শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪
Online Edition

বিরোধী দলগুলোর নির্বাচনে অংশ নেয়ার ঘোষণায় আ’লীগ অনিশ্চয়তায় পড়েছে

গতকাল বুধবার পুরানা পল্টনে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের অফিস উদ্বোধন করে বক্তব্য রাখেন ফ্রন্টের আহ্বায়ক ড. কামাল হোসেন -সংগ্রাম

স্টাফ রিপোর্টার : বিরোধী দলগুলোর নির্বাচনে অংশ নেয়ার ঘোষণায় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ অনিশ্চয়তায় পড়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের আহ্বায়ক ড. কামাল হোসেন। গতকাল বুধবার বিকেলে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের অস্থায়ী অফিসে সাংবাদিকদের কাছে তিনি এই মন্তব্য করেন। ড. কামাল বলেন, আমরা এটা অনুভব করছি সরকার অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়ে গেছে। তাদের প্রথম তো ধারণা ছিলো যে, ২০১৪ সালের মতো যেনোতেনোভাবে একটা নির্বাচন করে কাটিয়ে দেয়া। এবারও আমরা অপ্রস্তত, আমরা কেউ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবো না, তারা আরো পাঁচ বছর এভাবে পার পেয়ে যাবে। যখনই আমরা সিদ্ধান্ত নিলাম, না আমরা নির্বাচনে সবাই মিলে আসছি। তখন থেকে দেখছি যে, তাদের মধ্যে একটা অনিশ্চিয়তা সৃষ্টি হয়েছে।
গণমাধ্যমের সর্বাত্মক সহযোগিতা চেয়ে ফ্রন্টের এই শীর্ষ নেতা বলেন, আপনারা জনগণের যে ভোটাধিকার রয়েছে, সেই ভোটাধিকার পাহারা দেবেন। স্বাধীন নিরপেক্ষ নির্বাচন হোক এটা আপনারা পাহারা দিলে আমরা আশা করি সরকারের যত রকমের অপচেষ্টা হয়, সেটাকে মোকাবিলা করে মানুষের যেটা প্রাপ্য অবাধ নিরপেক্ষ নির্বাচন সেটা আদায় করা যাবে। সেটা ঐতিহাসিক ঘটনা ঘটবে যে দেশের মানুষ আবার তার অধিকার ও ক্ষমতা ফিরে পেয়েছে। এই কারণে আমি আপনাদের কাছে এই আবেদনটা রাখছি।
নির্বাচনের বিষয়ে গণমাধম্যের ভূমিকার প্রশংসাও করেন ড. কামাল। তিনি বলেন, নির্বাচনের ব্যাপারটা পুরোপুরি আপনারা উপলব্ধি করছেন। এই প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে জনগণের মালিকানা ফিরে আসবে, ফিরে আসা দরকার। আসলে মালিকের নিয়ন্ত্রণে দেশ নাই, জনগণের নিয়ন্ত্রণে দেশ নাই। নাগরিকরা যেভাবে তাদেরকে সরিয়ে রাখা হয়েছে, এই যে সংসদ বলা হয় এটা কোনোভাবে সংসদ নয়। এটা অনির্বাচিত ঘোষিত সংসদ। দেশের এ সংবিধান প্রণেতা বলেন, এখন এসব থেকে মুক্ত হওয়ার জন্য অনেক দিন ধরে আমরা এটার অপেক্ষায় আছি। এবার সুযোগ এসেছে এটা থেকে মুক্ত হতে পারবো। সারাদেশের মানুষ জাগ্রত। জাগ্রত জনতা দাঁড়িয়ে নিজের ভোটাধিকারের মধ্য দিয়ে মালিকানা আবার পুনরুদ্ধার করবে- এটা আমরা বিশ্বাস করি।
গণমাধ্যমের প্রতি আহ্বান রেখে ড. কামাল বলেন, নির্বাচনের পক্ষে একটা জনমত সৃষ্টি হয়েছে। ভোট দেবার জন্য এখন আগ্রহী। সেই ভোটটা যেন দিতে পারে, স্বাধীনভাবে দিতে পারে- এটা সকলের আকাক্সক্ষা। যেখানে দেখবেন যে, সরকারের লোকজন আইন লঙ্ঘন করছে, পক্ষপাতিত্ব করছে- এটা সঙ্গে সঙ্গে জনগণের সামনে তুলে ধরা। স্বাধীন নিরপেক্ষ নির্বাচনকে হস্তক্ষেপের অপচেষ্টা চলছে। আমরা যদি সতর্ক থাকি, আপনারা যদি সক্রিয়ভাবে ভূমিকা পালন করেন অনেকাংশে এসব চেষ্টা ঠেকানো যাবে। দেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী , সরকার ও সরকারি দলের কার্যক্রমের ওপর নজর রাখার জন্যও গণমাধ্যমের প্রতি অনুরোধ রাখেন তিনি।
ভোট কেন্দ্র পাহারা দেয়ার জন্য দেশবাশীর প্রতি আহ্বান জানিয়ে ড. কামাল হোসেন বলেন, আমরা দীর্ঘদিন ধরে গণতন্ত্রহীন অবস্থায় আছি। এই ঘাটতি পূরনের জন্য আমরা এবার শত প্রতিকূলতার মধ্যেও নির্বাচনে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। ১০ বছর পর একটি গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচন হতে যাচ্ছে। এই জন্য নির্বাচনের দিন দেশবাশীকে একটা দিন ভোট কেন্দ্র পাহারা দিতে হবে। ভোটের দিন সকাল সকাল কেন্দ্রে গিয়ে লাইনে দাঁড়াতে হবে। আশপাশের সবাইকে নিয়ে ভোট দিতে যেতে হবে। এই নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণ যেন তাদের মালিকানা ফিরে পায় সেই ব্যবস্থা করতে হবে।
পুরানা পল্টনে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের অস্থায়ী কার্যালয়ে কার্যক্রম শুরুর পর এই প্রথম ড. কামাল হোসেন এখানে আসেন। এ সময়ে জেএসডির আসম আবদুর রব, গণফোরামের সুব্রত চৌধুরী, মোস্তফা মহসিন মন্টু, রেজা কিবরিয়া, জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার সুলতান মো. মনসুর আহমেদ, বিএনপির বরকত উল্লাহ বুলু, আবদুস সালামসহ নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ