শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪
Online Edition

বাগমারার হাট-বাজারে আম ও লিচুর ন্যায্যমূল্য নেই

আফাজ্জল হোসেন, বাগমারা (রাজশাহী): মধু মাসের আকর্ষণীয় ফল আম আর লিচু সবার পছন্দ। আর এই পছন্দের ফল যদি সস্তায় মিলে তবে কথাই নেই। কিনে আন ব্যাগ ভরে সবাই মিলে খাও পেট ভরে। মৌসুমী এই ফল খাওয়ার এই শ্লোগানকে সামনে রেখে বাগমারার বিভিন্ন হাট-বাজারে এখন আম ও লিচু সস্তায় কেনার হিড়িক পড়েছে। তবে কম দামে বিক্রিতে আম-লিচ ুচাষির মাথায় হাত উঠেছে।
এখানকার বিভিন্ন হাটে বাজারে বর্তমানে বিভিন্ন নাম ও সাইজের গুটি আম গড়ে ১০ টাকা থেকে ২০ টাকা কেজি দরে এবং লিচু দেড়শ থেকে একশ পঞ্চাম টাকা শ হিসাবে দেদারছে বিক্রি হচ্ছে। আবার এখানকার অনেক হাটে বাজারে বিভিন্ন ভাবে ঝরে পড়া লিচু ৩০ থেকে ৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে। কম দামে বাগান মালিকরা আম-লিচু নিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন।
সরেজমিনে গতকাল শুক্রবার উপজেলার তাহেরপুর ও ভবানীগঞ্জ হাট ঘুরে এ দুটি ফল পানির দরে বিক্রি হতে দেখা যায়। বাজারের কয়েকজন ফল বিক্রেতা ও ক্রেতা সূত্রে জানা গেছে, এলাকায় গত কয়েক বছরে প্রচুর পারিমাণ আম ও লিচুর বাগান গড়ে উঠেছে। এছাড়া এসব ফল প্রায় কৃষকের বাড়ির আঙ্গিনায় ও বশতবাড়ির ভিটায় উৎপাদন হয়ে থাকে। এক সময় বাইরে থেকে আম ক্রয়ের জন্য পাইকাড় আসতো। এখন আর সেভাবে আম ক্রয়-বিক্রয় হচ্ছে না। ফলে কৃষক তার বাড়িতে পরিবার আত্মীয় স্বজন নিয়ে ফল খাওয়ার পর অতিরিক্ত ফল স্থানীয় বাজারে বাড়তি পয়সা নিতে বাজারে নিয়ে আসলেও মিলছেনা কাঙ্খিত দাম। বাগানে বাগানে আম-লিচুর পাইকাড়ের অভাবে চাষিরা উদ্বিগ্ন। এখানে কোন ব্যবসায়ীর আগমন না ঘটাই অনেকে কোন লাভ ক্ষতির হিসাব না করে তারা ফলগুলো বাজারে নিয়ে এসে যে দাম পায় সে দামেই বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছে। যে কারণে স্থানীয় সাধারণ ভোক্তারা কম দামে সরাসরি এমন মিষ্টি ফল খেতে পারছে। অপর দিকে চাষিরা লোকশান গুনছে। উপজেলার আম ব্যবসায়ী সাহেব আলী জানান, আগে বাগান কিনে ফল ঢাকা, চিটাগাংসহ বিভিন্ন এলাকায় পাঠিয়েছি। এখন আর মালের চাহিদা নেই তাই। বাগান কিনা বাদ দিয়েছি। বর্তমানে বাজার খারাপ। আসে পাশে কিছু মাল কিনে হাতে নাতে বিক্রি করে ব্যবসা ধরে রেখেছি। বেশী মাল কিনে বড় ধরনের লোকসান হতে বাঁচতে তিনি এধরনের ব্যবসায় ঝুঁকি নিতে অপারগতা জানান। তাহেরপুর বাজরের ফল বেপারী(ব্যবসায়ী) আক্কাস আলী জানান, রোজার মাস শুরু হওয়ায় একই সাথে আম ও লিচু পেকে  ওঠায় এখন সস্তায় সেগুলো বিক্রি শুরু হয়েছে। তার মতে, আবহাওয়া অনুকুল না থাকা বৃষ্টিপাতের কারণে বাইরের ফল ব্যবসায়ীরা এলাকায় আসতে না পারায় ক্রেতার অভাবে কৃষকরা বাধ্য হয়ে সেগুলো কম দামে বিক্রি রেছে। বালানগর গ্রামের আম বাগান মালিক আলহাজ নায়েব উল্লাহ জানান, বহুকাল থেকে তার আম বাগান। গত ২/৩ বছর ধরে রোজার মাসে আমের বাজারে আম কেনা বেচা কমে যাওয়ায় তিনি বেকায়দায় পড়েছেন। তার ভাষ্য মতে, যে বাগান দেড় দুই লাখ টাকায় বিক্রি সেখানে বিশ কিংবা  পঁচিশ হাজার টাকার ক্রেতা নেই।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ