৯০ বছর বয়সেও বয়স্ক ভাতার কার্ড জোটেনি হতদরিদ্র রতনের কপালে
নিছার উদ্দীন খান আযম, মণিরামপুর (যশোর) সংবাদদাতা : প্রায় ৯০ বছর বয়স হলেও হতদরিদ্র রতন কুমার দাসের কপালে জোটেনি বয়স্ক ভাতার কার্ড। তিনি বয়সের ভারে নুইয়ে পড়ে লাঠি ভর দিয়ে বেঁচে থাকার সংগ্রামে ছুটে চলেছেন ভিক্ষার আকুতি নিয়ে অন্যের দুয়ারে। রতন দাসকে দেখে সাধারণ মানুষের দয়া হলেও দয়া হয়নি স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের। রতন দাসের অভিযোগ স্থানীয় ইউপি সদস্যের চাহিদা দুই হাজার টাকা দিতে না পারায় জীবনের শেষ প্রান্তে এসেও তিনি পাননি বয়স্কভাতার কার্ড। রতন দাস যশোরের মণিরামপুর উপজেলার রোহিতা ইউনিয়নের জলকর রোহিতা গ্রামের বাসিন্দা।
রতন দাসের তিন ছেলে। সবাই দিনমজুর। দুই ছেলে বাড়িতে থাকলেও মেঝ ছেলে প্রশান্ত দাস বসবাস করেন পাশর্^বর্তী কেশবপুর উপজেলায় তার শ^শুরবাড়ি এলাকায়। সংসারে অভাব থাকায় বেশ আগেই স্বামী ও ভিটেমাটি ছেড়ে মেঝ ছেলের সাথে পাড়ি জমান রতন দাসের স্ত্রী গীতা রানী দাস। জলকর রোহিতার ভিটেতে ছোট ছেলে দিনমজুর প্রদীপ দাসের সংসারে থাকেন রতন দাস। নিজেদের সাথে বৃদ্ধ অসুস্থ বাবার দুইবেলা খাবার যোগাতে পারলেও চিকিৎসার ভার বইতে পারছেন না ছোট ছেলে। রতন দাস এখন বয়সের ভারে বেশ অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তাই ওষুধ কেনার জন্য একজন চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র (প্রেসক্রিপশন) হাতে নিয়ে লাঠিভর দিয়ে ছুটে চলেছেন মানুষের দ্বারে দ্বারে। সারাদিন ঘুরে বেড়িয়ে সন্ধ্যায় বাড়ি ফেরেন প্রায় খালি হাতে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে মণিরামপুর উপজেলা পরিষদের সামনে লাঠিভর দিয়ে হাতে প্রেসক্রিপশন নিয়ে রতন দাসকে দেখা যায় ভিক্ষে করতে। এ সময় কথা হয় তার সাথে। বয়ষ্কভাতার কার্ড পেয়েছেন কিনা জানতে চাইলে রতন দাস উল্টো প্রশ্ন করে বলেন, কবে পাব বয়স্ক ভাতার কার্ড? তার অভিযোগ স্থানীয় ইউপি সদস্য মহিতুল ইসলাম বয়স্কভাতার কার্ডের জন্য দুই হাজার টাকা দাবি করেছিল। কিন্তু দিতে না পারায় কার্ড হয়নি। তবে টাকা দাবি করার অভিযোগ অস্বীকার করে ইউপি সদস্য মহিতুল ইসলাম জানান, তিনি খুব শিঘ্রই রতন দাসকে বয়স্কভাতার কার্ড করে দিবেন। উপজেলা নির্বাহী অফিসার আহসান উল্লাহ শরিফী জানান, বিষয়টি তার জানা ছিলনা, তবে আগামী সভায় রতন দাসের বয়স্কভাতার কার্ডের ব্যবস্থা করা যেতে পারে।