রাষ্ট্রীয় প্রয়োজন ছাড়াই সাধারণ মানুষের কললিস্ট ও লোকেশন চলে যাচ্ছে দুর্বৃত্তদের হাতে!
খুলনা অফিস : খুলনায় মোবাইল ব্যবহারকারীরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। সরকারি প্রয়োজন ছাড়াই যে কোনো সাধারণ মানুষের মোবাইল নম্বর ট্রাকিং, কললিস্ট ও লোকেশন অনায়াসে দুর্বৃত্তরা পেয়ে যাচ্ছেন। এ সকল সমস্যার কারণে অনেকে সিম পাল্টে নতুন সিম ব্যবহার করে এ চক্রের হাত থেকে রক্ষার চেষ্টা করছেন। এ নিয়ে সংশ্লিষ্ট অপারেটর কোম্পানিকে মৌখিকভাবে অভিযোগ করেও কোনো প্রতিকার পাচ্ছে না ভুক্তভোগীরা। তবে, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কিছু কিছু সদস্যের মাধ্যমেও কেউ কেউ মোবাইল কোম্পানির কাছ থেকে এ ধরনের তথ্য পেয়ে যাচ্ছে। বিশেষ করে রাষ্ট্রীয় কোন বিশেষ প্রয়োজন ও মামলার তদন্ত কাজে এ প্রযুক্তির ব্যবহার হলেও এখন তা অধিকাংশ ক্ষেত্রে ব্যবহার করছে দুর্বৃত্তরা।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, খুলনার অনেক সাধারণ ব্যবসায়ী, পেশাজীবী ও গৃহিনীর মোবাইল নম্বরের কললিস্ট ও লোকেশন ট্রাকিং করা হয়েছে। এ সকল কারণে বিভিন্ন সময়ে সংশ্লিষ্ট মোবাইল অপারেটর কোম্পানিগুলোতে মৌখিক অভিযোগও করা হয়েছে। তবে কোনো সুরাহা পাননি ওই সকল ভুক্তভোগীরা। বাধ্য হয়ে তাদের অনেকেই মোবাইল নম্বর পাল্টে নতুন নম্বর ব্যবহার করছেন। তাছাড়া অনেকে সিম পাল্টেও নিস্তার পাচ্ছেন না। তাদের ব্যবহৃত মোবাইল সেটের আইএমই নম্বর সার্চ দিয়ে নতুন সিমের নম্বরও বের করে নেয়া হচ্ছে। পৃথক পৃথকভাবে এ সকল মানুষের অভিযোগগুলো শুনে মনে হয় এ প্রযুক্তির বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের ঘাড়ে স্বজনপ্রীতি ভর করেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই সকল ভুক্তভোগীরা জানান, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কিছু সদস্য অকারণেই স্বজনপ্রীতির জন্য এ ধরনের কাজে দুর্বৃত্তদের সহায়তা করেন। এছাড়া মোবাইল সিম কোম্পানির কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারীর মাধ্যমে এ গোপনীয়তা অকারণে প্রকাশ হচ্ছে। এ ধরনের কর্মকাণ্ডের বিষয়ে প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট সিম অপারেটর কোম্পানির উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়।
খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (মিডিয়া) সোনালী সেন বলেন, কোনো ব্যক্তির মোবাইল নম্বরের বিস্তারিত তথ্য অবৈধভাবে নেয়া দ-নীয় অপরাধ। যদি কেই এ ধরনের অপরাধ করে থাকে অবশ্যই আইন বহির্ভূত কাজ করছেন। এ ধরনের ভুক্তভোগীদের সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ও প্রমাণাদিসহ কেএমপি বরাবর লিখিত অভিযোগের পরামর্শ দিয়েছেন এ পুলিশ কর্মকর্তা। এছাড়া এ ধরনের অপরাধের সাথে যে কেউ জড়িত থাকলে তাকেও আইনের আওতায় আনার আশ্বাস দেন তিনি।
এ ব্যাপারে খুলনা জেলার পুলিশ সুপার এস এম শফিউল্লাহ বলেন, যে কোনো ক্রিমিনাল অফেন্স’র ক্ষেত্রে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা এ প্রযুক্তির ব্যবহার করতে পারে। কিন্তু ব্যক্তিগত প্রয়োজনে যে কেউ এ প্রযুক্তি ব্যবহার করা অপরাধ। এ ধরনের সমস্যার শিকার হলে সংশ্লিষ্ট থানায় জিডিসহ মামলার পরামর্শ দেন তিনি। তাছাড়া মোবাইল সিম অপারেটর কোম্পানিগুলো এ ধরনের কর্মকা-ে জড়িত থাকলে তার দায় এড়াতে পারেন না বলেও জানান তিনি।