শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪
Online Edition

কলারোয়ায় কোটি টাকার সোলার স্ট্রীট লাইট অকেজো

কলারোয়া (সাতক্ষীরা) সংবাদদাতা : বছর পার হওয়ার আগেই কলারোয়ায় টিআর কাবিটা প্রকল্পের অর্থায়নে প্রায় কোটি টাকা ব্যয়ে স্থাপিত অধিকাংশ সোলার স্ট্রীট লাইট অকেজো হয়ে পড়েছে। জানা গেছে, বিগত ২০১৬-২০১৭ অর্থবছরে স্থানীয় সংসদ সদস্যের কোটায় টিআর কাবিটা প্রকল্পে প্রায় ১ কোটি টাকায় প্রায় ২’শ সোলার স্ট্রীট লাইট বরাদ্ধ দেওয়া হয়। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা সুলতানা জাহান ও তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী অফিসার উত্তম কুমার রায় ২০১৭ সালের এপ্রিল ও জুন মাসে দুই দফায় বরাদ্ধকৃত সমুদয় টাকা অগ্রিম গ্রহণ উত্তোলন করেন। এরপর স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের নির্দেশ মোতাবেক ”ম্যাক্স” নামে একটি এনজিও’কে সংসদ সদস্যের কোটার স্ট্রীট লাইট ও উপজেলা পরিষদের কোটার হোম সোলার সরবরাহের কাজ প্রদান করা হয়। কিন্তু উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা ভাগ বাটোয়ারার চুক্তিতে ম্যাক্স এনজিও এর কাছ থেকে খুবই নিম্নমানের কম দামের সোলার সরবরাহ নেয় বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়। সরেজমিনে  দেয়াড়া ইউনিয়নের নাম প্রকাশে অনেচ্ছুক এক ইউপি মেম্বর জানায়, এই ইউনিয়নে স্থাপিত ১৮ সোলার স্ট্রীট লাইট প্রদানের সপ্তাহ পারের আগেই ৪ টি সহ বর্তমানে ১৫ টি ষ্ট্রীট লাইট অকেজো হয়ে পড়েছে। মিউজিক লাইটের মত পর্যায়ক্রমে জ্বলা নেভা সোলার স্ট্রীট লাইট নিয়ে ফেসবুকে ব্যপক সমালোচনা চলছে।  কলারোয়া উপজেলা কৃষক লীগের সাবেক আহবায়ক সমরেশ ঘোষ জানায়, প্রতি স্ট্রীট লাইটে ৫৬ হাজার ৫’শ টাকা বরাদ্ধ থাকলেও ২০ ফুট উচ্চতার লোহার খুটি সিলভার কালার করে তার উপর ৩০ ওয়াটের সোলার প্যানেল বসানো হয়েছে। ইতিমধ্যে অধিকাংশ সোলার স্ট্রীট লাইট অকেজো এবং সচল গুলো নিস্প্রোভ আলো নিয়ে জ্বলা নেভা করতে থাকে। উপজেলার  সোনাবাড়িয়া ইউনিয়নের মাদরা গ্রামের এক ব্যক্তি জানায়, মাদরা মসজিদে ১ লাখ ৪০ হাজার টাকার সোলার বরাদ্ধ দেওয়া হয়। কিন্তু ম্যাক্স এনজিও আনুঃ ৪০ হাজার টাকা ব্যয়ে ২’শ ওয়াটের সোলার এবং ৫ লাইট দিলেও কোন সোলার ফ্যান দেওয়া হয়নি। এভাবে একটি মাত্র মসজিদে সোলার দিয়ে এনজিও ১ লাখ টাকা আত্মসাত করেছে। আর মসজিদের সোলারের টাকা মেরে খাওয়ার সমালোচনায় পড়েছে স্থানীয়  মেম্বর কামরুজামান। কুশোডাঙ্গা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সম্পাদক জাকির হোসেন জানান, সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসকের কাছে টিআর কাবিখা প্রকল্পে বরাদ্ধ রাস্তাঘাট ও সোলারের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ করা হয়। অভিযোগের তদন্তের দিন ধার্য্য করে তাদের পত্র প্রদান করলেও গত আট মাসের মধ্যে সেই তদন্ত অনুষ্ঠিত হয় নি। এদিকে নাম প্রকাশে অনেচ্ছুক একাধিক ইউপি মেম্বর ও চেয়ারম্যান জানান, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার প্রদত্ত টাকার পরিমাণ অনুযায়ী সোলার সরবরাহ করা হয়েছে বলে ম্যাক্স এনজিও এর পক্ষ থেকে তাদের জানানো হয়েছে। উপজেলা চেয়ারম্যান ফিরোজ আহমেদ স্বপন বলেন, মন্ত্রণালয় থেকে ”ম্যাক্স” এনজিও’কে  সোলার স্থাপনের কাজ প্রদানের নির্দেশ দেওয়া হয়। কাজ  পেয়ে এনজিও তাদের কথা উপেক্ষা করে নিম্নমানের কম ক্ষমতার সোলার স্থাপন করে লাখ লাখ টাকা লোপাট করেছে। ফলে অধিকাংশ সোলার স্ট্রীট লাইট অকেজো হয়ে পড়েছে। এতে জনপ্রতিনিধিরা টাকা মেরে খেয়েছে বলে ব্যপক সমালোচনা হচ্ছে এবং সরকারের ভাবমূর্তি চরম ভাবে ক্ষুণ্ণ হচ্ছে। কলারোয়া-তালার সংসদ সদস্য এ্যাড, মুস্তফা লুৎফুল্যাহ খুবই নিম্নমানের, কম দাম ও কম ক্ষমতার সোলার সরবরাহের সত্যতা স্বীকার করে বলেন, জন প্রতিনিধিরা টাকা আত্মসাত করে বলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তাকে  সোলার ক্রয়ের ক্ষমতা প্রদান করেও টাকা লোপাটে বন্ধ হয় নি।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ