শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪
Online Edition

যুক্তরাষ্ট্রকে বিনিয়োগ বাড়ানোর আহ্বান বাণিজ্যমন্ত্রীর

স্টাফ রিপোর্টার: বাংলাদেশ ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে হওয়া বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সহযোগিতা কাঠামো (টিকফা) চুক্তি অর্থবহ করতে বাংলাদেশে মার্কিন বিনিয়োগ বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। তিনি বলেছেন, বাংলাদেশ সবক্ষেত্রে এগিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের বড় বাজার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। গত ২০১৭-২০১৮ অর্থবছরে বাংলাদেশ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় ৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের পণ্য রফতানি করেছে। একই সময়ে বাংলাদেশ আমদানি করেছে প্রায় ১ দশমিক ৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের পণ্য।
গতকাল মঙ্গলবার বাংলাদেশ সচিবালয়ে নিজ কার্যালয়ে ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত আর মিলারের সঙ্গে মতবিনিময়  শেষে সাংবাদিকদের কাছে বাণিজ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন। এসময় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিবের দায়িত্বে অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন) এস এম রেদওয়ান হোসেন, ডব্লিউটিও সেলের মহাপরিচালক মুনীর চৌধুরী এবং রফতানি শাখার অতিরিক্ত সচিব শরিফা খান উপস্থিত ছিলেন।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ২০২১ সালের মধ্যে ৬০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার রফতানির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে বাংলাদেশ। এর মধ্যে ৫০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ধরা হয়েছে তৈরি পোশাক রফতানি থেকে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে তৈরি পোশাক রফতানি বৃদ্ধির সুযোগ রয়েছে। যেকোনও পরিমাণ তৈরি পোশাক রফতানির সামর্থ্য অর্জন করেছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতা চায় অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক ক্ষেত্রে আরও ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করতে চায়।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশে বিনিয়োগের পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্যোগে দেশের বিভিন্ন স্থানে ১০০টি স্পেশাল ইকোনমিক জোন গড়ে তোলা হচ্ছে, এগুলোর কাজ দ্রুত এগিয়ে চলছে। এগুলোতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বিনিয়োগ করলে লাভবান হবে। বিনিয়োগের সব সুবিধা নিশ্চিত করা হয়েছে। বিদ্যুৎ উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে। বিনিয়োগকারীদের বিশেষ সুবিধা দিয়েছে সরকার। বাংলাদেশে এনার্জি, পাওয়ার, শিপিং, এলএনজি এবং এয়ারলাইন্স সেক্টরে প্রায় ২ বিলিয়নের বেশি মার্কিন বিনিয়োগ রয়েছে। এ বিনিয়োগের পরিমাণ বাড়ানোর সুযোগ এসেছে। এতে উভয় দেশ লাভবান হবে।
টিপু মুনশি বলেন, বাংলাদেশে শ্রমিকদের কাজের পরিবেশ ও নিরাপত্তায় সুনির্দিষ্ট পরিবর্তন এসেছে। অ্যাকর্ড, অ্যালায়েন্স ও ন্যাশনাল ইনেশিয়েটিভ কারখানাগুলো পরিদর্শন করেছে। এখন পর্যন্ত ৯০ ভাগের বেশি কারাখানা পরিদর্শন সম্পন্ন হয়েছে। তৈরি পোশাক কারখানাগুলো সংস্কার করা হয়েছে। বাংলাদেশে নতুন নতুন গ্রিন ফ্যাক্টরি গড়ে উঠেছে। শ্রমিকদের মজুরি সময়োপযোগী করা হয়েছে। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণের জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নব-নিযুক্ত রাষ্ট্রদূতের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশে বিনিয়োগ বাড়ালে বাংলাদেশ থেকে পণ্য রফতানির সুযোগ তৈরি হবে। স্বাভাবিক নিয়মে উভয় দেশের মধ্যে বাণিজ্য ব্যবধান কমে আসবে। তৈরি পোশাক ছাড়াও বাংলাদেশে অনেক রফতানি পণ্য রয়েছে।
ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত বলেন, বাংলাদেশের পক্ষে আমি একজন ভালো সেলসম্যান হতে চাই। বাংলাদেশের সঙ্গে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক বেশ ভালো। বাংলাদেশে তৈরি পোশাক কারখানাগুলোতে কাজের পরিবেশের সুনির্দিষ্ট উন্নতি হয়েছে। তৈরি পোশাক কারখানাগুলোর শ্রমিকদের নিরাপদ কাজের পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে, ইলেক্ট্রনিক সিকিউরিটি নিশ্চিত হয়েছে। শ্রমিকদের অধিকার নিশ্চিত করতে গুরুত্বের সঙ্গে কাজ করছে বাংলাদেশ। বাণিজ্য বাড়ালে উভয় দেশ উপকৃত হবে। সিঙ্গেল কান্ট্রি হিসেবে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় তৈরি পোশাকের বাজার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য ব্যবধান অনেক। বাংলাদেশে মার্কিন বাণিজ্য বৃদ্ধি করতে কমার্শিয়াল কাউন্সিলর নিয়োগের প্রক্রিয়া চলছে।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ