শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪
Online Edition

স্বপ্নপুরীতে বাড়ছে পর্যটকদের ভিড়

মো: আফজাল হোসেন ফুলবাড়ী (দিনাজপুর) : দিনাজপুর জেলার নবাবগঞ্জ উপজেলায় পর্যটক কেন্দ্র স্বপ্নপুরীতে বাড়ছে পর্যটকদের ভিড়। দিনাজপুরের নবাবগঞ্জ উপজেলার ৯ নং কুচদহ ইউপিতে অবস্থিত একশ একর জমিতে বিশাল কাটা তারের ঘেরা পর্যটন কেন্দ্র স্বপ্নপুরী। কিছুটা বিনোদন প্রাদনের উদ্দেশ্যেই স্বপ্নপুরীর কাজ পুরোদমে চলছে। এখানে কাজ করছেন ৫ শতাধিক কর্মী। নবাবগঞ্জ থানার আফতাবগঞ্জ হাটের স্বত্ত্বাধিকারী প্রয়াত ডাঃ আবতাফ উদ্দীনের দ্বিতীয় পুত্র ৯ নং কুচদহ ইউপি’র সপ্তমবারের জন্য নির্বাচিত ইউপি চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন ও প্রয়াত সাবেক সংসদ সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান ফিজু নিজ উদ্যোগে প্রায় ৭ কোটি টাকা ব্যায়ে নির্মাণ করেন স্বপ্নপুরী নামক পর্যটন কেন্দ্র। দীর্ঘ ২৩ বছর চলছে এর কার্যক্রম। স্বপ্নপুরীর ১টি মাত্র সুবিশাল গেট দিয়ে ভেতরে প্রবেশ করলেই চোখে পড়ে ২টি বিশাল ত্রিভূজ আকারের পুকুর, ১টি বিশাল মানব মুর্তির যাদুঘর, ১টি প্রাণী কুলের যাদুঘর, হরেক রকম পশুপাখি, পশু পাখি সমাবেশ উক্ত যাদুঘরে। পর্যটকদের জন্য নির্মাণ করা হয়েছে ৪০/৫০টি অভিজাত রেষ্ট হাউজ। দেশী-বিদেশী বিভিন্ন জাতের দুষ্প্রাপ্য বৃক্ষও আছে এ বাগানে। আকর্ষণীয় বিভিন্ন পণ্য বিক্রি করে এখানে অনেকে জীবন জীবিকা নির্বাহ করছেন।
“রেলগাড়ী ঝমঝম পা পিছলে আলুর দম’’ এ এলাকার রেল যোগাযোগ না থাকলেও বিনোদনের জন্য তৈরি করা হয়েছে রেল লাইন। এই লাইন দিয়েই চলে বিনোদন রেল গাড়ীটি। নেই মাস্টার, নেই স্টেশন তবুও যাত্রীরা রেলগাড়ীতে একটু আনন্দ পাবার আশায় উঠছেন। পুকুরকে সমুদ্র মনে করে ওরা ওরা স্টিমারে উঠে এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে চলাচল করছেন অনেকে।
বাস্তবে সাতাসাগর তের নদী পাড়ী না দিতে পারলেও ওরা ময়ূর পংক্ষিতে উঠে পুকুরে পাড়ি দিচ্ছে। জমিদার সেজে কেউ ঘোড়ার গাড়ীতে উঠছে। কেউ বা পংখীরাজ ঘোড়াই উঠে যুদ্ধে যাবার প্রস্তুতি নিচ্ছে। কেউ বাহারাম বাদশা, কেউ সিরাজ উদ-দৌলা হয়ে হাতে রজনীগন্ধা নিয়ে আলেয়ার সন্ধানে ঘুরেই চলছেন।
কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম, একাত্তরের বীর সেনাদের প্রতিকৃতিও ভেতরের রাস্তার মোড়ে শোভা পাচ্ছে। বেহুল, লনিন্দর, অজগর, বাঘ, সিংহ, হাতি, জেব্রা, পেঙ্গুইন পাখি- ইত্যাদি প্রতিকৃতি পাথর দিয়ে তৈরি করা হয়েছে। প্রকৃতিক ঝরনা না থাকলেও চালু করা হয়েছে স্যালো চালিত ঝর্ণা। সম্প্রতি মৎস জগৎ নামে আরো একটি ভুবন চালু হয়েছে। দেশের প্রখ্যাত জল মানব নওশাদ দির্ঘদিন স্বপ্নপুরীতে কাজ করে তার নৈপূণ্য প্রদর্শক করেছেন। বেড়াতে আসা উৎসুক জনতার অনেকেই গোসল করে স্বস্তি পাচ্ছেন। এখানে প্রতিদিন শত শত বাস, মাইক্রোবাস, রিক্সা, ভ্যানে করে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে হাজার হাজার নারী-পুরুষ প্রতিদিন সমবেত হন এখানে।
স্বপ্নপুরীর ব্যবস্থাপক মিজানুর রহমান বলেন, দেশের শীর্ষ রাজনীতিবিদ, ব্যবসায়ী, শিল্পপতি, সরকারি উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষ দেখতে আসেন স্বপ্নপুরীর অপরূপ দৃশ্য। এ পর্যন্ত ৪০/৫০টি পূর্ণদৈর্ঘ্য ছায়াছবির বহু দৃশ্য এখানে চিত্রায়িত হয়েছে। তিনি জানান দেশী, বিদেশী পর্যটকগণ ০১৭১২১৩৪০৯৫ নং মোবাইলে যোগাযোগ করলে সব ধরনের সহযোগিতা দেওয়া হয়। স্বপ্নপুরীর স্বত্ত্বাধিকারী দেলোয়ার হোসেন জানান, নিজ উদ্যোগে তিনি শতাধিক লোকের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করেছেন এখানে। এর পরিধি আরো বৃদ্ধির পরিকল্পনা আছে। সরকার, দেশের শীর্ষ শিল্পপতি, দাতা সংস্থা যদি স্বপ্নপুরীর উন্নয়নে এগিয়ে আসেন তাহলে আমরা আমাদের কাঙ্খিত সপ্ন পুরোপুরি বাস্তবায়ন করতে পারবো।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ