বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪
Online Edition

গত ১০ বছরে জিনিসপত্রের দাম বাড়েনি এবারও বাড়বে না -অর্থমন্ত্রী

স্টাফ রিপোর্টার : দেশে গত ১০ বছরে কোনো ধরনের জিনিসপত্রের দামই বাড়েনি বলে দাবি করেছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। অর্থমন্ত্রী বলেন, আমি দেশবাসীকে এ সুসংবাদ দিতে চাই যে, গত ১০ বছরে দেশে কোনো ধরনের জিনিসপত্রের দাম বাড়েনি। এবারও বাজেটের পর জিনিসপত্রের দাম বাড়বে না।
গতকাল সোমবার বিকেলে সচিবালয়ে অর্থমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সাংবাদিকদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় এ কথা বলেন তিনি।
আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেন, সিগারেট ও মোবাইল কোম্পানিগুলোর জন্য ট্যাক্সের কোনো হেরফের হবে না। আগেও ৪৫ শতাংশ ছিল এবারও একই পরিমাণ থাকবে। তবে ব্যাংকসহ আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর সর্বোচ্চ করপোরেট ট্যাক্স হবে ৩৭ দশমিক ৫ শতাংশ।
ভ্যাটের স্তরের বিষয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, এবারের বাজেটে ভ্যাট ৯ স্তর থেকে ৫ স্তরে নামিয়ে আনার পরিকল্পনা রয়েছে।
অর্থমন্ত্রী ইনকাম ট্যাক্স, ভ্যাট ও ভ্যাটের হার, রোহিঙ্গা ইস্যুসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব দেন। এক প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, এবারের বাজেটে রোহিঙ্গাদের জন্য ৪০০ কোটি টাকার মতো বরাদ্দ থাকছে।
এদিকে অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, আজ মঙ্গলবার ৫ জুন থেকে জাতীয় সংসদের বাজেট অধিবেশন শুরু হচ্ছে। ৭ জুন বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে ১২টায় অর্থমন্ত্রী আগামী ২০১৮-১৯ অর্থ বছরের বাজেট পেশ করবেন। ৮ জুন শুক্রবার অর্থমন্ত্রী বাজেটোত্তর সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেবেন।
বাজেটের আকার নিয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, এবারের বাজেটের আকার হবে ৪ লাখ ৬৮ হাজার কোটি টাকার মতো।
কর না বাড়লে রাজস্ব বাড়াবে কীভাবে- এই প্রশ্নে মুহিত বলেন, আমাদের রাজস্ব আহরণকারী সংস্থা এনবিআরের লোকজনের মন-মানসিকতায় পরিবর্তন হয়েছে। হয়রানি কমে গেছে, প্রসেস সহজ হওয়ায় আয় বাড়ছে। আমরা লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছিলাম আয়কর রিটার্ন দাখিলকারীর সংখ্যা হবে ১৫ থেকে ২০ লাখ। কিন্তু সেটা ইতোমধ্যে ৩৩ লাখ ছাড়িয়ে গেছে। এটা আগামীর জন্য খুব আশা জাগানিয়া বিষয়। আরও ভালো দিন হচ্ছে, নতুন করদাতাদের অধিকাংশই ইয়াং পিপল।
অর্থমন্ত্রী বলেন, কোন লেভেল থেকে ট্যাক্স নেওয়া হবে, গতবারও চেইঞ্জ হয়নি, এবারও হবে না। অনেক দেশে এটি চেইঞ্জ করা হয় না। অলরেডি ভেরি হাই.. বার বার বাড়ানোর প্রয়োজনীয়তা আমি দেখি না। টাকা সাদা করার বিষয়ে নতুন কোনো সুযোগ থাকছে না বলে জানান তিনি। বাজেটে ‘ইউনিভার্সাল পেনশন স্কিম’ রূপরেখা থাকবে এবং বাজেটের পর সঞ্চয়পত্রে সুদের হার কমানো হবে বলে ইঙ্গিত দেন তিনি। বাজেটে রোহিঙ্গাদের জন্য ৪০০ কোটি টাকার মতো বরাদ্দ থাকছে বলেও জানান মুহিত।
কর্পোরেট কর
কর্পোরেট করে তেমন পরিবর্তন আসছে না জানিয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, কর্পোরেট ট্যাক্সে তেমন কোনো চেইঞ্জ নেই, সারচার্জ আগের মতোই রয়েছে, বাট একটু রিফাইনমেন্ট সেখানে আনা হয়েছে। কর্পোরেট ট্যাক্স কমানোর প্রতিশ্রুতির কথা সাংবাদিকরা মনে করিয়ে দিলে তিনি বলেন, ৪৫ পার্সেন্টস আছে, একটা আছে মোবাইল এবং সিগারেট। মোবাইলের তো আয় এত ভাল এবং সিগারেটের তো অন্য উদ্দেশ্য।
আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেন, কর্পোরেট ট্যাক্স সাড়ে ৩৭, লোয়ার বেনিফিট যারা পাচ্ছে তারা থাকছে, যেগুলো সাড়ে ৩৭ এর নিচে, আই হ্যাড নট ট্যাক্স দেম, আই হ্যাড ওনলি রিডিউস দা হাই রেইটস, লোয়ার রেইটস আর নট ব্যাড।
স্যোসাল মিডিয়া যেমন ফেইসবুক বা অন্যান্য সেবাগুলো করের আওতায় আসছে কি না- সাংবাদিকদের প্রশ্নে অর্থমন্ত্রী বলেন, এইসব বাইরের থেকে যারা ব্যবসা করে, ট্যাক্স নেটের আওয়ায় আনা তেমন কিছু না, আমাদের প্রতিবেশীরা আগেই করেছে।
সিগারেটে এবারও ট্যাক্স বাড়বে বলে জানান তিনি। তবে হাইব্রিড গাড়ির আমদানি করে তেমন পরিবর্তন আসছে না বলে তিনি জানান।
ভ্যাট প্রসঙ্গ
আগামী বাজেটে ভ্যাটের বিষয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, ২০১২ ভ্যাট আইন অনুযায়ী আমাদের কমিন্টমেন্ট ছিল ভ্যাটের স্তর একটি করা। কিন্তু সেটা আমরা করতে পারিনি। তবে আমরা আগামী বাজেটে ভ্যাটের স্তর ৯টি থেকে ৫টিতে নামিয়ে আনবো। তবে আমাদের মূল টার্গেট হচ্ছে তিন স্তরে নামিয়ে আনা। ভ্যাটের সর্বোচ্চ হারটা ১৫ শতাংশই থাকবে। নিচেরগুলো পরিবর্তন করা হবে।
চলতি অর্থবছরে রাজস্ব আয় সব থেকে বেশি ভ্যাট থেকে এসেছে জানিয়ে মুহিত বলেন, আগামী বছরে তাই থাকবে। আর দ্বিতীয় অবস্থানে আয়করকে রাখার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ