ফিলিপিন্সে কিশোর হত্যায় তিন পুলিশের কারাদণ্ড
২৯ নবেম্বর, বিবিসি : ফিলিপিন্সের একটি আদালত গত বছর মাদকবিরোধী অভিযানে এক কিশোর হত্যার ঘটনায় জড়িত তিন পুলিশ সদস্যের ৪০ বছর করে কারাদণ্ড দিয়েছে। ম্যানিলায় ১৭ বছর বয়সী কিয়ান ডেলোস সান্তোসের ওই মৃত্যুর ঘটনাটি বিশ্বজুড়েই তুমুল আলোড়ন তুলেছিল।
মানবাধিকার সংগঠনগুলো শুরু থেকেই প্রেসিডেন্ট রডরিগো দুতের্তের শুরু করা এ ‘ওয়ার অন ড্রাগসের’ সমালোচনা করে আসছিল। এর মাধ্যমে ফিলিপিন্সে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড প্রাতিষ্ঠানিক রূপ পেয়েছে বলেও অভিযোগ তাদের।
দেশটিতে ২০১৬ সালে শুরু হওয়া মাদকবিরোধী যুদ্ধে বৃহস্পতিবারই প্রথম আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কেউ আনুষ্ঠানিকভাবে দোষী সাব্যস্ত হলেন বলে জানিয়েছে বিবিসি।
“প্রথমেই গুলি, তারপর বিবেচনার মনোভাব সভ্য সমাজে সমর্থনযোগ্য হতে পারে না। হত্যা, সন্ত্রাস আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাজ হতে পারে না, মানুষের জীবনের বিনিময়ে কখনোই শান্তি নিশ্চিত করা সম্ভব হয় না,” রায় দিয়ে বলেন বিচারক রলডোলফো আজুচেনা। ফিলিপিন্স সরকারের দুই বছরের এ মাদকবিরোধী যুদ্ধে দালাল ও মাদকসেবীসহ প্রায় পাঁচ হাজার মানুষ নিহত হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
গত বছর পুলিশের মাদকবিরোধী অভিযানের পর সরু এক গলিতে কিয়ান ডেলোসের মৃতদেহ পাওয়া গিয়েছিল। পুলিশ সেসময় ১৭ বছর বয়সী এ কিশোরকে মাদক চোরাচালানি হিসেবে অভিহিত করে আত্মরক্ষার্থে গুলি চালানোর কথা জানিয়েছিল। কিয়ানের পরিবার এ অভিযোগ অস্বীকার করে। পরে সিসিটিভি ফুটেজেও পুলিশের গুলি চালানোর কারণ হিসেবে দেওয়া বক্তব্যের সত্যাতা মেলেনি।
কিয়ানের মৃত্যু ফিলিপিন্সে তুমুল বিক্ষোভের জন্ম দেয়। আন্দোলনের মুখে হত্যাকাণ্ডের দুই মাস পর পুলিশ মাদকবিরোধী অভিযান বন্ধেরও ঘোষণা দেয়। দেশের মাদক পরিস্থিতির ভয়াবহ অবনতি হচ্ছে, প্রেসিডেন্ট দুতের্তে এ মত প্রকাশ করলে গত বছরের ডিসেম্বর থেকে ফের ওই অভিযান শুরু হয়।
আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) দুতের্তের এ মাদকবিরোধী অভিযান ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকা-ের অভিযোগগুলো খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছে। এর প্রতিক্রিয়ায় ম্যানিলা বলেছে, তারাও আইসিসি থেকে সরে আসার প্রক্রিয়া শুরু করেছে।
মানবাধিকার সংগঠনগুলো কিয়ান ডেলোস হত্যায় পুলিশ সদস্যদের কারাদ-ের রায়কে স্বাগত জানিয়েছে। এ রায় পুলিশ সদস্যদের আইনী প্রক্রিয়া ও নাগরিকদের অধিকারের বিষয়েও সচেতন করবে বলেও মত তাদের।
ফিলিপিন্স প্রেসিডেন্ট কার্যালয়ের এক মুখপাত্র্রও বলেছেন, তারা বিচার বিভাগের প্রতি শ্রদ্ধাশীল।
“একটি শক্তিশালী বিচার ব্যবস্থা আছে আমাদের দেশে,” বলেছেন সালভাদর পানেলো।