ইসরাইলী শাসকদের মধ্যে হিটলারের আত্মা পুনর্জন্ম নিয়েছে-----------এরদোগান
২৫ জুলাই, জেরুসালেম পোস্ট, আনাদলু এজেন্সি : ইসরাইলের বিতর্কিত ‘নেশন-স্টেট’ বিলের সমালোচনা করে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তৈয়ব এরদোগান বলেছেন, এর উদ্দেশ্য নিপীডনকে বৈধতা দেযা। এটি প্রমাণ করে যে ইসরাইল একটি ফ্যাসিবাদী ও বর্ণবাদী রাষ্ট্র যেখানে অ্যাডলফ হিটলারের আত্মা পুনর্জন্ম নিয়েছে। গত মঙ্গলবার পার্লামেন্টে ক্ষমতাসীন এক পার্টির সদস্যদের উদ্দেশ্য দেয়া ভাষণে এরদোগান এসব কথা বলেন।
আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে ইসরাইলের বিরুদ্ধে একত্রিত হওয়ার আহ্বান জানিয়ে এরদোগান বলেন, ‘এই আইনের পাসের মাধ্যমে এটা প্রমাণিত হলো যে ইসরাইল বিশ্বের সবচেযে জায়নিস্ট, ফ্যাসিবাদী ও বর্ণবাদী একটি দেশ।’
তিনি বলেন, ‘ইসরাইলী পার্লামেন্ট ‘ইহুদি জাতীয়-রাষ্ট্র’ আইন পাস করে দেশটি তার প্রকৃত উদ্দেশ্য বিশ্ববাসীর সামনে উন্মোচন করে দিয়েছে। আর এই উদ্দেশ্য হচ্ছে- তাদের সব বেআইনি কাজ এবং নিপীডনকে বৈধতা দেয়া। হিটলারের চিন্তা-চেতনা এবং ইসরাইলের মানসিকতার মধ্যে কোনও পার্থক্য নেই। হিটলারের আত্মা ইসরাইলের প্রশাসকদের মধ্যে পুনরায আবির্ভূত হযেেছ।’
‘ইহুদি জাতীয়-রাষ্ট্র’ বিলটি পাসের মাধ্যমে ইসরাইলকে একটি ইহুদি রাষ্ট্র হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। গত সপ্তাহে বিলটি ইসরাইলী পার্লামেন্ট ‘নেসেটে’ এটি পাস করা হয়। এরদোগান তার ভাষণে আরো বলেন, ফিলিস্তিনীদের ওপর ট্যাঙ্ক ও আর্টিলারি দিযে আক্রমণ করে ইসরাইল নিজেই নিজেকে ‘সন্ত্রাসী রাষ্ট্র’ হিসেবে বিশ্বের কাছে তুলে ধরেছে। সন্ত্রাসী দেশটির এই পদক্ষেপ এই অঞ্চল ও বিশ্বকে রক্ত ও যন্ত্রণায ডুবিয়ে দিয়েছে।’
গত ১৫ মে মাসে জেরুসালেমে মার্কিন দূতাবাস স্থানান্তরের দিন গাজা সীমান্তে ইসরাইলী বাহিনীর হামলায় প্রায় ৬৫ জন ফিলিস্তিনী নিহতের ঘটনায় সৃষ্ট দ্বন্দে¦ তুরস্ক ও ইসরাইল একে অপরের শীর্ষ কূটনীতিকদের বহিষ্কার করে। যাইহোক, উভয পক্ষ পরস্পরের সঙ্গে ব্যবসা অব্যাহত রেখেছে।
ফিলিস্তিন এবং জেরুসালেমের অবস্থা সম্পর্কে ইসরাইলের নীতি নিয়ে উভয দেশের দীর্ঘদিনের দ্বন্দ্ব চলছে।
ফিলিস্তিনীদের সহযোগিতার শীর্ষে তুরস্ক : তুরস্ক ফিলিস্তিনীদের মানবিক সহযোগিতার শীর্ষে বলে জাতিসংঘের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে। তুরস্ক দেশটিকে বিভিন্নভাবে সহায়তা দানে সদা প্রস্তুত ও অগ্রে রয়েছে বলে দেশটির পক্ষ থেকেও দাবি করা হয়েছে। ফিলিস্তিনীদের জন্য মানবিক সহায়তায় তুরস্কের অবদান শুধু জাতিসংঘের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয় বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের মানবিক সহায়তা সংস্থা (ইউএনআরডব্লিউএ)।
ইউএনআরডব্লিউএ এর মাধ্যমে ফিলিস্তিনীদের জন্য সহায়তা প্রদান কার্যক্রমে যুক্ত আছে কাতার, যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, নিউজিল্যান্ড, নরওয়ে, কোরিয়া, মেক্সিকো ও তুরস্কসহ অন্তত ১২টি দেশ। তার মধ্যে বিভিন্নভাবে সহায়তা প্রদান করে তুরস্ক সহায়তাকারীদের শীর্ষস্থান দখল করে নিয়েছে। আঙ্কারা জাতিসংঘের সহায়তা ফাণ্ডে প্রায় ৮৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার প্রদান করেছে বলে ইউএনআরডব্লিউএ দাবি করেছে।
অন্যদিকে জেরুসালেমকে ইসরাইলের রাজধানী করাকে কেন্দ্র করে মার্কিন নীতির বিরোধিতা করায় অন্তত ৬৫মিলিয়ন ডলারের সহায়তা স্থগিত করেছে যুক্তরাষ্ট্র। তাই তাদের প্রতিশ্রুত অর্থ প্রদান ও ফিলিস্তিনীদের প্রতি মার্কিন সহায়তা বৃদ্ধির আহ্বান জানিয়েছে তুরস্ক।