শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪
Online Edition

১৪ কিলোমিটার এখন মরণ ফাঁদ ॥ প্রতিদিন ঘটছে দুর্ঘটনা

মাদারীপুর সংবাদদাতা : মাদারীপুরের ইটেরপুল-ঘোষেরহাট সড়কের ১৪ কিলোমিটার সড়ক যানবাহন চলাচলে মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। প্রতিদিনই ঘটছে অসংখ্য দুর্ঘটনা। দ্রুত সড়কটি সংস্কার করা না হলে সামনের বর্ষা মৌসুম ও ঈদে চরম দুর্ভোগে পড়বে সাধারণ মানুষ।
জানা গেছে, ইটেরপুল-ঘোষেরহাট সড়ক দিয়ে প্রতিদিন সদর ও কালকিনি উপজেলার ১৪টি ইউনিয়নের প্রায় ১০ হাজার মানুষ যাতায়াত করেন। এই সড়ক দিয়ে শহর থেকে ঘোষেরহাট যেতে সময় লাগার কথা ৩০ মিনিট। কিন্তু ১৪ কিলোমিটার পথ যেতে এখন সময় লাগছে দেড়/দুই  ঘন্টা। গত দু‘বছরে সড়কটি অস্থায়ীভাবে সংস্কারের নামে ব্যয় করা হয়েছে এক কোটি টাকা। অথচ, সড়কটির অধিকাংশ স্থানে পিচ উঠে সৃষ্টি হয়েছে খানাখন্দ। সড়কে বড় বড় গর্ত সৃষ্টি হওয়ায় প্রায়ই যানবাহন বিকল হয়ে যাবার পাশাপাশি প্রতিদিন ঘটছে দুর্ঘটনা। এলাকাবাসী ও স্থানীয়রা সড়ক সংস্কারের সময় নিন্মমানের কাজের অভিযোগ তুললেও বিষয়টি আমলে নেয়নি কর্তৃপক্ষ। এতে ক্ষুব্ধ যাত্রী, চালক ও পথচারীরা।
এই সড়ক দিয়ে প্রতিদিন যাতায়াতকারী আবু আলম মুন্সি বলেন, ‘প্রায়ই দেখি সড়ক মেরামত করে। কাজ ঠিক মতো না হওয়ায় সড়কে আবারও একই চিত্র দেখা যায়। যার ফলে ভোগান্তি পোহাতে হয় আমাদের। এর প্রতিকার হওয়া দরকার।’
এলাকাবাসী আল-আমিন বেপারী বলেন, ‘এই সড়ক দিয়ে অসুস্থ রোগী নিয়ে যেতে হলে ভয়াবহ বিপদের সম্মুখিন হতে হয়। জরুরী ভিত্তিতে সড়কটি টেকসইভাবে মেরামত করা দরকার।’
ইজিবাইক চালক নুর আলম বলেন, ‘সড়কে যাত্রী নিয়ে চলাচলে খুব সমস্যা হয়। এই সড়কটি এখন মৃত্যুর ফাঁদে পরিণত হয়েছে। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান সঠিকভাবে কাজ না করায় সড়কটিতে খানাখন্দ লেগেই থাকে। দেখা যায় সড়ক মেরামত করছে, আবার সেই সড়কে একবার বৃষ্টির ছোঁয়া লাগলেই খানাখন্দ। এর দায়ভার কাদের?’
স্থানীয় এক সাংবাদিক বলেন, ‘দেশের প্রতি দায়বদ্ধতা থাকলে কোনে ঠিকাদার নিম্নমানের কাজ করতে পারে না। দেশপ্রেম ও দায়বদ্ধ নেই বলেই আজ আমাদের এই দুর্দশা। প্রতিটি প্রকল্পের জন্য চাহিদা অনুযায়ী সরকার অর্থ বরাদ্দ দিচ্ছে। দুর্নীতির কারণে প্রকল্পগুলো মুখ থুবড়ে পড়ছে। যারা দেখভাল করবে তাদেরও রয়েছে স্বচ্ছতার অভাব। ফলে জনগণের দুর্ভোগ বেড়েই যাচ্ছে।’
সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম জানালেন, পুরো সড়কটি মেরামতের কাজ শিগগিরই শুরু হবে। এতে কমবে যাত্রী ও চালকদের ভোগান্তি। নতুন করে সড়কটি সংস্কারের জন্য ব্যয় ধরা হয়েছে ৪৪ কোটি টাকা। দরপত্র আহবান করা হয়েছে, গুণগত মান ঠিক করে সড়ক সংস্কার করা হবে। এ ব্যাপারে কর্তৃপক্ষ সজাগ রয়েছে।
মাদারীপুরের জেলা প্রশাসক মো. ওয়াহিদুল ইসলাম জানান, নিন্মমানের সামগ্রী দিয়ে কাজ করা হয় এমন অভিযোগ আমাদের কাছে এসেছে। বিষয়টি আমরা কঠোরভাবে দেখবো, পরবর্তীতে কেউ যাতে কাজে ফাঁকি দিতে না পারে, সেই ব্যাপারে সড়ক বিভাগকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।’

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ