শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪
Online Edition

কাক্সিক্ষত উন্নয়ন অর্জন করতে হলে বাংলাদেশকে আরো অনেক দূর যেতে হবে - প্রধানমন্ত্রী

সংগ্রাম ডেস্ক : দেশের দারিদ্রের হার ৪০ শতাংশ থেকে ২১ শতাংশে নামিয়ে আনাকে তাঁর সরকারের বৃহৎ সাফল্য আখ্যায়িত করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, কাক্সিক্ষত উন্নয়ন অর্জন করতে হলে বাংলাদেশকে আরো অনেক দূর যেতে হবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের উন্নয়নের এধারাকে অব্যাহত রাখতে হবে এবং গ্রামীণ জনপদের ভাগ্যবঞ্চিত জনগণের ভাগ্যের পরিবর্তন ঘটাতে হবে।’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গতকাল বৃহস্পতিবার গণভবন থেকে এলজিআরডি মন্ত্রণালয়ের আওতায় ২০টি জেলার ৩৩টি উন্নয়ন প্রকল্পের একযোগে উদ্বোধনকালে প্রদত্ত ভাষণে একথা বলেন। তিনি এসময় ৫টি জেলার সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে সংযুক্ত থেকে তাদের স্থানীয় জনগণের সঙ্গেও মতবিনিময় করেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের যে লক্ষ্য ছিল, দরিদ্র্য সীমাকে ২১ ভাগে নামিয়ে এনে আমরা দারিদ্র হ্রাসে সাফল্য অর্জন করেছি। বাংলাদেশের মানুষের আয় বৃদ্ধি পেয়েছে, আমরা সকলের বেতন-ভাতা বৃদ্ধি করেছি, সবদিক থেকে মানুষ যেন ভালভাবে বাঁচতে পারে তার ব্যবস্থা করেছি।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘দিন বদলের যাত্রা শুরু হয়েছে এবং তা এগিয়ে যাচ্ছে।’

২৩ বছরের সংগ্রাম ও ৯ মাসের মুক্তিযুদ্ধও বিজয়ের মাধ্যমে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আমাদের স্বাধীনতা এনে দিয়েছেন এবং সাড়ে ৩ বছরের মধ্যে তিনি একটি যুদ্ধ বিধ্বস্থ প্রদেশকে দেশ হিসেবে গড়ে তুলে দেশের উন্নয়নের যাত্রা শুরু করেছিলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, কিন্তুু আমাদের দুর্ভাগ্য যে, স্বাধীনতা বিরোধী চক্র যারা বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের মহান বিজয়কে মেনে নিতে পারেনি তাদের চক্রান্তে জাতির পিতাকে ’৭৫ এর ১৫ আগস্ট নির্মমভাবে হত্যা করা হয় এবং বাঙালি জাতি তাদের জীবন মান উন্নত করার সকল সম্ভবনাকে হারিয়ে ফেলে। ২১ বছর পর ক্ষমতায় এসে আওয়ামী লীগ সবসময় চেষ্টা করেছে জাতির পিতা যে স্বপ্ন নিয়ে বাংলাদেশ স্বাধীন করেছিলেন সেই স্বপ্ন পূরণ করা।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলার মানুষকে একটি উন্নত জীবন দান করাই ছিল তাঁদের লক্ষ্য। যে লক্ষ্য বাস্তবায়নেই তাঁর সরকার একের পর এক জনমুখী প্রকল্প বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে।

৩৩টি প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে- ৭টি সেতু ও কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলায় টেকনাফ-মিয়ানমার ট্রানজিট ঘাটে ৫৫০ মিটার দীর্ঘ জেটি, নারী ও শিশুদের প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা প্রদানের লক্ষ্যে ৬ তলা বিশিষ্ট ৬টি নগর মাতৃসদন ভবন এবং ৩ তলা বিশিষ্ট ১০টি নগর স্বাস্থ্যকেন্দ্র এবং ৯টি উপজেলা কমপ্লেক্স ভবন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, যে উন্নয়নের কাজগুলি আমরা সম্পন্ন করেছি সেগুলি রক্ষণারেক্ষণ করা এবং সঠিকভাবে যেস ব্যবহার হয় সেদিকে বিশেষভাবে আপনারা যতœবান হবেন সেটাই আমি চাই।

এলজিআরডি এবং সমবায় মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার খন্দোকার মোশাররফ হোসেন এবং স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব ড. জাফর আহমেদ খান অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন এবং মুখ্য সচিব মো. নজিবুর রহমান ভিডিও কনফারেন্সটি সঞ্চালনা করেন।

কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলায় টেকনাফ-মিয়ানমার ট্রানজিট ঘাটে ৫৫০ মিটার দীর্ঘ জেটি নির্মাণ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এখানে জেটি নির্মাণ হওয়ায় মানুষকে আর কাদা পানি মাড়িয়ে যেতে হবে না। সুন্দরভাবে জেটিতে নামতে পারবেন এবং ব্যবসা-বাণিজ্য পরিচালনা বা পর্যটকরাও যাতায়াত করতে পারবেন।

 দেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিনের প্রতি তাঁর সরকারের দৃষ্টি রয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী স্মরণ করেন, এখানেই তিনি প্রথমবারের মত তাঁর আশ্রয়ণ প্রকল্পের আওতায় ৭০টি পরিবারকে পুনর্বাসিত করেছিলেন।

৯টি উপজেলা কমপ্লেক্সের সম্প্রসারিত হল। সেগুলো হচ্ছে- নীলফামারি জেলার ডোমার, নওগাঁ জেলার আত্রাই ও রাণীনগর, নাটোর জেলার শিংড়া, সিরাজগঞ্জ জেলার তারাশ, যশোর জেলার শার্শা,মানিকগঞ্জ জেলার সাটুরিয়া, নোয়াখালী সদর উপজেলা এবং কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলায়।

স্প্যানিশ ভাষায় বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনীর মোড়ক উন্মোচন

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্প্যানিশ ভাষায় অনুদিত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অসমাপ্ত আত্মজীবনীর মোড়ক উন্মোচন করেছেন।

প্রধানমন্ত্রী গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে গণভবনে এক অনুষ্ঠানে ঢাকাস্থ স্প্যানিশ দূতাবাস প্রকাশিত এই বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করেন।

তিনি বইটি স্প্যানিশ ভাষায় প্রকাশের জন্য স্প্যানিশ দূতাবাস এবং বইটির সম্পাদনা ও অনুবাদের সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের ধন্যবাদ জানান।

২০১২ সালের ১৮ জুন জাতির পিতার অসমাপ্ত আত্মজীবনী প্রথমবারের মত একইসঙ্গে বাংলা ও ইংরেজী ভাষায় প্রকাশিত হয়।

বইটি এ পর্যন্ত ১০টি ভাষায় অনুদিত হয়েছে। এরমধ্যে রয়েছে- বাংলা, ইংরেজী, হিন্দী, চৈনিক, জাপানি, ফরাসী, উর্দু, আরবি এবং স্প্যানিশ ভাষা। বইটি রাশিয়ান ভাষায় অনুবাদের কাজ চলছে।

বাংলার মানুষের অধিকার আদায়ে বার বার কারা নির্যাতন ভোগকারী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৬৭ সাল থেকে ১৯৬৯ সাল পর্যন্ত কারাগারে থাকার সময় তাঁর আত্মজীবনী লেখেন। এতে তিনি তাঁর বংশবৃত্তান্ত, জন্ম, শৈশব এবং ছাত্রজীবনে সামাজিক এবং রাজনৈতিক সম্পৃক্ততা, সে সময়ে উপমহাদেশের বিভিন্ন সামাজিক ও রাজনৈতিক ঘটনা বিবৃত করেছেন।

ঢাকায় স্পেনের রাষ্ট্রদূত আলভারো ডি সালাস গিমেনেজ ডি অ্যাজকারাটে ও অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন।

সংস্কৃতি মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর, প্রধানমন্ত্রীর আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপদেষ্টা ড.গওহর রিজভী এবং পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। মুখ্য সচিব মো. নজিবুর রহমান অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন।

সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্ট তহবিলে আরো ২০ কোটি টাকা অনুদান

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্ট তহবিলে আরো ২০ কোটি টাকা অনুদান দিয়েছেন। সাংবাদিকদের প্রয়োজনে তাদেরকে আর্থিক সহায়তা প্রদানের জন্য বর্তমান সরকার সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্ট তহবিল গঠন করে।

প্রধানমন্ত্রী গতকাল বৃহস্পতিবার ঢাকায় তাঁর সরকারি বাসভবন গণভবনে এক অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) সভাপতি মোল্লা জালালের হাতে উক্ত টাকার চেক হস্তান্তর করেন।

প্রধানমন্ত্রীর তথ্য উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী, তথ্য প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম, তথ্য সচিব আবদুল মালেক, পিআইবি’র মহাপরিচালক শাহ আলমগীর, বাসস’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান সম্পাদক এবং বিএফইউজে’র সাবেক সভাপতি আবুল কালাম আজাদ, প্রধান তথ্য কর্মকর্তা (পিআইও) কামরুন নাহার, বিএফইউজে’র মহাসচিব শাবান মাহমুদ, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) সভাপতি আবু জাফর সূর্য ও সাধারণ সম্পাদক সোহেল হায়দার চৌধুরী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৫ কোটি টাকা সিডমানি দিয়ে ২০১৪ সালে ট্রাস্ট তহবিল গঠনের উদ্যোগ নেন। পরে বিগত চার বছরে বিভিন্ন বেসরকারি মিডিয়া থেকে দেয়া আরো টাকায় তহবিল ১৫ কোটি টাকায় উন্নীত হয়। গত ১৯ সেপ্টেম্বর এক অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী আরো ২০ কোটি টাকা দেয়ার আশ্বাস দেন।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ