বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪
Online Edition

রাজধানীর গুলিস্তানে হকারদের অবরোধ দুর্ভোগে ঘরমুখো মানুষ

স্টাফ রিপোর্টার : ফুটপাতে ব্যবসা করতে দেয়ার দাবিতে রাজধানীর অন্যতম ব্যস্ত এলাকা গুলিস্তানে প্রায় ছয় ঘণ্টা সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখিয়েছে ভাসমান হকাররা। তাদের এই বিক্ষোভের ফলে গতকাল মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টা থেকে বিকাল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত গুলিস্তান ও আশপাশের এলাকায় যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকে। রোজার প্রথম দিনই অফিস শেষে করে বাড়ি ফেরার পথে ভোগান্তির শিকার হয় সাধারণ মানুষ।
শাহবাগ থানার পরিদর্শক (পেট্রোল) আবুল বাশার বলেন, বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে হকাররা সড়ক থেকে উঠে গেলে যানবাহন চলাচল শুরু হয়।
দুপুরের আগে আগে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের নগর ভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন হকাররা। পরে তারা গোলাপ শাহ মাজারের সামনে নর্থ সাউথ রোড বন্ধ করে দেন। একই সময় জিরো পয়েন্ট থেকে বায়তুল মোকাররম মার্কেটের দক্ষিণ গেট পর্যন্ত সড়ক অবরোধ করে হকারদের একটি অংশ। পরে বেলা ১টার দিকে গুলিস্তানের বঙ্গবন্ধু স্কয়ারের সামনের সড়কও তারা অবরোধ করে। ফলে পল্টন থেকে ফুলবাড়িয়া হয়ে সদরঘাট, গুলিস্তান থেকে মতিঝিল পর্যন্ত যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
জিরো পয়েন্ট থেকে সচিবালয়মুখী আব্দুল গণি রোডের মুখে ওয়াসার পয়নিষ্কাশনের বড় বড় পাইপ ফেলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করতে দেখা যায়। গোলাপ শাহ মাজারের কোনো পাশ দিয়েই কোনো যানবাহন চলাচল করতে পারছিল না।
মো. রুবেল নামের একজন হকার বলেন, “গত চাইর মাস ধরে আমরা বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ের ফুটপাতে ব্যবসা করতে পারতাসি না। আমরা বেকার হইয়া গেছি। মেয়র বলেছিল বসতে দিব কি না সেই ডিসিশন আজকে দিব। কিন্তু মেয়রের (সাঈদ খোকন) অফিসে গিয়া আমরা তারে পাই না। পরে আমরা রাস্তায় নামছি।”
মনির শেখ নামে আরেকজন হকার বলেন, “আমরা ফুটপাতে বসতে চাই, এখানেই ব্যবসা করতে চাই। ফুটপাত থেকে তারাই মালামাল কেনে যারা ফুটপাত দিয়ে চলাচল করে। যারা বলছে, আমরা ফুটপাতে বসলে চলাচল করা যায় না, তারা মিথ্যা বলে। তারা উঁচু তলার মানুষ। ফুটপাত থেকে আমাদের উঠায়া দিলে তারা গাড়ি রাখতে পারবে।”এই অবস্থার মধ্যে বেলা সাড়ে ৩টায় অফিস ছুটি হলে ঘরমুখো মানুষ পড়ে চরম বিড়ম্বনায়। উপায়ান্তর না দেখে পায়ে হেঁটেই রওনা হতে হয় তাদের।
এদিকে রাজধানীর বিভিন্ন রুটের বাস এই গুলিস্তান হয়ে যায় বলে অবরোধের কারণে বহু যানবাহন গুলিস্তানের আশপাশের সড়কে আটকা পড়ে।
কলাবাগান থেকে ভুলতাগামী মেঘলা পরিবহনের চালক মো. আসলাম বিকাল সাড়ে ৩টায় বলেন, “দুই ঘণ্টা ধইরা বঙ্গভবনের সামনে বইয়া রইছি। গাড়ি এক চুলও লড়ে নাই।”
বাংলাদেশ হকার্স ইউনিয়নের সভাপতি আবদুল হাসিম কবির বলেন, মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকন হকারদের পুনর্বাসনের আশ্বাস দিয়েছিলেন। কিন্তু মেয়রের কার্যালয়ে গিয়ে তার দেখা মেলেনি। "গত ৫ মে আমরা মেয়র মহোদয়ের সঙ্গে দেখা করে বলেছিলাম, পুনর্বাসনের আগ পর্যন্ত আমাদের ফুটপাতে বসার ব্যবস্থা করে দেন। তিনি আজকে আমাদের তার অফিসে যেতে বলছিলেন। এগারোটায় সময় দিয়েছিলেন, এখন ৪টা বাজে। তার দেখা পাইনি। এজন্য হকারেরা রাস্তায় নেমে গেছে।"
বিকালে হকাররা অবরোধ তুলে সরে যায় জানিয়ে পরিদর্শক আবুল বাশার বলেন, “তারা আজকের মত কর্মসূচি স্থগিত করে সড়ক থেকে উঠে গেছে। পরবর্তী কর্মসূচি তারা নাকি পরে জানাবে।”

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ