বিশ্বকাপ ক্রিকেট ও পরিকল্পনা
মোহাম্মদ সুমন বাকী : মে, জুন, জুলাই মাস। গরম, বৃষ্টির সংমিশ্রনে গ্রীষ্ম, বর্ষাকালের আমেজ দেখা যায় সাউথ এশিয়া অঞ্চলে। যা কি নতুন করে বলার অপেক্ষা রাখে? এই সময় শীতকালের বিন্দু পরিমাণ ছায়া নেই এখানে। সেটা ঋতুর ধারাবাহিক পরিবর্তনে বার বার দেখা যাচ্ছে। অবশ্যই তা শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে। যা ঘুরে ফিরে আসে। সেটা স্বাভাবিক ধারাতে। দক্ষিণ এশিয়ার এমন চিত্রে অন্য মহাদেশের অবস্থানটা বিপরীত। যা পৃথিবীর সৃষ্টিকর্তা খোদার ইশারাতে। এমন ধারায় শীত মৌসুম বজায় থাকে সেখানে। ২০১৯ ওয়ানডে বিশ্বকাপ ক্রিকেট। সেটা অনুষ্ঠিত হবে যেখানে। তা সবার বোধগম্য। ইংলিশ কন্ডিশন খুবই কঠিন। বিশেষ করে ক্রিকেটকে আকড়ে ধরে। নতুন বল। ফাস্ট বোলার আক্রমণ। তবে বাউন্স সামান্য কম। যা বার বার দেখা গেছে বিভিন্ন সিরিজ টুর্নামেন্টে। সেটা অস্ট্রেলিয়া, সাউথ আফ্রিকার তুলনায়। ইংল্যান্ডের উইকেট বাউন্স একটু কম। তাতে কি? কিন্তু আসল অস্ত্র ঠিকই প্রয়োগ হয়। তা সুইং। উইকেটের (পিচ) যে কোন স্থান থেকে যা করে থাকেন একজন ফাস্ট বোলার। সেটা স্বাভাবিক ধারাতে। এমন অবস্থায় টার্নও মন্দ নয় সেখানে। তা অনায়াসে পেয়ে থাকেন স্পিনারদের পাশাপাশি স্লো বোলাররা। সে জন্য কিছু সময়ের অপেক্ষা করতে হয়। বল পুরান হবার আশায়। খেলাটির কৌশল হিসেবে যা উল্লেখ করা প্রয়োজন। এই ধারায় একটি বিষয়ে সকল প্লেয়ার সমান সুবিধা পান। সেটা আউট ফিল্ড ফাস্ট করার মাধ্যমে। ক্রিকেট (গাংগুটি) পন্ডিতদের অভিমত কি এ ব্যাপারে? এমন পরিস্থিতিতে ইংলিশ কন্ডিশন খুব কঠিন সব মিলিয়ে। গত ১৯৯৯ বিশ্বকাপে এই ফর্মূলার দৃশ্য ফুটে উঠেছে। তা বার বার। গিলেস্পি, ম্যাক গ্র্যা, ব্রেটলি, শেন ওয়ার্ন, ওয়াসিম, আকরাম, শোয়েব আকতার, গফ, সাকলাইন, শ্রীনাথ, কুম্বলে, ডোনাল্ড, পোলক, ক্লুজনার, হ্যানসি ক্রনিয়ে, ক্রিস কেয়ার্নস, আনিস, সুজন, ওলঙ্গাঁ, গ্র্যান্ট ফ্লাওয়ার বোলিং বিভাগে ছিলেন এক কথায় নাইস পারফর্মার। সাফল্য পাবার বিশ্লেষনে যা খুবই চমৎকার। ফেব্রুয়ারি মাস চলেছে। মার্চ, এপ্রিল মাঝখানে।
এরপর মে মাসে ২০১৯ বিশ্বকাপ ক্রিকেট প্রতিযোগিতা সবুজ ঘাসের ময়দানের উত্তেজনাকর স্পর্শ পাবে সেই ইংল্যান্ডে। এখন থেকে সেটা নিয়ে প্রচার মাধ্যম গরম হয়ে উঠেছে। এবারের ওয়ার্ল্ড কাপ শিরোপা কে জিতবে? আপাতত ক্রিকেট বিশেষজ্ঞরা ভারতকে এগিয়ে রেখেছে। তা পারফরম্যান্সের বিচারে। যা নতুন করে বলার অপেক্ষা রাখে না। সেটা সিরিজের পর সিরিজ নৈপূণ্য তুলে ধরে। এমন রেজাল্ট আলোকিত হয়ে রয়েছে। সবুজ ঘাসের মাঠে আকর্ষণীয় প্রতিদ্বন্দ্বিতাকে ঘিরে রেখে। এর উপর ভর করে তাদের এই মতবাদ ব্যক্ত হয়েছে। এবার বিশ্বকাপ শিরোপা জয় করার তালিকায় স্বাগতিক ইংল্যান্ড, আফ্রিকা, অস্ট্রেলিয়া এবং পাকিস্তানের নাম আছে। যারা খুবই শক্তিশালী টিম। যাদের পারফরম্যান্স ঈর্ষণীয় সাফল্যের আলোতে যার যার দেশের পতাকা উড়িয়েছে। এমন ধারায় বড় টুর্নামেন্টে তাদের দাপট অহরহ দেখা গেছে। সেটা সকলের বোধগম্য। তা বলা বাহুল্য। এবার আসা যাক মূল প্রসঙ্গে। বিষয়টি হলো বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলকে নিয়ে। যারা অন্যতম প্রতিদ্বন্দ্বী ইংল্যান্ড বিশ্বকাপের সেক্সি উত্তেজনার আকর্ষণীয় লড়াইয়ে। ইংলিশ কন্ডিশন খুব কঠিন। যা উল্লেখ করা দরকার। সেটাও ঘুরে ফিরে বার বার। মে, জুন, জুলাই মাস লাল-সবুজ পতাকা দেশকে ছোঁয়া দেয় গ্রীষ্ম-বর্ষা ঋতু। একই সময়ে বিপরীত চিত্র ইংল্যান্ডে ফুটে উঠে। অর্থাৎ শুষ্ক মৌসুম বজায় থাকে সেখানে। গরম বৃষ্টির সংমিশ্রনে গ্রীষ্ম-বর্ষার প্রভাব পড়ে না তখন। আবহাওয়াটা একেবারেই বিপরীত। ঠান্ডা পরিবেশের আমেজ। এরপরও বাংলাদেশ চমক লাগানো সাফল্য কুড়াবে।
এমন প্রত্যাশা আইইউভি শিক্ষিকা শাকিরা ইসলাম শাওন, ছাত্রী তোরসা মুক্তার, সংগীত শিল্পী, পৌষী, ল’স্টুডেন্ট নিশান, ফটো সাংবাদিক ইমন বড়ুয়া, কারুকার্য শিল্পী তন্নি, তোহা ও জারমিন হোসেনদের। এটা স্ব-দেশের দর্শকের মনের চাওয়া। তা কি পূরণ হবে? মনের মাঝে প্রশ্ন জাগে! অবশ্য এর উত্তর সময়ই বলে দিবে। তবে বাস্তবতা কঠিন। যা কোটি কোটি ক্রীড়া প্রেমীর জানা রয়েছে। সেটা ইংলিশ কন্ডিশন বলে।
তাই এখন থেকে ম্যাচের পর ম্যাচ জয় পাবার বিষয়ে পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে। দল বাংলাদেশের ম্যাচ উইনার কারা? যাদের ওপর ভর করে জয় পাবার প্রত্যাশা রাখে। কারণ তারা দুবার পারফর্ম সো করার ক্ষেত্রে এক কথায় চমৎকার। ইংল্যান্ডের সিম কন্ডিশন পিচে সমস্যা নেই। কারণ দল নায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা, মুস্তাফিজ, রুবেল, তাসকিন ফাইটার বোলার। মাহমুদ উল্লাহ রিয়াদ সফলভাবে পরীক্ষিত সেই তালিকায়। এমন ধারায় স্পিন বিভাগে বিশ্ব সেরা অল রাউন্ডার সাকিব আল হাসান আতংকিত নাম। তা বর্তমান বিশ্ব ক্রিকেটে নতুন কিছু নয়। বাংলাদেশ দল সম্পর্কে এমন তথ্য সকলের জানা আছে। তামিম ইকবাল, সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহিম, সৌম্য সরকার, রিয়াদ, নাসির, লিটন দাস, মাশরাফিরা ব্যাট হাতে অসাধারন পারফর্মার। এক্ষেত্রে হঠাৎ হঠাৎ কঠিন ম্যাচ জয় প্রমাণ হয়ে ইতিহাসের পাতায় নাম লিখিয়েছে। এর ফলে দুনিয়ার ক্রিকেট (গাংগুটি) শক্তিশালী টিম বাংলাদেশকে নতুন করে চিনেছে।
এমন পরিস্থিতি সবকিছু ঠিক আছে। কিন্তু সমস্যা অন্যখানে। যা নিয়ে লিখতে হয়। সেটা বাংলাদেশ দলের খেলোয়াড়দের ইনজুরি। তা বর্তমান সময়ে সাকিব আল হাসানকে অনিচ্ছাকৃত ভাবে বিশ্রামে পাঠিয়েছে। সে কারণে নিউজিল্যান্ড সফরে ওয়ানডে সিরিজ খেলতে পারেননি তিনি।
অর্থ্যাৎ টিমের বাইরে অবস্থান নিয়েছেন। সুতরাং বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড সাবধান! ইংলিশ কন্ডিশন কাজে লাগিয়ে ফাইট করার ক্ষমতা আছে পুরো দলের। কিন্তু ইনজুরি বড় সমস্যা। তা সবার জন্য। এ অবস্থায় প্লেয়াররা কতটুকু ফিট? যা আলোচনা করে জানতে হবে বিসিবিকে। এরপর পরিকল্পনা গ্রহণ। সেটাই আসল স্তম্ভ। একের পর এক ছক তৈরী করে তা নিয়ে দল গোছাতে হবে। যা সাফল্য পাবার ক্ষেত্রে ২০১৯ বিশ্বকাপ ক্রিকেট মিশনকে স্বাগত জানাবে। এমন অভিমত ক্রীড়া বিশেষজ্ঞদের।