববার কারা কর্তৃপক্ষকে দেয়া হবে। তারা সেই রিপোর্ট বিশেষজ্ঞ মেডিকেল টিমকে পাঠাবেন। ন। তিনি বলেন, উনি (খালেদা জিয়া) কেবিন থেকে হেঁটে রেডিওলজি ও ইমেজিং বিভাগে এসেছেন। আবার হেঁটে গাড়িতে উঠেছেন। আমরা আপাতদৃষ্টিতে দেখেছি, উনি ভালো আছেন। 

বিএসএমএমইউ’র পরিচালকের কাছে সাংবাদিকরা প্রশ্ন করেন, কেবিন ব্লক থেকে এক্স-রে রুম দু মিনিটের হাঁটার পথ। আমরা যতটুকু শুনেছি ও জেনেছি খালেদা জিয়ার হাঁটুতে ব্যথা। এ অবস্থায় একজন রোগীকে কেবিন ব্লক থেকে এক্স-রে রুমে হাটিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এটা আইনের লঙ্ঘন কিনা? এমন প্রশ্নের জবাবে আবদুল্লাহ আল হারুন বলেন, বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা বিবেচনায় তার জন্য এবটির হুইল চেয়ার রাখা হয়েছিল। আমি তাকে হুইল চেয়ারে করে এক্সরে রুমে নিয়ে যাওয়াা কথা বলেছিলাম। কিন্তু উনি রাজি হননি। বরং উনি আমাকে বলেছেন, আমি হেঁটে যেতে পারবো হুইল চেয়ারের প্রয়োজন নেই।

ঢাকার বিএসএমএমইউতে পৌঁছার পর গাড়ি থেকে নেমে হেঁটেই লিফটে ওঠেন খালেদা জিয়াএ ঢাকার বিএসএমএমইউতে পৌঁছার পর গাড়ি থেকে নেমে হেঁটেই লিফটে ওঠেন খালেদা জিয়া তবে পরীক্ষা-নিরীক্ষাগুলো সম্পন্ন হয়ে গেলে তার শারীরিক কোনো অসুবিধা আছে কি না, তা মেডিকেল বোর্ড বলতে পারবে, বলেন হাসপাতালের পরিচালক।

ব্রিগেডিয়ার হারুন বলেন, আমাদের এখানে এসেছিলেন, কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার জন্য। আমরা আগে থেকে সমস্ত কিছু প্রস্তুত করে রেখেছিলাম। রেবিওলজি ও ইমেজিং বিভাগে উনার হাড়ের বিভিন্ন অংশের এক্সরে করা হয়। এই এক্সরে করার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজের মেডিকেল বোর্ড উপদেশ দিয়েছিলেন। রোববার এক্স রে প্রতিবেদন পাওয়ার পর তা কারা কর্তৃপক্ষকে পাঠিয়ে দেওয়া হবে বলে তিনি জানান। খালেদা জিয়া কারাগারে ফেরত যাওয়ার পর বিএসএমএমইউর শহীদ মিলন মিলনায়তনে প্রেস ব্রিফিংয়ে আসা ব্রিগেডিয়ার হারুনের সঙ্গে হাসপাতালের অতিরিক্ত পরিচালক ডা. নাজমুল করীম মানিকও উপস্থিত ছিলেন।

পুরান ঢাকার নাজিমউদ্দিন সড়কের কারাগার থেকে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালে নেয়া হয় খালেদা জিয়াকে। তার সাথে দেখা করতে দুই মেয়েকে নিয়ে সেখানে উপস্থিত হন শর্মিলা। তারা গাড়ি থেকে নেমে কেবিন ব্লকে ঢুকতে চাইলে পুলিশ তাদের আটকে দেয়। এরপর হাসপাতাল প্রাঙ্গণে গাড়ির ভেতরেই কিছুক্ষণ অপেক্ষা করেন তারা। তখন তাদের ঘিরে জটলা করে ছিল জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের একদল নেতা-কর্মী। সেখানে শ্লোগান দেয়ার সময় চার-পাঁচজনকে আটক করে পুলিশ। এর মধ্যে হাসপাতালের পরিচালকের কক্ষে ঢোকেন কোকোর স্ত্রী-সন্তানরা। দেড়টার দিকে খালেদা জিয়া বের হওয়ার আগ পর্যন্ত সেখানেই ছিলেন তারা। জানা গেছে,  পবগম জিয়ার সাথে দেখা হয়নি কোকোর স্ত্রী ও সন্তানদের। পুলিশের দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, কারা কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া কাউকে খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করতে দেয়ার সুযোগ নেই।

বিভিন্ন সময়ে বিএনপি নেতারা দাবি করেছেন, খালেদা জিয়া নির্জন কারাগারে বন্দী অবস্থায় অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। এজন্য তার ব্যক্তিগত চিকিৎসকদের দিয়ে চিকিৎসা সেবা দেয়ার অনুমতিও চেয়েছেন তারা। কিন্তু, এখনঅব্দি সে অনুমতি মেলেনি। শুক্রবার বিকেলে কারাগারে খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। পরে তিনি সাংবাদিকদের জানান, ‘ম্যাডামের স্বাস্থ্য খুব একটা ভালো নয়। তার আর্থরাইটিসের সমস্যা বেশ বেড়ে গেছে। হাঁটতেও কষ্ট হয়। যেটাকে কিছুটা স্নায়ুবিক সমস্যা বলা হয়, সেটাও দেখা দিয়েছে। সত্যিকার অর্থেই তিনি কিছুটা স্বাস্থ্য সমস্যায় পড়েছেন। এ সময় তিনি খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসকদের কারাগারে যাওয়ার অনুমতিও দাবি করেন।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ