বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪
Online Edition

নারীর সামগ্রিক অবস্থা-কিছু পর্যালোচনা

শামসুন্নাহার নিজামী : কোথা থেকে শুরু করব জানি না। নারীদের থেকে না পুরুষদের থেকে। একটা পাখির যেমন দুইটা ডানার খুব গুরুত্বপূর্ণ একটা ডানা ছাড়া তার পক্ষে আরেকটা ডানা দিয়ে উড়া সম্ভব নয় তেমনি সমাজে নারী পুরুষ সবাই গুরুত্বপূর্ণ। নারী ছাড়া যেমন সমাজ চলে না তেমন পুরুষবিহীন সমাজও অকল্পনীয়। কাজেই একটা সুস্থ সুন্দর ভারসাম্যপূর্ণ সমাজ গঠনে নারী পুরুষ উভয়ের ভূমিকা সমানভাবে গুরুত্বপূর্ণ।
অতীতের কিছু অন্যায় অবিচার  সর্বোপরি সামাজিক বৈষম্যের কারণে নারী সমাজ বিষেশ করে মুসলিম নারীরা শিক্ষায় দীক্ষায় পিছিয়ে আছে। প্রচলিত শিক্ষায় অবশ্যই আমারে জনগোষ্ঠীকে (নারী গুরুত্ব নিবির্শেষ) শিক্ষা গ্রহণ করতে হবে। এটা জরুরী। এই জরুরীয়তাকে সামনে রেখেই রাসূল (স.) বলেছেন: “নারীর পুরষ সবার জ্ঞার্নাজন করা ফরজ।” কিন্তু আমরা জ্ঞার্নাজন বলতে কী বুঝি? স্কুল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় শেষ করে P.Hd ডিগ্রি শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হওয়া? নাকি parlament member হওয়া? নাকি prime minister বা Speaker হওয়া? নাকি বিচারপতি হওয়া? কোনটা? আমি অস্বীকার করছি না যে যার যোগ্যতা আছে সে নারী হোক পুরুষ হোক যে কোন কাজ করতে পারে। কিন্তু মেয়েদের Special কিছু কাজ আছে। যা তাদের শারীরিক গঠনের মধ্যেই আল্লাহ দিয়ে দিয়েছেন। এটা লঙ্ঘন করা বা অস্বীকার করার কারও উপায় না। মা হওয়ার যোগ্যতা যেমন নারীরই আছে। সন্তান ধারন, পালন, দুগ্ধ প্রদান মা ছাড়া কেউই করতে পারবে না। পুরুষ এসব কাজে অসমর্থ। পক্ষান্তরে একজন মেয়ে বাইরে কাজ করতে সম্পূর্ণ সক্ষম। এই অবস্থায়ে সামনে রেখেই নারী পুরুষের স্রষ্টা আল্লাহ রাবুল আলামীন কাজের সীমারেখা দিয়ে দিয়েছেন। নারীরা নবী হয়নি। নারীরা ইমাম হতে পারবে না। র্কমবন্টন বা division of labour সব জায়গাতেই আছে। থাকতে হয়। একটা অফিস চালাতে গেলে যেমন এক্সিকিউটিভ পোষ্ট কর্মকর্তা কর্মচারী থাকতে হয়। তেমন পিয়ন দারোয়ান ঝাড়ুদার লাগে। সবারই যার যার মত প্রশিক্ষণ নিতে হয়। একটা সংসার চালাতে গেলেও বিভিন্ন nature এর কাজ থাকে। সন্তান লালন-পালন. সাংসারিক নানাবিধ কার্যক্রম এখানে একটা গুরুত্বপূর্ণ অংশ একটি মেয়ে যখন বিবাহের মাধ্যমে একটা সংসারে প্রবেশ করে পর সংসার করার জ্ঞান অবশ্যই থাকতে হবে। তাকে থাকতে হবে সাংসারিক দায়িত্ব কর্তব্য সম্পর্কে। শুধু P.Hd বা বড় ডিগ্রির জ্ঞান দিয়ে সংসার পরিচালনা সম্ভব নয়। অবশ্য অনেকেই আইকিউ বা বুদ্ধিবিচক্ষতা দিয়ে ব্যালেন্স করে নেয়।
কাজেই শিক্ষা মানে শুধু প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা নয় বরং শিক্ষা মানে যার যার ক্ষেত্রে সঠিক ভূমিকা পালন করার জন্য দক্ষ বা যোগ্য হওয়া। এক্ষেত্রে আমাদের মূলনীতি সামনে রাখতে হবে। আমরা মুসলমান। আল্লাহর বান্দাহ। আল্লাহর প্রতিনিধি হিসেবে দুনিয়াতে আমাদেরকে আল্লাহ পাঠিয়েছেন নারী পুরুষ নির্বিশেষে সবারই খেলাফায়ের দায়িত্ব পালন করতে হবে। এই দায়িত্ব পালনের জন্যই জ্ঞার্নাজন ফরজ করে দেওয়া হয়েছে। ‘পড়’। অর্থাৎ জ্ঞার্নাজন কর। কিন্তু রাসুল (স:) প্রতিষ্ঠানিক পড়াশুনা করেন নি। আবার আবু জেহেল  তৎকালীন সমাজে আবুল হাকাম অর্থাৎ জ্ঞানীদের পিতা হিসাবে পরিচিত হলেও ইসলামী সমাজে সে ছিল মুর্খের পিতা হিসেবে পরিচিত। কাজেই কি শিক্ষায় শিক্ষিত হবে এটা জুরুরী। মুসলমান হিসাবে ইসলামের মৌলিক শিক্ষা অর্থাৎ ফরজ, ওয়াজিব হালাল-হারাম এবং র্শিক, বিদায়াত এগুলো অবশ্যই জানতে হবে। এর পর প্রয়োজনীয় শিক্ষা গ্রহণ করতে হবে। যেমন একজন চিকিৎসক হতে হবে। চিকিৎসকের জন্য এই জ্ঞার্নাজন ফরজ। তেমনি একজন সমাজ বিজ্ঞানীকে বা শিক্ষককে তার নিজস্ব ক্ষেত্রে জার্নাজন করতে হবে। এই জ্ঞার্নাজনের মাধ্যমে যখন সে দান করবে তথা খেদমতে বা সৃষ্টির কল্যাণের জন্য কাজ করবে তখন এটা হবে তার জন্য হাক্কুল ইবাদত। ঠিক তেমনি সংসার বিদ্যা যেমন পুরুষের শিখতে হবে নারীরও শিখতে হবে।
প্রশ্ন আসে বাল্য বিবাহের ব্যাপারে। বিবাহের বিয়ষটা হচ্ছে একটা সমাজকে পাক পবিত্র রাখার জন্য নিয়মের মধ্যে মানুষকে চলার পথ । মানুষকে আল্লাহ তৈরি করেছেন। তিনি মানুষের Nature জানেন। তাই বৈধ উপায়ে তাকে জীবন যাপনের ব্যবস্থা আল্লাহ করে দিয়েছে। পুরুষ এবং নারী প্রাপ্ত বয়স্ক হলে তার বিয়ে দেওয়া অভিভাবকের দায়িত্ব। যদি কারও বিয়ে হতে স্বাভাবিকভাবে দেরী হয় সে হতেই পারে। আবার কারও অল্প বয়সে বিয়ে হতে পারে। কিন্তু বর্তমানে বিয়ে বর্হিভূত যে অবাধ যৌনতা এটা অন্যায়। সমাজকে কলুষিত করে। কাজেই যখন বিয়ে হবে এটা নির্ভর করে পারিপার্শ্বিকতাসহ আরও অনেক Factor এর উপর। শিক্ষার গুরুত্ব যারা বুঝে তারা শ্বশুর বাড়ীতে গেলেও পড়বে।
এগুলো ইসলামী  সমাজের জন্য। মৌলিক প্রয়োজন হলো ইসলামী  সমাজ প্রতিষ্ঠা। আল্লাহর দ্বীন কায়েম। এবং সে সমাজের নাগরিকগণকে (পুরুষ নারী নির্বিশেষে) আল্লাহর বান্দাহ হিসাবে আল্লাহর দেওয়া বিধি নিষেধ মেনে চলতে হবে। আখেরাতের জীবনই একমাত্র জীবন। দুনিয়ার ক্ষণস্থায়ী জীবনের মোকাবেলায় সেটাকে প্রাধান্য দিতে হবে।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ