শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪
Online Edition

কালো দিবসে কয়েকটি কথা -মোহাম্মদ সাখাওয়াৎ হোসেন ইবনে মঈন চৌধুরী

স্বাধীনতার অর্থ রাষ্ট্রে সকল নাগরিকের ন্যায় বিচার, বাসস্থান, কর্মসংস্থান ও চিকিৎসার নিশ্চয়তা করবে। আর এর কোন একটা থেকে নাগিরকরা বঞ্চিত হলেই শাসক মহলের দৃষ্টিগোচর করা মিডিয়ার অন্যতম দায়িত্ব। আবার অন্য ভাষায় বললে মিডিয়া যতবেশী শাসক মহলের সমালোচনা করার অধিকার সংরক্ষণ করবে শাসকদল ততবেশী নাগরিক অধিকার নিশ্চিত করার মাধ্যমে জনপ্রিয় হয়ে উঠবে। পাশ্চাত্য বিশ্ব মিডিয়াকে রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ হিসাবে বিবেচিত করে থাকে। আবার অনেকে মিডিয়াকে সমাজের দর্পণ হিসাবে বিবেচিত করেন। বিশ্বের যেখানেই সাম্রাজ্যবাদ ও আধিপত্যবাদ চক্র আগ্রাসনের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করেছে সেখানেই পর্যায়ক্রমে মিডিয়ার উপর আক্রমণ অথবা কালো অর্থের মালিক, ভূমিদস্যু কিংবা অশান্তি সৃষ্টিকারীদের মালিকানায় মিডিয়া দেয়া হয়েছে। তারপর নির্বিচারে মিথ্যা প্রচারের মধ্য দিয়ে নাগিরকদের প্রতারিত করার মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় জীবনে বিশৃক্মখলা সৃষ্টি করেছে। ১৯৭৫-এর ১৬ জুন বাংলাদেশে চারটি পত্রিকা সরকারের মুখপাত্র হিসাবে রেখে বাকী সবগুলো বন্ধ করে দেয় শাসক দল। আর সেদিন থেকেই দেশপ্রেমিক সাংবাদিকরা দিনটিকে কালো দিবস হিসাবে উদযাপন করে থাকে। তারপর ১৯৯৬ সালে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসলে লাভজনক প্রতিষ্ঠান না হওয়া দৈনিক বাংলা, টাইমস, বিচিত্রা, আনন্দ বিচিত্র বন্ধ করে দেয়। কিন্তু বাংলাদেশের সিংহভাগ প্রতিষ্ঠান রাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণাধীন থাকায় অলাভজনক হলেও সেগুলো বন্ধ করা হয় না। আবার জনগণ সেখান থেকে সেবার পরিবর্তে হয়রানির শিকার হয়। কিন্তু মিডিয়া মানুষের সর্বশেষ আশ্রয়স্থল হিসাবে সবসময় বিবেচিত তারপরও সেটাই আক্রমণের লক্ষ্যবস্তু-এর রহস্য পরিস্কার। ১/১১ এর পর সিএসবি টিভি চ্যানেল বন্ধ করে। ২০০৯-এ আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে ২০১০-এ এসে চ্যানেল ওয়ান, জুনের প্রথম প্রহর পার হতে না হতেই আমার দেশ-এর ডিক্লারেশন বাতিল ও ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সময়ের সাহসী সন্তান মাহমুদুর রহমানকে প্রতারণার অভিযোগে গ্রেফতার-গুঞ্জন রয়েছে। জনগণের পক্ষে কথা বলে এমন মিডিয়াগুলো পর্যায়ক্রমে আইনের অপপ্রয়োগের মাধ্যমে বন্ধের পরিবেশ সৃষ্টিতে মিথ্যাচার শুরু হয়েছে। এমন অভিযোগ খন্ডন করা দুরূহ হয়ে পড়েছে। দেশের অভিজ্ঞ মহল মন্তব্য করছেন যুক্তফ্রন্টের শাসন আমলে '৯৬ ঐকমত্য সরকার আর ২০০৯ মহাজোট সরকার কোনটাই জাতিকে নিশ্চিত করতে পারেনি। আওয়ামী লীগ মানেই আইন-শৃক্মখলার অবনতি, দুর্নীতি ও দুর্বৃত্তায়নের মধ্য দিয়ে জাতিকে সঙ্কিত করে রাখে(!)। আরেকটি মহলের অভিমত হচ্ছে তাদের প্রতারণামূলক বক্তব্যে সাধারণ নাগরিককে স্বপ্নে বিভোর রেখে তার সর্বস্ব ছিনিয়ে নেয়! সাধারণ নাগরিকরা এমন অবস্থান থেকে মুক্তি পেতে শহীদ রাষ্ট্রপ্রতি জিয়াউর রহমানের প্রতিষ্ঠিত রাজনৈতিক দল বিএনপি'কে বারবার ক্ষমতায় এনেছে। কিন্তু বিএনপি প্রতিক্রিয়াশীল রাজনীতির বিরুদ্ধে বর্তমান প্রজন্মকে অতীত কর্মকান্ড অবহিত করার পরিবর্তে লুটপাটে সহযোগী করা এবং জিয়া পরিবারের বিরুদ্ধে মিথ্যাচারের কারণে পরিণাম শহীদ জিয়ার জ্যেষ্ঠপুত্র তারেক রহমান, তার ভাই আরাফাত রহমান কোকো ও সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগোষ্ঠী অজানা আতঙ্কের প্রতিমুহূর্ত অতিক্রম করছে। ভুক্তভোগী মহল অভিমত প্রকাশ করছে। এখনই প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করতে না পারলে ভবিষ্যৎ-এ বিএনপিসহ দেশপ্রেমিক শীর্ষনেতা আর জনগণকে কঠিন মূল্য দিতে হতে পারে। উদাহরণ দিতে গিয়ে অনেকেই বললেন, প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী শেখ মুজিবুর রহমান বলতেন এদেশের জনগণের রাজস্ব দিয়ে আইন-শৃক্মখলা রক্ষাকারী বাহিনী পালন করা হয়। জনগণের অর্থেই গোলা-বারুদ, অস্ত্র, কাদানে গ্যাস ক্রয় করে আবার সেই জনগণের উপর তা ব্যবহার করা হয়। এ উক্তির পর '৭২ থেকে '৭৫ পর্যন্ত এদেশে প্রায় ৩০/৪০ হাজার দেশপ্রেমিক যুবক, রাজনৈতিক কর্মী হত্যা কোন দেশের জনগণের অর্থের বিনিময়ে অস্ত্র ক্রয় এবং হত্যাকারী আইন-শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরাই বা কোন দেশের জনগণের অর্থে লালিত এমন প্রশ্নের উত্তর জনগণ চান? ওয়ান-ইলেভেনের পর সরকারি কাজে বাধাদানের মামলা দায়ের-এর প্রবণতা বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রশ্ন হচ্ছে- সন্ত্রাস, দৃর্বৃত্তায়ন কিংবা ভেজালবিরোধী অথবা আইন পরিপন্থী কোন কার্যক্রমে আইন-শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাজে বাধা প্রদানের মতো কোন ঘটনা এ পর্যন্ত ঘটেছে কিনা, যদি না ঘটে তাহলে তা বিবেচনায় এখনই আনা উচিৎ (!) আমার দেশ পত্রিকার সাংবাদিকরা দেশপ্রেমিক এ সময়ের সাহসী সন্তান। তাদের অভিভাবক ভারপ্রাপ্ত সম্পাক মাহমুদুর রহমানের গ্রেফতারের প্রতিবাদ করাতে কি এমন অপরাধ করেছে তা অনেকেই বুঝে উঠতে ব্যর্থ হয়েছে। তা না হলে দেশপ্রেমিক ও শান্তিপ্রিয় প্রতিবাদী নাগরিকরা নাজেহাল হলে সাম্রাজ্যবাদ ও আধিপত্যবাদের আগ্রাসন থেকে জাতিকে রক্ষা সম্ভব হবে না। চ্যানেল ওয়ান বন্ধের পর সরকারের অভিমত জনগণ ভালভাবে গ্রহণ করেনি। পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদে উল্লেখ রয়েছে ১ জুন সকালে পত্রিকাটির প্রকাশক হাসমত আলীকে তার শাহজাহানপুরের বাসা থেকে ধরে নিয়ে যায় একটি গোয়েন্দা সংস্থার লোক। কয়েক ঘণ্টা আটকে রেখেই তাকে দিয়ে মাহমুদুর রহমানের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরে বাধ্য করে। পরে রাতে হাসমত আলী বাদী হয়ে তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানায় পত্রিকাটির ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমানের বিরুদ্ধে প্রতারণার মামলা করেন। মামলার এজাহারে হাসমত আলী উল্লেখ করেন, ২০০৮ সালের ২১ আগস্ট আমার দেশ পত্রিকার সব শেয়ার মাহমুদুর রহমানের কাছে হস্তান্তর করা হয়। জুন মাসে জয়েন্ট স্টক এক্সচেঞ্জ থেকে নাম পরিবর্তনের মাধ্যমে মালিকানা থেকে আমাকে অব্যাহতি দেয়ার কথা ছিল। ওই বছর ১১ অক্টোবর অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের কার্যালয়ে গিয়ে ফরম সি পূরণ করে প্রকাশক ও পরিচালক হিসেবে নাম প্রত্যাহারের আবেদন জানায়। ২০০৯ সালের ১৯ নবেম্বর সহকারী কমিশনার জাকিয়া সুলতানা আমার দেশ পত্রিকায় আলহাজ্ব হাসমত আলীর নাম ব্যবহার না করার জন্য মাহমুদুর রহমানকে চিঠি দেন। প্রশ্ন হচ্ছে, জেলা ম্যাজিস্ট্রেট-এর দফতরের দায়িত্ব ডিক্লারেশন নতুন করে গ্রহণ করা। সেই দায়িত্ব অনুযায়ী তারা যদি মাহমুদুর রহমানকে নতুন করে ডিক্লারেশন প্রদানে পত্র দেয়ার পরও তিনি ডিক্লারেশন না দিয়ে থাকেন তার জন্য মাহমুদুর রহমানই দায়ী হবেন। কিন্তু শুধু আলহাজ হাসমত আলীর নাম ব্যবহার না করার চিঠি দিলে প্রকাশক হিসাবে কার নাম ব্যবহার হবে এমন দিক-নির্দেশনা না থাকলে দায়-দায়িত্ব কার উপর বর্তাবে? স্বাভাবিক দৃষ্টি অদক্ষ সিদ্ধান্তের দায়দায়িত্ব কেন আমার দেশ পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক ও সাংবাদিক মহল বহন করবে। এই দায়-দায়িত্ব ডিক্লারেশন প্রদানকারী বহন করলে ন্যায় বিচারের মাধ্যমে সুশাসন প্রতিষ্ঠিত হবে। তথ্যমন্ত্রীর সংসদে বিবৃতি আর আওয়ামী লীগের শীর্ষ রাজনৈতিক ব্যক্তির অভিমত দেখে বোঝা যায় যে, মাহমুদুর রহমানসহ তার সহকর্মী সাংবাদিকরা দুর্নীতি, দুর্বৃত্তায়ন ও মিথ্যাচারের মুখোশ উন্মোচিত করতে গিয়ে রোষানলে পড়েছেন। মিডিয়ার একটা বড় অংশের মালিক হয়েছে দুর্বৃত্তচক্র। কিন্তু সাংবাদিক সমাজ তাদের পেশাগত ঝুঁকি এড়াতে সরকারের আক্রোশমূলক কর্মকান্ডের প্রতিবাদে প্রিন্টিং ও ইলেকট্রনিক মিডিয়া বন্ধের আগাম বার্তা দিতে ব্যর্থ হয়েছে। এজন্যই এদিকে বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন শুরু হয়েছে বর্তমান সরকারের দুর্নীতি ও দৃর্বৃত্তায়নের অভিযোগ তদন্তের জন্য বিরোধ দলীয় নেতার কাছ থেকে সংসদ সদস্যদের তালিকা নিয়ে স্পীকার একটা তদন্ত কমিটি গঠন, উক্ত কমিটি কর্তৃক প্রতিবেদন সংগ্রহ করে তার পরবর্তী পদক্ষেপের ব্যবস্থা গ্রহণ করলে দেশে স্থিতিশীলতা ফিরে আসতো এবং সরকারের স্তব্ধতার প্রমাণ মিলতো। যাই হোক ‘আমার দেশ' পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমানসহ শতাধিক সাংবাদিক নিয়ে তেজগাঁও শিল্প এলাকার থানার আচরণ বিশ্বের শান্তিপ্রিয় মানুষকে আতঙ্কিত করে ফেলেছে। গভীর রাতে একটা মামলার কারণে রাষ্ট্রের দুর্দিনের প্রতিবাদী কলামিস্টকে গ্রেফতার করতে দেখে অনেকেই মন্তব্য করেছে দেশের পতাকা আছে, মানচিত্র আছে, নাই শুধু প্রকৃত অর্থে স্বাধীনতা। মীর জাফর ইংরেজদের স্বার্থরক্ষা করতে গিয়ে মানসম্মান হারিয়েছিল এ উদাহরণ সামনে রাখলে সরকার বাঙালি না হয়ে মুসলমান হতে চেষ্টা করতো যাতে আত্মমর্যাদা রক্ষা পেত! কারণ বাংলাদেশের মানুষ অপশাসনের কারণে অসভ্য শাসনে ক্ষত-বিক্ষত হচ্ছে। আগের সরকার যদি আওয়ামী দুঃশাসনে রাষ্ট্র, জাতি ও আইন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তা পুনরুদ্ধারের উদ্যোগ নিতো তাহলে আজকে এ অবস্থার সম্মুখীন হতে হতো না। পার্বত্য চট্টগ্রামসহ ভারতের সাথে দ্বিপাক্ষিক চুক্তির নামে যে চুক্তি করেছে তা বাতিল করলে মইন-ফখর-এর ষড়যন্ত্র করার সাহস হতো না। বাংলাদেশ আজ ভারতের পানি আগ্রাসনের কাছে পরিবেশ বিপর্যয়ের সম্মুখীন। ট্রানজিটের নামে করিডোর দেয়া হচ্ছে। বন্দরগুলো হাতছাড়া হওয়ার পথে। ইংরেজ ফিরিঙ্গীরা যেভাবে লুট করেছে বাংলাদেশ এখন আধিপত্যবাদ ও সাম্রাজ্যবাদের ফিরিঙ্গীরা সেভাবে লুটতে চায়! দেশের মিডিয়াগুলো পানি আগ্রসানের বিরুদ্ধে জনমত গড়ে তোলার পরিবর্তে জাতিকে বিভক্তি করার সংবাদে গুরুত্ব দেয়ার পরিণাম ভয়াবহ। কেবল ‘আমার দেশ' পত্রিকা বন্ধ হয়েছে। পরবর্তীতে দেশপ্রেমিক আরও মিডিয়া বন্ধ হবে সাংবাদিক-সম্পাদক মিথ্যা অভিযোগে নির্যাতনের স্বীকার হবে। জাতিকে বুদ্ধি ও মেধাহীন করার ষড়যন্ত্র প্রতিহত করতে এখনই প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। আওয়ামী লীগ জাতিকে মেধাশূন্য করতে পারলে ডিজিটাল মিথ্যাচারের মাধ্যমে ক্ষমতা চিরস্থায়ী ধরে রাখতে পারবে। গত বুধবার (২৬ মে) দুপুরে বাসে প্রতারক চক্র আগুন ধরেছে বলে চেঁচিয়ে আমিসহ অনেকেই প্রধানমন্ত্রীর দফতরের সামনে আহত হয়ে দু'ঘণ্টা যাবত পড়ে থাকলেও যানবাহনের অভাবে পঙ্গু হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে যেতে পারিনি। যখন মিশুকে চড়ে হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য গেলাম তখন পঙ্গু জরুরি বিভাগের চিকিৎসকদের আচরণে তাতে মনে হয়েছে ওটা প্রাইভেট ক্লিনিক। কুষ্টিয়ার ‘দৈনিক শিকল' পত্রিকা অফিস পেট্রোল ঢেলে পোড়ানো হয়। নতুন করে কার্যালয় নির্মাণকালে পৌরসভার রোলার দিয়ে ভেঙ্গে গুঁড়িয়ে দেয়া, তারপর পৌর মেয়র কর্তৃক সেখানে আবর্জনা রাখার স্থান বানানোর মত কাজ লক্ষ জনতার সামনে ঘটলেও আগুন দিয়ে পুড়িয়ে ও গুঁড়িয়ে দেয়ার বিচার আজও হয়নি। আজ সংবাদপত্র বা মিডিয়াকে আওয়ামী লীগ ভয় পায়। অথচ যারা মিডিয়ার বিরুদ্ধে নানা মিথ্যাচার, অপপ্রচার ও নির্যাতন করে তারাই যখন অসহায় হয়ে পড়ে তখনই মিডিয়া কর্মীদের কাছে দয়া ভিক্ষা চায়। কিন্তু মিডিয়ার মালিক যেসব ব্যবসায়ীদের করা হচ্ছে তারা দুর্দিনে কোন কাজে আসবে না, তার নিদর্শন ওয়ান ইলেভেনে মিলেছে। যারা প্রতিবাদ করে তারাই বর্তমান সরকারের রোষানলে পড়ছে এবং পড়তে যাচ্ছে। এ কারণে গণমাধ্যম যদি চালু থাকে তাহলেই জাতিকে মেধাশূন্য করা যাবে না। তাই দেশকে মেধাশূন্য করতে দেশপ্রেমিক মিডিয়াগুলোকে বন্ধ করতে নানামুখী কৌশল গ্রহণ করা হয়েছে। অথচ মিডিয়া সমাজের অসঙ্গতি বা নাগরিক দুর্ভোগের কথা তুলে ধরে নাগরিক মৌলিক ও মানবাধিকার নিশ্চিত করার দায়িত্ব পালন করে থাকে। দেশের মানুষ বিদ্যুৎ, পানি ও গ্যাস সংকটে ভুগছে। টেন্ডারবাজি, গুপ্তহত্যা, নারী নির্যাতনসহ ও আইন-শৃক্মখলা পরিস্থিতির মারাত্মক অবনতি ঘটছে, রাষ্ট্রের বেতনভুক্ত সেবকদের দায়িত্বহীনতার কারণে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। বিশিষ্ট পার্লামেন্টারিয়ান সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরী বলেছেন, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচনে ৫৫ হাজার ভোটারের ছবি নেই। অপরদিকে নির্বাচন কমিশন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অবঃ) এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন দুর্বল প্রার্থীরা হেরে যাবে বলে এ ধরনের গুজব ছড়াচ্ছেন বলেই ক্ষান্ত হয়নি নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে। অথচ শুধুমাত্র ভোটার আইডি কার্ডের জন্য একটি অনির্বাচিত সরকার দু'বছর দেশ চালাতে হয়েছে। যেখানে নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব ছিল জননেতা সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর প্রশ্নের সঠিক জবাব দিয়ে নিজেদের স্বচ্ছতা প্রমাণ করার তা না করে মামলা নিঃসন্দেহে তাদের কর্মকান্ড বিতর্কিত করে তুলবে। আর এসব অসত্য অকল্যাণকর দায়িত্বহীন কর্মকান্ড যাতে নাগরিক জীবন অতিষ্ঠ করে না তোলে তার লক্ষ্যে জনসচেতনতা গড়ে তোলার দায়িত্ব পালন করে মিডিয়া। যারা কলোনিয়াল শাসনের মাধ্যমে নাগরিক মৌলিক অধিকার ক্ষুণ্ণ করতে চায় তারাই আইনকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে। আজকে দেশের এই ক্রান্তিলগ্নে দেশপ্রেমিক রাজনৈতিক জনতা এবং সাংবাদিক ও সংবাদপত্রের ঐক্য ছাড়া বিপর্যয় রোধ করা যাবে না। বলেন এখানেই শেষ সরকার নিয়ন্ত্রিত গণমাধ্যম থেকে দেশপ্রেমিক সাংবাদিকদের ছাঁটাই করা শুরু হয়েছে। ছড়াকার আবু সালেহসহ চাকরিচ্যুত সকলের চাকরি ফেরত দিতে হবে। এ ক্ষেত্রে দেশপ্রেমিকদের মিডিয়া সেল গঠন করা যেতে পারে। আমরা সংবাদপত্রের কালো দিবসকে সামনে রেখে সাম্রাজ্যবাদ ও আধিপত্যবাদের কবল থেকে স্বাধীনতা অক্ষুণ্ণ রাখতে ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধের শপথ গ্রহণ করবো। সাম্রাজ্যবাদ ও আধিপত্যবাদের ষড়যন্ত্র সফল করতে বিচারবিভাগ, সেনাবিভাগ, আইন-শৃক্মখলা রক্ষাকারী বাহিনী ও মিডিয়াকে ধ্বংস করার ষড়যন্ত্র প্রতিহত করতে গোটা জাতিকে সচেতন করতে ব্যর্থ হলে বিপর্যয় নিশ্চিত। এ লেখা যখন শেষ পর্যায়ে তখন জানতে পারলাম সত্য কথা বলা ও লেখার অপরাধে পুলিশ রিমান্ডে মাহমুদুর রহমান। অনেকে বিস্ময় প্রকাশ করে বললো, রাষ্ট্রের বেতনভুক্তরা যদি সরকারি দলের কর্মীর আচরণ করে তাহলে গণতন্ত্র মুখ থুবড়ে পড়বে। এ আচরণ স্বৈরাচারী ফিরিঙ্গী লুটেরাদের। সত্য কথা শোনা সমালোচনা সহ্য করার অভ্যাস কেবল জনগণের সেবকদের মাঝেই থাকে। যারা এটা সহ্য করতে পারে না, তাদের গণতান্ত্রিক দেশে ক্ষমতায় থাকার অধিকার থাকে কি? লেখক : চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ মফস্বল মানবাধিকার সাংবদিক ফোরাম

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ