শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪
Online Edition

দারুণ জয়ে শুরু টাইগারদের ওয়ানডে সিরিজ

স্পোর্টস রিপোর্টার : ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে টেস্ট সিরিজে হারলেও ওয়ানডে সিরিজে জয় দিয়ে শুরু করেছে বাংলাদেশ। প্রথম ম্যাচেই বাংলাদেশ ৪৮ রানের বিশাল ব্যবধানে হারিয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে। এই জয়ের ফলে তিন ম্যাচ ওয়নডে সিরিজে ১-০ বববধানে এগিয়ে আছে টাইগাররা। টেস্টে ব্যর্থতার পর ওয়ানডে সিরিজে ভালো করার টার্গেট ছিল মাশরাফিদের। অবশ্য প্রথম ম্যাচেই সেটা প্রমাণ করেছে বাংলাদেশ দল। আর এই সময়ে এই জয়টা দারুণ দরকার ছিল দলের জন্য। এখন সিরিজ জিততে মাশরাফিদের দরকার একটি জয়। প্রথম ম্যাচে দলের হয়ে সেঞ্চুরি করেছেন তামিম ইকবাল। তার সেঞ্চুরি দলের জয়ের পথ সহজ করেছে। আর মাত্র তিন রানের জন্য সেঞ্চুরি পাননি সাকিব। তামিম-সাকিবের অসাধারণ একটি পার্টনাশীপে প্রথম থেকেই এই ম্যাচে এগিয়ে ছিল মাশরাফিরা। অবশ্য ওয়ানডে সিরিজের প্রথম ম্যাচেই তারুণ ব্যাটিং-বোলিং করেছে বাংলাদেশ। আগে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই উইকেট হারানোর পর তামিম ইকবাল ও সাকিব আল হাসানের অসাধারণ জুটিতে ৪ উইকেটে ২৭৯ রান করেছিল তারা। এরপর বোলারদের নৈপুণ্যে, বিশেষ করে মাশরাফি মুর্তজার দুরন্ত বোলিংয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ৯ উইকেটে ২৩১ রানে বেধে দেয় বাংলাদেশ। ৪৮ রানে প্রথম ওয়ানডে জিতে তিন ম্যাচের সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেল টাইগাররা। ব্যাটিংয়ে তামিম-সাকিবের দুর্দান্ত পারফরম্যান্সের পর বল হাতে দারুণ ভূমিকা রাখেন মাশরাফি। মোস্তাফিজুর রহমানের চতুর্থ ওভারে জোড়া আঘাতের পর টানা ৩ ওভারে তিনটি উইকেট নেন বাংলাদেশের অধিনায়ক। ১০ ওভারে ১ মেডেনসহ ৩৭ রান দিয়ে ৪ উইকেট নেন বাংলাদেশের অধিনায়ক মাশরাফি। জয়ের জন্য ওয়েস্ট ইন্ডিজের সামনে টার্গেট ছিল ২৮০ রার। তবে এই রান করে ম্যাচ জয় করতে পারেনি দলটি। দলের হয়ে বোলিং শুরু করেন মাশরাফি ও মহেদী হাসান মিরাজ। তাদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে সাবধানি ব্যাটিং করেন দুই ওপেনার ক্রিস গেইল ও এভিন লুইস। তবে নবম ওভারের চতুর্থ বলে মিড অফে লুইসকে ১৭ রানে ফিরান মাশরাফি। আর মাত্র ৬ রানে রুবেল হোসেনের কাছে এলবিডাব্লিউ হন শাই হোপ। ৪১ রানের মধ্যে ২ উইকেট হারানো ক্যারিবিয়ানদের এগিয়ে নিতে থাকেন ক্রিস গেইল। অবশেষে মাহমুদউল্লাহ ও মোসাদ্দেক হোসেনের যোগসাজশে নন-স্ট্রাইকে থাকা এই ওপেনার রান আউট হন। মোসাদ্দেকের করা বলটি শিমরন হেটমায়ার ঠেকালে শর্ট থার্ড ম্যানে দাঁড়ানো মাহমুদউল্লাহর হাতে বল যায়। ততক্ষণে ক্রিজের অর্ধেক পার হয়ে যান গেইল। হেটমায়ার তার জায়গা থেকে বের না হওয়ায় উল্টো ফিরে আসেন তিনি। তার আগেই মাহমুদউল্লাহর থ্রো থেকে বল হাতে নিয়ে স্টাম্প ভেঙে দেন মোসাদ্দেক। হাফসেঞ্চুরি থেকে মাত্র ১০ রান দূরে থাকতে আউট হন গেইল। কিন্তু এদিন তিনি চিরচেনা রূপে ছিলেন না। ৬০ বলে ১ চার ও ২ ছয়ে ৪০ রান করেন ৩৮ বছর বয়সী এই বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। জেসন মোহাম্মদকে স্টাম্পিংয়ে ফেরালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের চতুর্থ উইকেট পান মিরাজ। কিন্তু তারপর  হেটমায়ার ও  জেসন হোল্ডার ক্রিজ আঁকড়ে দাঁড়িয়ে যান। মোস্তাফিজ ৩৬তম ওভারে জোড়া আঘাত হেনে এই জুটি ভেঙে দলকে জয়ের পথে ফেরান। ৫২ রান করে হেটমায়ার ক্যাচ দেন সাকিব আল হাসানকে। পরের বলে রভম্যান পাওয়েলকে মুশফিকুর রহিমের ক্যাচ বানান বাঁহাতি পেসার। তারপর নিজের শেষ তিন ওভারে মাশরাফি ফেরান হোল্ডার (১৭), আন্দ্রে রাসেল (১৩) ও অ্যাশলে নার্সকে (৭)। ১৭২ রানে ৯ উইকেট হারানো ক্যারিবিয়ানরা তারপরও প্রতিরোধ গড়েছিল দেবেন্দ্র বিশু ও আলজারি জোসেফের জুটিতে। তাদের ৫৯ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটিতে বাংলাদেশের বিপক্ষে অলআউট হতে হয়নি স্বাগতিকদের। টসে জিতে আগে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই এনামুল হককে হারিয়ে হোঁচট খায়। তবে সাকিব ও তামিমের ২০৭ রানের অসাধারণ জুটিতে লড়াই করার মতো স্কোর করে তারা। তামিম ১৩০ রানে অপরাজিত ছিলেন। ম্যাচসেরাও হয়েছেন এই ওপেনার। মাত্র ৩ রানের জন্য সেঞ্চুরি করতে পারেননি সাকিব। ৯৭ রানে আউট হন তিনি। শেষ দিকে মুশফিকের ১১ বলে ৩০ রানের ঝড় দারুণ অবদান রাখে। টেস্টে হোয়াইটওয়াশ হওয়ার পর বাংলাদেশের আত্মবিশ্বাস ফেরাতে এই জয় খুবই প্রয়োজনীয় ছিল। ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে আসার আগে সাকিবরা আফগানিস্তানের কাছে টি-টোয়েন্টি সিরিজ হেরেছিল। তবে ওয়ানডেতে ঠিকই সেই চিরচেনা রূপে ফিরল বাংলাদেশ। আগামীকাল বুধবার সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে মুখোমুখি হবে দুই দল।

সংক্ষিপ্ত  স্কোর:

বাংলাদেশ: ৫০ ওভারে ২৭৯/৪ (তামিম ১৩০*, এনামুল ০, সাকিব ৯৭, সাব্বির ৩, মুশফিক ৩০, মাহমুদউল্লাহ ৪*; রাসেল ১/৬২, হোল্ডার ১/৪৭, জোসেফ ০/৫৭, নার্স ০/৩৯, বিশু ২/৫২, জেসন ০/১৫)।

ওয়েস্ট ইন্ডিজ: ৫০ ওভারে ২৩১/৯ ( গেইল ৪০, লুইস ১৭, হোপ ৬, হেটমায়ার ৫২, জেসন ১০, হোল্ডার ১৭, পাওয়েল ০, রাসেল ১৩, নার্স ৭, বিশু ২৯*, জোসেফ ২৯*; মাশরাফি ৪/৩৭, মিরাজ ১/৩৭, রুবেল ১/৫২, মোসাদ্দেক ০/২২, মুস্তাফিজ ২/৩৫, সাকিব ০/৪৩)

ফল: বাংলাদেশ ৪৮ রানে জয়ী

সিরিজ: ৩ ম্যাচ সিরিজে বাংলাদেশ ১-০তে এগিয়ে

ম্যান অব দা ম্যাচ: তামিম ইকবাল।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ