মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪
Online Edition

রাষ্ট্রদূত বার্নিকাটের গাড়িতে হামলার তদন্তভার যাচ্ছে ডিবিতে

স্টাফ রিপোর্টার : ঢাকার মোহাম্মদপুরে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত মার্শা বার্নিকাটের গাড়িতে হামলার তদন্তভার গোয়েন্দা পুলিশের হাতে যাচ্ছে। মহানগর পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের উপ কমিশনার বিপ্লব কুমার সরকার এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, “ওই ঘটনায় সুজন সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার যে সাধারণ ডায়েরি করেছেন, তার তদন্তভার গোয়েন্দা পুলিশের কাছে হস্তান্তরের বিষয়ে দুয়েক দিনের মধ্যে পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।”
এর পাশাপাশি মহানগর পুলিশ ওই ঘটনার ছায়া তদন্তে থাকবে জানিয়ে তিনি বলেন, “আমরা তদন্ত করে বেশ কিছু তথ্য পেয়েছি। তবে তদন্তের স্বার্থে সেসব তথ্য বলা সম্ভব নয়।”
শনিবার রাতে ঢাকার মোহাম্মদপুরের ইকবাল রোডে ‘সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন)’ এর সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদারের বাড়িতে নৈশভোজ করে বের হওয়ার সময় হামলার মুখে পড়ে যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের গাড়ি। ওই সময় বদিউল আলম মজুমদারের বাড়িতেও ঢিল ছোড়া হয়। পুরো ঘটনা নিয়ে তিনি পরে থানায় জিডি করেন।
 রোববার যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের এক বিবৃতিতে বলা হয়, “ মোটরসাইকেল আরোহীসহ একদল সশস্ত্র লোক শনিবার মোহাম্মদপুর এলাকায় ঢাকায় নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূতকে বহনকারী দূতাবাসের একটি গাড়ি লক্ষ্য করে হামলা চালায়।”
হামলায় কারও কোনো ক্ষতি হয়নি জানিয়ে বিবৃতিতে বলা হয়, “রাষ্ট্রদূত ও তার নিরাপত্তায় নিয়োজিত দল অক্ষত অবস্থায় ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন। তবে রাষ্ট্রদূতের নিরাপত্তা দলের দুটি গাড়ির কিছুটা ক্ষতি হয়েছে।”
এদিকে পুলিশের একজন কর্মকর্তা বলেন, বদিউল আলম মজুমদারের বাসায় সেই নৈশ ভোজে ড. কামাল হোসেন, দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য, এম হাফিজউদ্দিন খান, বিচারপতি আব্দুর রউফসহ বেশ কয়েকজন উপস্থিত থাকলেও জিডিতে কেবল বার্নিকাটের নাম উল্লেখ করা হয়েছে।
তদন্ত সংশ্লিষ্ট একজন পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, “শুধু বার্নিকাটের নাম দেওয়ার পেছনে অন্য কোনো বিষয় আছে কিনা- তাও তদন্তে আসবে। তাছাড়া ওই বাসায় মার্কিন রাষ্ট্রদূতের যাওয়ার বিষয়ে পুলিশকে না জানানোর কারণও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। “
এ সব বিষয়ে ইতোমধ্যে বেশ কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে বলে জানান ওই পুলিশ কর্মকর্তা। তবে পুলিশ ঘটনাস্থলের আশপাশের কোনো সিসি ক্যামেরার ফুটেজ এখন পর্যন্ত পায়নি বলে জানান তিনি।
এদিকে বদিউল আলম মজুমদার গতকাল মঙ্গলবার কাছে দাবি করেন, পুলিশ ‘মিথ্যা তথ্য দিয়ে অপপ্রচার’ চালাচ্ছে। “ওই পারিবারিক অনুষ্ঠানে দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য, বিচারপতি আব্দুর রউফ আসেননি। তাদের আসার কথাও ছিল না। পারিবারিকভাবে যারা আমাদের ঘনিষ্ঠ, তারাই এসেছিলেন। এটা ছিল মার্শা বার্নিকাটের জন্য বিদায়ী নৈশভোজের আয়োজন।” তিনি বলেন, গত মাসের ৯ জুলাই এ অনুষ্ঠানের তারিখ ঠিক হয়। আমন্ত্রিতদের তালিকাও মার্কিন দূতাবাসে জানিয়ে দেওয়া হয়।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “স্থানীয় থানা পুলিশকে এগুলো জানানো আমার দায়িত্ব নয়। বার্নিকাটের নিরাপত্তার বিষয়টি ডিপ্লোমেটিক সিকিউরিটি দেখে। তারাই ভাল বোঝে। স্থানীয় পুলিশ এখানে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে।”
বদিউল আলম অভিযোগ করেন, হামলার রাতের পর তিনি থানায় অভিযোগ করলেও পুলিশ এখন পর্যন্ত নিরাপত্তার কোনো ব্যবস্থা করেনি।
এ ব্যাপারে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে পুলিশের ডিপ্লোমেটিক সিকিউরিটি বিভাগের উপ কমিশনার হায়াতুল ইসলাম খান বলেন, রাষ্ট্রদূত বার্নিকাটের সঙ্গে ৮ থেকে ১০ জন পুলিশ সদস্যের একটি টিম সব সময় থাকে। রাষ্ট্রদূত যেখানে যান, তাদের সঙ্গে নিয়ে যান। “অনেক সময় উনার ব্যক্তিগত কিছু কর্মসূচি থাকে। এটার কোনোটি তিনি বলেন, কোনটি বলেন না। যেখানে বলেন- সেখানে অতিরিক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হয়। মোহাম্মদপুরে যাবেন এমন তথ্য আমাদের দেননি। ফলে বাড়তি কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। “তার সঙ্গে কেবল সার্বক্ষণিক টিমই ছিল। তবে ওই টিমের পুলিশ সদস্যরা ঘটনার সময় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়েছে। তাদের এই কাজের জন্য দূতাবাস থেকে প্রশংসাও করেছে।”

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ