চিকিৎসাসেবা ব্যাহত পাইকগাছা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ডাক্তার ও জনবল সঙ্কট
খুলনা অফিস : খুলনার পাইকগাছা উপজেলা সদরে অবস্থিত ৫০ শয্যা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ডাক্তার ও জনবল সঙ্কটে চিকিৎসাসেবা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। অ্যানেস্থেশিয়া ডাক্তার না থাকার কারণে ডিএসএফ (সিজারিয়ান) প্রকল্পটি বন্ধ হয়ে গেছে। এছাড়াও ১৫ বছর ধরে টেকনিশিয়ান না থাকায় আল্ট্রাসনো মেশিন, এক্স-রে মেশিন, ডেন্টালসহ প্রায় কোটি কোটি টাকার সরঞ্জাম নষ্ট হয়ে গেছে। অচিরেই ডাক্তারসহ টেকনিশিয়ান নিয়োগের দাবি জানিয়েছেন এলাকার ভুক্তভোগীমহল।
জানা গেছে, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ২ ডিসেম্বর ২০০৯ সালে ৩১ শয্যা থেকে ৫০ শয্যায় উন্নীত করা হয়। ৫০ শয্যার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৩৩ জন ডাক্তারের স্থলে রয়েছে মাত্র ৪ জন। শূন্যপদ ৩০ জন। দ্বিতীয় শ্রেণির ৩৩ জনের স্থলে রয়েছে মাত্র ১৪ জন। তৃতীয় শ্রেণির ১৫৮ জন কর্মচারীর মধ্যে রয়েছে ১১৩ জন। চতুর্থ শ্রেণির ৩২ জন কর্মচারীর মধ্যে রয়েছে মাত্র ২১। সর্বমোট ২৫৬ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীর মধ্যে শূন্যপদ ১০৮টি। মেডিকেল টেকনোলজি না থাকার কারণে আল্ট্রাসনো মেশিন, এক্স-রে ও ডেন্টাল মেশিন ১৫ বছর ধরে পড়ে থাকার কারণে নষ্ট হয়ে গেছে। অ্যানেস্থেশিয়া ডাক্তার না থাকার কারণে ডিএসএফ প্রকল্পটি বন্ধ হয়ে গেছে। দীর্ঘদিন ধরে হচ্ছে না কোনো প্রকার অপারেশন। ৫০ শয্যা হাসপাতালে ৩ জন ডাক্তার, ৪টি হেলথ সেন্টারে ১ জন ডাক্তার ও ৬টি সাব সেন্টারে সেকমো ও ফার্মাসিস্ট দিয়ে কোন রকমে চালানো হচ্ছে স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রম। যাতে এলাকার স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে এলাকার সাধারণ রোগীরা। ৩১ শয্যার জনবল ও আসবাবপত্র দিয়ে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স কার্যক্রম চালানোর ফলে সর্বক্ষেত্রে বেহাল অবস্থা দেখা দিয়েছে। এছাড়া দুর্গন্ধময় পরিবেশে রোগীর সাথে আসা লোকজনও অসুস্থ হয়ে পড়ছে।
এদিকে, সরেজমিনে দেখা গেছে পুরুষ ও মহিলা ওয়ার্ডের ব্যবহৃত বাথরুমগুলোতে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ বিরাজ করছে। মহিলা ওয়ার্ডে ভর্তি জনৈক মহিলা জানান, আমাদের ওয়ার্ডে ৮টি ফ্যান তার ৪টি নষ্ট। বেড ছাড়াও হাসপাতালের বারান্দায় রোগীদের স্থান করে নিতে হয়। এসব রোগী দেখভালের জন্য পর্যাপ্ত ডাক্তার না থাকায় ভোগান্তিতে পড়তে হয় তাদের।
এ ব্যাপারে বটিয়াঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) ডা. মো. নজরুল ইসলাম জানান, ৫০ শয্যা হাসপাতাল ৩১ শয্যার জনবল দিয়ে চালানো হলেও জনবল সঙ্কটের কারণে কর্তব্যরত চিকিৎসকদের চিকিৎসাসেবা দিতে হিমশিম খেতে হয়। ডাক্তার বিষয়ে বোর্ড সভায় উত্থাপন করেছি এবং আমার সিভিল সার্জন স্যার ও এমপিকে জানিয়েছি। এদিকে, দীর্ঘদিন ধরে হাসপাতালে প্রায় সব ধরনের অপারেশন কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে।