আজ হজ্ব ফ্লাইট শুরু
মিয়া হোসেন : আজ শনিবার থেকে শুরু হচ্ছে চলতি মৌসুমের হজ্ব ফ্লাইট। সৌদিয়া এয়ারলাইন্স ও বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স এর মাধ্যমে হজ্বযাত্রীরা সৌদি আরবে পবিত্র হজ্ব পালন করতে যাবেন। ভোর ৩টা ৪৫ মিনিটে সৌদিয়া এয়ারের এসভি ৮০৩ ও বাংলাদেশ বিমানের সকাল ৭টা ৫৫মিনিটে বিজি ১০১১ ফ্লাইটে হজ্বযাত্রীরা সৌদি আরবে যাত্রা শুরু করবেন। বিমানের প্রথম ফ্লাইটটি উদ্বোধন করবেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রী এ কে এম শাহজাহান কামাল, ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রী অধ্যক্ষ মতিউর রহমান বিমানবন্দরে উপস্থিত থেকে উদ্বোধনী ফ্লাইটের হজ্ব যাত্রীদের বিদায় জানাবেন। এ ফ্লাইটে ৪১৯ জন হজ্বযাত্রী নিয়ে জেদ্দার উদ্দেশে ঢাকা ছেড়ে যাবে। এবার বিমানের টিকিটের তারিখ কেউ পরিবর্তন করলে কিংবা বাতিল করলে সর্বোচ্চ ২শ ডলার পর্যন্ত জরিমানা দেয়ার বিধান করা হয়েছে।
জানা গেছে, আজ শনিবার ঢাকা থেকে হজ্ব ফ্লাইট ও নিয়মিত ফ্লাইট মিলিয়ে অন্তত ১০টি ফ্লাইটে হজ্বযাত্রীরা সৌদি আরবে পৌঁছবেন। তার মধ্যে বিমানের হজ্ব ফ্লাইট বিজি-৩০১১ সকাল ১১টা৫৫ মিনিটে, বিজি-৫০১১ বিকাল ৩টা ৫৫ মিনিটে এবং শিডিউল ফ্লাইট বিজি-০০৩৫ রাত ৮টা৪৫ মিনিটে জেদ্দার উদ্দেশে ঢাকা ছাড়বে। নির্ধারিত সময়ে ও নির্বিঘেœ হজ্ব-ফ্লাইট পরিচালনার সব প্রস্তুতি ইতোমধ্যেই সম্পন্ন করেছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স। এ বছর চট্টগ্রাম থেকে ১২টি এবং সিলেট থেকে ৩টি হজ্ব-ফ্লাইট পরিচালনা করা হবে। চট্টগ্রাম থেকে ২০ জুলাই হজ্ব ফ্লাইট শুরু হবে। তারপর ২২,২৩,২৭,২৮,২৯ ও ৩০ জুলাই এবং ৩,৭,৮,১০ ও ১২ আগস্ট চট্টগ্রাম থেকে ফ্লাইট যাবে জেদ্দা ও মদিনায়। হজ্ব ফ্লাইট শেষ হবে ১৫ আগস্ট। হজে¦র ফিরতি ফ্লাইট শুরু হবে ২৭ আগস্ট এবং শেষ হবে ২৫ সেপ্টেম্বর। বাংলাদেশ বিমান ১৮৭টি ফ্লাইটে ৬৪ হাজার ৯৬৭ জন হজ্বযাত্রী পরিবহণ করবে আর সাউদিয়া ১৮৮টি ফ্লাইটে ৬১ হাজার ৮৩১ হজ্বযাত্রী পরিবহন করবে।
ধর্ম মন্ত্রণালয় সূত্রমতে, চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ২১ আগস্ট পবিত্র হজ্ব অনুষ্ঠিত হবে। এ বছর পবিত্র হজ্ব পালনের জন্য বাংলাদেশ থেকে যাচ্ছেন এক লাখ ২৬ হাজার ৭৯৮ জন হজ্বযাত্রী। এর মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় যাবেন ছয় হাজার ৭৯৮ জন এবং বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজে যাবেন এক লাখ ২০ জন। বেসরকারি ব্যবস্থায় ৫২৮টি হজ্ব এজেন্সি হজ্ব কার্যক্রম পরিচালনা করছে।
এবছর হজ্ব ফ্লাইট ও শিডিউল ফ্লাইটে মোট ৬৩ হাজার ৫৯৯ (ব্যালটি ও নন-ব্যালটি) জন ধর্মপ্রাণ মুসলমান হজ্ব পালনে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স-এ জেদ্দা যাবেন। এই হজ্ব যাত্রীদের ঢাকা-জেদ্দা-ঢাকা রুটে পরিবহনের জন্য বিমানের ৪টি নিজস্ব বোয়িং ৭৭৭-৩০০ইআর উড়োজাহাজ প্রস্তুত রাখা হয়েছে। ঢাকা-জেদ্দা-ঢাকা রুটে চলাচলকারী বিমানের নিয়মিত শিডিউল ফ্লাইটেও হজ্ব যাত্রীরা পবিত্র ভূমিতে যাবেন। এবছর সৌদি সরকার নির্ধারিত বরাদ্দকৃত স্লটের বাইরে অতিরিক্ত কোনও ফ্লাইট পরিচালনার অনুমতি দেওয়া হবে না বলেও জানিয়েছে।
এদিকে আগামী ২৫ জুলাই থেকে ১০ আগস্ট পর্যন্ত সময়কালের বিভিন্ন ফ্লাইটে এখনও প্রায় ১২ হাজার হজ্ব টিকেট অবিক্রীত রয়েছে। এ কারণে বিমানের পক্ষ থেকে সব হজ্ব এজেন্সিকে হজ্বযাত্রীদের দ্রুত টিকেট সংগ্রহের অনুরোধ করা হয়েছে।
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স জানিয়েছে, প্রথমবারের মতো হজ্ব যাত্রীদের টিকেট কেনার পর যাত্রার তারিখ পরিবর্তনে ১০০ মার্কিন ডলার বা সমপরিমাণ টাকা এবং যাত্রা বাতিলের ক্ষেত্রে ২০০ মার্কিন ডলার বা সমপরিমাণ টাকার বাড়তি মাসুল আদায়ের বিধান চালু করা হয়েছে। ঢাকা থেকে জেদ্দা প্রতি ফ্লাইটের উড্ডয়নকাল হবে আনুমানিক ৭ ঘণ্টা।
প্রত্যেক হজ্ব-যাত্রী বিনামূল্যে সর্বাধিক দুটি ব্যাগে ৪৬ কেজি মালামাল বিমানে এবং কেবিন ব্যাগেজে ৭ কেজি মালামাল সঙ্গে নিতে পারবেন। কোনও অবস্থাতেই প্রতি প্রিস ব্যাগের ওজন ২৩ কেজির বেশি হতে পারবে না। প্রত্যেক হজ্বযাত্রীর জন্য ৫ লিটার জমজমের পানি ঢাকা/চট্টগ্রাম/সিলেট নিয়ে আসা হবে। হাজিরা ফেরত আসার পর তাদের তা বুঝিয়ে দেওয়া হবে। কোনও অবস্থাতেই হাজিরা সঙ্গে করে বিমানে পানি আনতে পারবেন না। যে কোনও ধারালো বস্তু যেমন ছুরি, কাঁচি, নেইল কাটার, ধাতব নির্মিত দাঁত খিলান, কান পরিষ্কারক, তাবিজ ও গ্যাস জাতীয় বস্তু যেমন এ্যারোসল এবং ১০০ (এম এল)-এর বেশি তরল পদার্থ হ্যান্ড ব্যাগেজে বহন করা যাবে না। কোনও প্রকার খাদ্যসামগ্রী সঙ্গে নেয়া যাবে না। বিমান কর্তৃক পরিচালিত ডেডিকেটেড হজ্ব-ফ্লাইটসমূহের চেক-ইন, ইমিগ্রেশন ও কাস্টমস আনুষ্ঠানিকতা প্রতিবারের মতো এবারও হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সংলগ্ন আশকোনা হজ্ব ক্যাম্পেই সম্পন্ন করা হবে।